বেলজিয়ামকে হারিয়ে ফাইনালে ফ্রান্স
১১ জুলাই ২০১৮ ০১:০৭ | আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৮ ০২:০৭
।। স্পোর্টস ডেস্ক ।।
রাশিয়া বিশ্বকাপের প্রথম সেমি ফাইনালে মাঠে নামে বেলজিয়াম আর ফ্রান্স। সেন্ট পিটার্সবুর্গে ১৯৯৮ সালের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স ১-০ গোলের জয় নিয়ে ফাইনালের টিকিট কাটে। প্রথমার্ধে গোলের দেখা পায়নি কোনো দল। ম্যাচের ৫১ মিনিটের মাথায় বার্সার তারকা ডিফেন্ডার স্যামুয়েল উমতিতির গোলে লিড নেয় ফ্রান্স। তার গোলেই রাশিয়া বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠে ফরাসিরা। অথচ পুরো ম্যাচে ৬০ শতাংশ বল ছিল বেলজিয়ামের দখলে, বাকি ৪০ শতাংশ ছিল ফ্রান্সের দখলে।
মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামের ফাইনালে দ্বিতীয় সেমি ফাইনালের জয়ীদের বিপক্ষে খেলতে হবে ফরাসিদের। দ্বিতীয় সেমিতে খেলবে সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড আর দুর্দান্ত খেলে আসা ক্রোয়েশিয়া।
বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায় শুরু হয় ম্যাচটি। ম্যাচের দশম মিনিটে সুযোগ পেয়েছিল ফ্রান্স, এমবাপে সেই সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন। তার আগে বেলজিয়ামের অধিনায়ক এডেন হ্যাজার্ডের বাঁকানো ক্রসে কেউ পা গলাতে না পারলে হতাশ হতে হয় বেলজিয়ানদের। ১২তম মিনিটে এমবাপে বলের নাগাল না পেলে গোল হয়নি। আর ১৬তম মিনিটে হ্যাজার্ডের জোরালো শট ফরাসি গোলবারের একটু বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যায়। ১৯তম মিনিটের মাথায় মাতুইদির শট সরাসরি জমা পড়ে বেলজিয়াম গোলরক্ষক কোরতোইসের গ্লাভসে। ২০ মিনিটের মাথায় হ্যাজার্ডের জোরালো শট রাফায়েল ভারানে ক্লিয়ার করেন।
২২ মিনিটের মাথায় বেলজিয়ামের কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে জোরালো শট নেন টোবি। প্রস্তুত ছিলেন ফরাসি গোলরক্ষক লোরিস। টটেনহ্যামের সেরা এই গোলরক্ষক ঝাঁপিয়ে পড়ে বল ক্লিয়ার করলে মাথায় হাত দিতে হয় বেলজিয়ান খেলোয়াড়দের। পরের মিনিটে ফরাসি তারকা অলিভার জিরুদের দারুণ একটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। ২৭ মিনিটে হ্যাজার্ডের বাঁকানো শট ফিরিয়ে দেন ফরাসি তারকা স্যামুয়েল উমতিতি।
৩১ মিনিটের মাথায় সেট পিস থেকে উড়ে আসা বলে হেড করেন জিরুদ, বল চলে যায় বেলজিয়ামের গোলবারের বাইরে। পরের মিনিটে বেলজিয়াম ডি-বক্সের বাইরে থেকে অ্যান্তোনিও গ্রিজম্যানের নেওয়া শটও গোলপোস্টের উপর দিয়ে চলে যায়। ৩৪ মিনিটে এমবাপে-জিরুদের দারুণ একটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। ৪০ মিনিটে এমবাপের ক্রস থেকে বল পেয়েও বেলজিয়ামের গোলরক্ষক ফাঁকি দিতে পারেননি ফরাসি তারকা বেঞ্জামিন পাভার্ড। কোরতোইসের পায়ে লেগে বল দিক বদল করে।
৪৪ মিনিটের মাথায় পগবাকে ফেলে দিলে বেলজিয়ামের ডি-বক্সের ঠিক বাইরে ফ্রি-কিক পায় ফ্রান্স। শট নেন গ্রিজম্যান, বল গিয়ে বাধা পায় বেলজিয়ান ডিফেন্সে। প্রথমার্ধের যোগ করা অতিরিক্ত সময়ে দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন বেলজিয়ামের রোমেলু লুকাকু, ডি ব্রুইনের ক্রস থেকে আসা বলে পা লাগাতে পারেননি তিনি। বাকি সময়ে আর কোনো দল গোলের দেখা পায়নি।
বিরতির পর ম্যাচের ৫১ মিনিটের মাথায় এগিয়ে যায় ফ্রান্স। কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে হেড করেন বার্সার তারকা ডিফেন্ডার স্যামুয়েল উমতিতি, বল বেলজিয়ামের জালে জড়ালে ১-০ গোলে এগিয়ে যায় ফরাসিরা। ৬৩ মিনিটে হলুদ কার্ড দেখেন হ্যাজার্ড। ৬৫ মিনিটে সমতায় ফেরার সুযোগ এসেছিল বেলজিয়ামের। ফরাসি ডি-বক্সে দাঁড়িয়ে উড়ে আসা বলে হেড করেন ফেলাইনি, বল ফরাসি গোলবারের গাঁ ঘেঁষে বাইরে চলে যায়। ৭১ মিনিটে হলুদ কার্ড দেখেন বেলজিয়ামের টোবি।
৮০ মিনিটে ফেলাইনির বদলি হিসেবে মাঠে নামেন ক্যারাসকো। ৮২ মিনিটের মাথায় অ্যাক্সেল হুইসেলের জোরালো শট রুখে দেন ফরাসি গোলরক্ষক লোরিস। ৮৫ মিনিটে অলিভার জিরুদকে তুলে নিয়ে ফরাসি কোচ দিদিয়ের দেশম মাঠে পাঠান স্টিভেন এনজোনজিকে। আর মাতুইদির বদলি হিসেবে নামেন তোলিসো। ৮৮ মিনিটে পর পর দুটি সুযোগ নষ্ট করেন লুকাকু। প্রথমবার ডি ব্রুইনের ফ্রি-কিক থেকে বল পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি ফরাসি ডি-বক্সে অপেক্ষায় থাকা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের তারকা, পরের বার মাঝ মাঠ থেকে উড়ে আসা বলেও শট নিতে পারেননি লুকাকু। যোগ করা অতিরিক্ত সময়ে হলুদ কার্ড পান এমবাপে। ৯৬ মিনিটে তোলিসোর শট আটকে দেন চেলসিতে খেলা বেলজিয়ামের গোলরক্ষক কোরতোইস। বাকি সময়ে সমতায় ফিরতে পারেনি বেলজিয়াম। ১-০ গোলের জয় নিয়ে ফাইনালে উঠে ফরাসিরা।
সারাবাংলা/এমআরপি