ব্রাজিল-আর্জেন্টিনারা পিছিয়ে পড়ছে কেন?
১১ জুলাই ২০১৮ ১৩:০২ | আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৮ ১৩:০৪
।। আব্দুল আজীজ, সাবেক ফিফা রেফারী ।।
বেলজিয়ামকে হারিয়ে ফ্রান্স চলে গেল বিশ্বকাপের ফাইনালে। ফ্রান্সের জন্য সবকিছু ১৯৯৮ বিশ্বকাপের মতই হচ্ছে। সেবারও সেমিফাইনালে ডিফেন্ডারের গোলেই ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়েছিল। বেলজিয়াম অবশ্য চেষ্টা কম করে নি, তবে ভাগ্যা কুলায় নি। তাদের গোল্ডেন জেনারেশনের জন্য আপাতত বিশ্বকাপ অধরাই থেকে গেল।
২০০২ সাল পর্যন্ত বিশ্বকাপ জয়ের দৌড়ে লাতিন আমেরিকা এগিয়ে ছিল। এরপর চারটি বিশ্বকাপ লাতিনদের থেকে দূরে সরে গেল। এই ব্যাপারটি হচ্ছে লাতিন প্লেয়াররা ইউরোপে বেশি চলে আসায়। যে যাই বলুক, ইউরোপের ফুটবল নির্দিষ্ট ছকে থাকার ফুটবল। এখানে ট্যাকটিক্সের উপর অনেক জোর দেওয়া হয়। খেলোয়াড়দের নিজেদের মেধার থেকে কোচের ডিরেকশন নিতে জানাটা এখানে বেশি জরুরী। এই জায়গাতেই মার খেয়ে যাচ্ছে লাতিন দলগুলো।
অথচ ১৯৮২ সালের দুর্দান্ত ব্রাজিলের খুব কম খেলোয়াড়ই ছিল যারা ইউরোপে খেলতো। তারা ছিল ব্রাজিলের ফ্লেমিঙ্গো দলের। সেই আমলের আর্জেন্টিনার ছন্দময় ফুটবলের কারণও তাই। হা ম্যারাডোনা ইউরোপে খেলতো, কিন্তু খেলত নিজের মেধা আর ফুটবল প্রজ্ঞা দিয়ে। খুব বেশি ফরমেশন বা ছক নিয়ে মাথা ঘামানো প্লেয়ার সে না। অথচ যে দলে সে খেলে সেই দলের মিডফিল্ড দখল করে নেওয়া ছিল ম্যারাডোনার সহজাত প্রতিভা।
২০০২ বিশ্বকাপে ব্রাজিলের চ্যাম্পিয়ান হওয়ার কারণও লাতিন ছন্দ। তাদের থ্রি-আর কে সম্পূর্ণ উন্মুক্ত করে দিয়েছিল তাদের কোচ। সৃষ্টিশীল ফুটবলের নমুনা সেবার দেখিয়েছিল ব্রাজিল। অথচ এবারের ব্রাজিল ডি-বক্সের বাইরে এসে খেই হারিয়ে ফেলে, বুঝে উঠতে পারে না কি করবে। কারণ ওইযে ইউরোপের ফরমেশন। বল পাসের উপর রাখো। ব্যাকপাস দাও।
আমি এমনও দেখেছি একটি দল আক্রমণে থাকা অবস্থায় বলটি পেচিয়ে ঘুরে ফিরে নিজেদের গোলকিপার পর্যন্ত নিয়ে গেছে। ট্যাকটিক্স বলে বল হারানো যাবে না তাই এই অবস্থা, কিন্তু সেটা কি আর দর্শকদের তৃপ্তি মেটায়?
লাতিনদের নিজেদের ছন্দ ফিরিয়ে আনা খুব জরুরী।
শ্রুতিলিখন: রাসয়াত রহমান জিকো