ব্রাজিলকে হারিয়ে শেষ চারে বেলজিয়াম
৬ জুলাই ২০১৮ ২৩:৪০ | আপডেট: ৭ জুলাই ২০১৮ ১১:১৬
সারাবাংলা ডেস্ক।।
একের পর এক আক্রমণ, একের পর এক সুযোগ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা কাজে লাগাতে পারল না ব্রাজিল। শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলে সেলেসাওদের হারিয়ে বেলজিয়াম উঠে গেল শেষ চারে। পঞ্চম শিরোপার অপেক্ষাটা আরেকটু বাড়ল ব্রাজিলের, আর ১৯৮৬ সালের পর এই প্রথম সেমিফাইনালে চলে গেল বেলজিয়াম। সেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ফ্রান্স।
এমন একটা ম্যাচের পর গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়াকে আলাদা করে ধন্যবাদ দিতে পারেন কোচ রবার্তো মার্তিনেজ। অতিমানব হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন বেলজিয়ান গোলরক্ষক। শেষের দিকে নেইমারের শটটা ঠেকিয়ে দিয়েছেন অবিশ্বাস্য ভাবে। গোল করার অনেক সুযোগ পেয়েছিল ব্রাজিল, কিন্তু তা আর কাজে লাগাতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত তাতেই আর সমতা ফেরানো হলো না ব্রাজিলের, লাতিন আমেরিকার সবকটি দলই বিদায় নিল কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে।
ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই একটা সুযোগ পেয়ে গিয়েছিল বেলজিয়াম। কেভিন ডি ব্রুইনের দূর থেকে নেওয়া শট চলে যায় পোস্টের বাইরে দিয়ে।
৭ মিনিটে প্রথম সুযোগটা পেয়েই গিয়েছিল ব্রাজিল। কর্নার থেকে থিয়াগো সিলভা দুই গজ দূর থেকেও পারেননি জালে জড়াতে। বল ফিরে এসেছে বারে লেগে। পরে সেটি ধরে ফেলেছেন বেলজিয়াম গোলরক্ষক কোর্তোয়া। ১০ মিনিটে আবার সুযোগ পাওলিনহোর, এবারও কর্নার থেকে। কিন্তু বলে ঠিকমতো পা লাগাতেই পারেননি।
হলুদ কার্ডের কারণে কাসেমিরো খেলতে পারবেন না , জানা ছিল আগেই। ব্রাজিলের একাদশে একটা পরিবর্তন প্রত্যাশিতই ছিল। সেটিই হয়েছে। কাসেমিরোর জায়গায় এসেছেন ম্যান সিটি মিডফিল্ডার ফার্নান্দিনহো।
১৪ মিনিটে পিছিয়ে পড়ে ব্রাজিল। ফেলাইনির শট মিরান্ডার পায়ে লেগে বাইরে চলে গেলে কর্নার পায় বেলজিয়াম। ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেই জালে ঢুকিয়ে দেন ফার্নান্দিনহো। বিশ্বকাপে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো আত্মঘাতী গোল হজম করে ব্রাজিল। ২০১৪ সালে মার্সেলো করেছিলেন প্রথমটি।
তার পরেই জটলা থেকে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল ব্রাজিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত গোলটা আর আসেনি। ২৫ মিনিটে মার্সেলোর দূর থেকে নেওয়া শট ঠেকিয়ে দিয়েছেন কোর্তোয়া।
২৫ মিনিটে আবারও এগিয়ে যায় বেলজিয়াম। এবার প্রতি আক্রমণ থেকে লুকাকু কয়েকজনকে কাটিয়ে বল দিয়েছিলেন ডি ব্রুইনকে। বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া তার দুর্দান্ত শট ঠেকাতে পারেননি এলিসন। আবারও এগিয়ে যায় বেলজিয়াম।
৩৬ ও ৩৭ মিনিটে পর দুইটি দারুণ সেভ করেছেন কোর্তোয়া। শেষ পর্যন্ত প্রথমার্ধ শেষে ২-০ গোলে পিছিয়েই থাকে ব্রাজিল। বিশ্বকাপে দুই গোল পিছিয়ে থাকার পর ব্রাজিল একবারই জিতেছে, সেই ১৯৩৮ বিশ্বকাপে সুইডেনের বিপক্ষে।
বিরতির পর বেলজিয়ামের একাদশে এসেছে দুইটি পরিবর্তন। আগের ম্যাচে বদলি নেমে গোল করা মারুয়ানে ফেলাইনি ও নাসের শাদলি আসেন দলে। জায়গা হারান ইয়ানিক কারাসকো ও ড্রেস মেরটেনস।
৫১ মিনিটে মার্সেলোর ক্রস থেকে একটুর জন্য বল পায়ে লাগাতে পারেননি বদলি নামা ফিরমিনো।
৫৮ মিনিটে আসে ম্যাচের সবচেয়ে বিতর্কিত মুহূর্ত। বক্সের ভেতর কোম্পানি গ্যাব্রিয়েল হেসুসকে ফাউল করেছেন বলে মনে হলেও পেনাল্টির বাঁশি বাজাননি রেফারি। মিনিটখানেক পর হ্যাজার্ডের শট একটুর জন্য চলে গেছে পোস্ট ঘেঁষে।
৭৬ মিনিটে শেষ পর্যন্ত ব্যবধান কমায় ব্রাজিল। কুতিনিয়োর লব থেকে দারুণ এক দৌড়ের পর হেডে বল জালে জড়িয়ে দেন বদলি রেনাতো আগুস্তো। কয়েক মিনিট পর আবার সুযোগ পেয়েছিলেন আগুস্তো, কিন্তু এবার তাঁর শট একটুর জন্য চলে যায় পোস্টের বাইরে দিয়ে। ৮৪ মিনিটে সুযোগ পেয়েছিলেন কুতিনিয়ো, কিন্তু নেইমারের পাস থেকে শটটা রাখতে পারেননি পোস্টে।
ব্রাজিল একাদশঃ এলিসন, ফাগনার, মার্সেলো, থিয়াগো সিলভা, মিরান্ডা, ফার্নান্দিনহো, পাওলিনহো, কুতিনিয়ো, নেইমার, উইলিয়ান, গ্যাব্রিয়েল হেসুস
বেলজিয়াম একাদশঃ কোর্তোয়া, অলডারউইরেল্ড, কোম্পানি, ভেত্রোনহেন, মিউনিয়ার, শাদলি, ফেলাইনি, উইটজেল, ডি ব্রুইন, লুকাকু, হ্যাজার্ড
সারাবাংলা/ এএম