কেন হেরেছে ব্রাজিল?
৮ জুলাই ২০১৮ ০৫:০৭
।। জাহিদ হাসান এমিলি ।।
এ বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় বাজি যার উপর রেখেছিলাম সেই ব্রাজিল হেক্সা মিশনে ব্যর্থ হয়েছে। এমন একটা দল সেমি ফাইনাল বা ফাইনালে পাবো ভাবতেও অবাক লাগে। কোয়ার্টার ফাইনালের আগে যে দল মাত্র একটি গোল হজম করেছে সেই দলের জালে শেষ আটে ঢুকেছে দুইটি গোল। ব্রাজিলের রক্ষণভাগকে মনে করা হচ্ছিল এ বিশ্বকাপের সবচেয়ে দুর্ভেদ্য রক্ষণভাগ। সেই রক্ষণভাগই ডুবলো। ডুবালো ব্রাজিলকে!
দুর্ভাগ্যবশত ওই ১২ মিনিটে আত্মঘাতী গোলেই বলতে গেলে ব্রাজিলের স্বপ্নটা ঝুলে গিয়েছিলো সুতোয়। এই গোলের পরই ব্রাজিলের পরিকল্পনায় চিড়টা পড়ে মূলত। তারপরেও প্রথম দশ মিনিটে থিয়াগোর বলটা বারে ফিরে না আসলে হয়তো মোমেনটাম অন্যরকম হতে পারতো। ব্রাজিল হয়তো জিতে যাইতো।
এমন পজিশনে আসলে যারা আগে গোল দেয় তাদের জেতার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তারপরেও ব্রাজিল ভালো খেলেছে। বেলজিয়ামের গোলরক্ষক কর্তোয়ার কাছে হয়তো ৭০ শতাংশ হেরে গেছে।
বেলজিয়ামের কোচ মার্টিনেজের একটা ট্রিক কাজে এসেছে দারুণ। সে নম্বর নাইন লুকাকুকে রাইট উইঙ্গে খেলিয়েছে। ফরমেশন পরিবর্তন করেছে যাতে মার্সেলো ওভারল্যাপের সুযোগ কম পায়। সেটা কাজে লেগেছেও। বারবার একই জায়গা থেকে ব্রাজিলের ডি বক্সের ভেতরে ত্রাশ সৃষ্টি করেছে এই ম্যানইউ স্ট্রাইকার। বেলজিয়াম যেভাবে প্লান করেছে সেটাই মাঠে দেখাতে পেরেছে। দ্রুত গোল খেয়ে ব্রাজিল আক্রমনে গিয়ে কাউন্টারে আরেকটি গোল হজম করেছে। যেটা মাইনাস হয়ে গেছে ব্রাজিলের জন্য। দুই গোল খেয়ে ব্যাক করতে পারে নি তারা।
তারপরেও তারা ব্যাক করার চেষ্টা করেছে প্রচুর। তবে, সবচেয়ে শূন্যতা পেয়েছি ক্যাসেমিরো জায়গাটি। রক্ষণের মূল দায়িত্বটা সামাল দেয় সে। তার জায়গাটি ফার্নান্দিনহো ঠিকমতো পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে বলবো।
মূলত তাড়াতাড়ি গোল খাওয়ার কারণে ব্রাজিলের ছন্দপতন হয়েছে। আর ক্যাসেমিরোর জায়গা পূরণ করতে পারে নি ফার্নান্দিনহো। আর কর্তোয়া অসাধারণ গোল কিপিং করেছে। ব্রাজিলের কিছু সুযোগ ব্যর্থ করে দিয়েছে। গোলরক্ষক এমন ক্লিনশিট দিলে যেকোন দলের মনোবল কমে যাবে। নিখুত না হলে গোল করা খুব কঠিন হয়ে পড়ে। এগুলোর একটা যদি গোলে পরিণত হতো তাহলে শেষে ম্যাচের ফলাফল অন্যও হতে পারতো।
নেইমার-কুতিনহো দুর্দান্ত খেলেছে। ভাগ্যটা সহায় হয় নি বলবো। তারপরেও বলতে হবে ফুটবলে ফলাফলই সব। যেটা আদায় করে নিয়েছে বেলজিয়াম। তারাও বেশ কয়েকটি সুযোগ পেয়েছিল ব্যবধান বাড়ানোর। কিন্তু পারে নি। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখেছি।
এইভাবে মূলত লাতিন আমেরিকার সবগুলো দলই বাদ পড়ে গেলো বিশ্বকাপ থেকে। শেষ চার বিশ্বকাপেই লাতিন আমেরিকার দলগুলো বিশ্বকাপ জিততে পারছে না। এবং ইউরোপের দেশগুলো বড় ব্যবধান গড়ে দিচ্ছে। বিশেষ করে তাদের পাওয়ার আর গতির ফুটবলের কাছেই নতি স্বীকার করছে লাতিন আমেরিকার দলগুলোর শৈল্পিকতা।
বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক