Sunday 10 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এমবাপে-মেসি-রোনালদোর ‘রাশিয়া সেলিব্রেশন’ রহস্য


১৯ জুলাই ২০১৮ ১৫:২৩

।। মুশফিক পিয়াল, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর ।।

দুইহাত দুই কাঁধের নিচে। পাথর মূর্তির ভঙ্গিতে নিশ্চুপ কাইলিয়ান এমবাপে। ফরাসি এই সেনসেশনের গোল উদযাপনের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে বার বার। রাশিয়া বিশ্বকাপে এমবাপে গোল করেছেন চারটি। তার গোল উদযাপনের এই বিশেষ স্টাইল মনে ধরেছে অনেকের। ক্লাব ফুটবলেও কিন্তু ফরাসি এই তারকা এভাবেই গোল উদযাপন করেন।

গোল সেলিব্রেশনের এই স্টাইল কিন্তু এমবাপের নিজের নয়। বিশ্ব ফুটবলে ট্রেডমার্ক হয়ে যাওয়া এই উদযাপন শিখেছেন ছোটো ভাই এথান এমবাপের কাছে। ছোটবেলায় এমবাপের বিপক্ষে ফিফার ভিডিও গেইমে গোল করেই এমন ভঙ্গি করতেন এথান। আর ছোটো ভাইয়ের সেই উদযাপনকেই এখন ফুটবল বিশ্বে ট্রেডমার্ক বানিয়ে ফেলেছেন এমবাপে।

শুধু এমবাপে নয়, রাশিয়া বিশ্বকাপে সেলিব্রেশনের নতুন ভঙ্গি দেখা গেছে আর্জেন্টাইন তারকা লিওনেল মেসির। নাইজেরিয়ার বিপক্ষে দুর্দান্ত একটি গোল করার পর দু-হাত আকাশের দিকে তুলেছিলেন মেসি, তার আগে গ্যালারির দিকে ছোট একটা কুর্নিশ করতেও দেখা যায়। যদিও ক্লাব ক্যারিয়ারে দু-হাত পাশে রেখে দৌড়াতে দৌড়াতে গোল উদযাপন করেন মেসি। কিন্তু নাইজেরিয়ার বিপক্ষে দেখা যায় আর্জেন্টাইন ফুটবল জাদুকরের অন্য এক রূপ।

কুর্নিশের মাধ্যমে মেসি হয়তো সবাইকে মনে করিয়ে দিতে চেয়েছিলেন-দর্শকই ঈশ্বর। আর দু-হাত আকাশ পানে তুলে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন তার প্রয়াত দাদীর কথা। মেসির ১০ বছর বয়সে তিনি মারা যান। যিনি মেসির ফুটবল আগ্রহ দেখে প্রথম ফুটবলটি কিনে দিয়েছিলেন। দাদী মারা গেলেও তার ছায়া এখনো মাথার উপরে আছে এবং তিনি উপর থেকে সব সময় মেসিকে দেখছেন বলেই আর্জেন্টাইন অধিনায়ক ওভাবে সেলিব্রেশন করে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছিলেন।

বিজ্ঞাপন

এর আগেও মেসির ভিন্ন সেলিব্রেশন দেখা গিয়েছিল। গত মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদের মাঠে গোল করে জার্সি খুলেছিলেন তিনি। এছাড়া, লা লিগায় সেল্টাভিগোর বিপক্ষে গোল করে মেসির ‘ফোন কল’ উদযাপন নিয়ে আলোচনা ছিল তুঙ্গে। রহস্যময় সেই উদযাপনের কারণ জানাতে গিয়ে মেসি বলেছিলেন, সেই ম্যাচে স্টেডিয়ামে আমার ভাতিজা অগাস্টিন হাজির ছিল। সে বার্সেলোনার অনূর্ধ্ব-১৬ দলে খেলে। সেল্টাভিগোর ম্যাচের আগে সারাদিন সে আমার সঙ্গে কথা বলার জন্য ফোন করে। কিন্তু কথা বলতে পারেনি। মাঠে নামার আগে ভাতিজার এই ফোনের কথা জানতে পারি। ভেবেছিলাম সে মন খারাপ করেছে, তাই তাকে ম্যাচ শেষে ফোন করবো বলে ভাবছিলাম। ওই ভাবনা থেকেই ‘ফোন কল’ সেলিব্রেশন করেছি।

এবার রাশিয়া বিশ্বকাপে পর্তুগালের অধিনায়ক ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো করেছেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ চারটি গোল। রাশিয়ায় স্পেনের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করার পর মরক্কোর বিপক্ষেও করেছিলেন একটি গোল। আর দ্বিতীয় ম্যাচে গোল উদযাপন করেন থুতনি ধরে। থুতনিতে হাত দিয়ে কাকে যেন কি ইশারাও করেন তিনি। ম্যাচ শেষে ফিফার সঙ্গে আলাপকালে উদযাপন রহস্য খোলাসা করেন সিআর সেভেন, ‘স্পেন ম্যাচের আগে আমি সেভ করেছিলাম। এরপর আর সেভ করার সুযোগ হয়নি। সেভ করার সময় আমার পাশে ছিল কোয়ারেসমা। তখন কিছু অংশ কেটেও ফেলি, যার কারণে দাড়ির কিছুটা অংশ রেখে দিয়েছিলাম। সে সময় কোয়ারেসমাকে বলেছিলাম, স্পেনের বিপক্ষে গোল করতে পারলে, বিশ্বকাপ শেষ হওয়া পর্যন্ত এই দাড়ি রেখে দিব। এটা সত্যি সত্যিই আমার জন্য সৌভাগ্য বয়ে এনেছে। স্পেনের বিপক্ষে গোল করেছি এবং মরক্কোর বিপক্ষেও গোল করেছি। কোয়ারেসমাকে সেটা মনে করিয়ে দিতেই থুতনিতে হাত দিয়ে গোল উদযাপন করেছি।

বিজ্ঞাপন

সময়ভেদে রোনালদোর গোল উদযাপনেও ছিল ভিন্নতা। সমালোচকদের জবাব দিতে সেলিব্রেশনের সময় কখনো কখনো তাকে আঙ্গুল ঠোটে নিয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। আবার কখনো কখনো গায়ের জার্সি খুলে করেন উদ্দাম উদযাপন করেন বান্ধবী জর্জিনা রদ্রিগেজকে খুশি করতে। তবে, রোনালদোর ট্রেডমার্ক সেলিব্রেশন কিন্তু একটাই, গোলের পর ফাঁকায় দৌড়ে লম্বা একটা লাফ আর দু-হাত পাশে, মুখটা পাথরের মতো নিরেট।

সারাবাংলা/এমআরপি

স্পোর্টস স্পেশাল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর