রিয়াল-জুভির জার্সিতে যে দশ তারকা
৫ আগস্ট ২০১৮ ১৬:৪৪
।। মুশফিক পিয়াল, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর ।।
সবশেষ রিয়াল মাদ্রিদ থেকে জুভেন্টাসে নাম লিখিয়েছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। তাতে, একই সঙ্গে স্প্যানিশ জায়ান্ট ক্লাব আর ইতালিয়ান জায়ান্ট ক্লাব দুই ক্লাবের জার্সিতে বিশ্বসেরা তারকাদের তালিকা লম্বা হয়েছে। রিয়াল ছেড়ে রোনালদো এই মৌসুমে নামবেন জুভিদের জার্সিতে। আর জুভিদের জার্সি ছেড়ে এই মৌসুমে আরেক ইতালিয়ান ক্লাব এসি মিলানে যোগ দিয়েছেন রিয়ালের সাবেক তারকা গঞ্জালো হিগুয়েইন।
১। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো: রিয়ালের অন্যতম সেরা তারকা পর্তুগালের অধিনায়ক রোনালদো ১০৫ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে এবার যোগ দিয়েছেন জুভেন্টাসে। ২০০৩ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে খেলেছেন রোনালদো। ২০০৯ সালে নাম লেখান রিয়াল মাদ্রিদে। এরপর চলে আসেন জুভেন্টাসে। রিয়ালের জার্সিতে ৪৩৮ ম্যাচ খেলে এই পর্তুগিজ তারকা গোল করেছেন ৪৫০টি।
২। গঞ্জালো হিগুয়েইন: ২০০৬ সালে আর্জেন্টাইন তারকা ফরোয়ার্ড হিগুয়েইন নাম লেখান রিয়াল মাদ্রিদে। ২০১৩ সাল পর্যন্ত সাত মৌসুমে ২৬৪ ম্যাচ খেলেছেন রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে। ২০১৩ সালে তিনি নাম লেখান নাপোলিতে। সেখানে তিন মৌসুমে খেলেছেন ১৪৬ ম্যাচ। গত দুই মৌসুম জুভিদের জার্সিতে ১০৫ ম্যাচ খেলার পর এবার তিনি এসি মিলানের জার্সিতে খেলবেন।
৩। সামি খেদিরা: জার্মানির এই তারকা মিডফিল্ডার ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত খেলেছেন রিয়াল মাদ্রিদে। ২০১৫ সালে যোগ দেন জুভেন্টাসে। রিয়ালের হয়ে ১৬১ ম্যাচ খেলা খেদিরা জুভিদের হয়ে খেলেছেন ১০৯ ম্যাচ।
৪। আলভারো মোরাতা: স্পেন জাতীয় দলের তারকা স্ট্রাইকার আলভারো মোরাতা ইয়ুথ ক্যারিয়ার কাটিয়েছেন অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ, গেটাফে আর রিয়াল মাদ্রিদে। ২০১০ সালে তিনি রিয়ালের জুনিয়র দলে জায়গা করে নেন। এরপর ২০১০ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত রিয়ালের মূল দলে খেলেছেন ৫২ ম্যাচ। পরে জুভেন্টাসে নাম লিখিয়ে দুই মৌসুমে খেলেছেন ৯৩ ম্যাচ। এরপর আবারো ২০১৬ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে ফেরেন রিয়ালে, খেলেন ৪৩ ম্যাচ। এক মৌসুম রিয়ালে কাটিয়ে মোরাতা ২০১৭ সালে নাম লেখান ইংলিশ ক্লাব চেলসিতে।
৫। ফ্যাবিও ক্যানাভারো: ২০০৬ সালে ইতালির হয়ে বিশ্বকাপ জেতা ফ্যাবিও ক্যানাভারো সে বছরই জিতেছিলেন ব্যালন ডি অর শিরোপা। বিশ্বকাপের সেরা একাদশে জায়গা করে নেওয়া ছাড়াও এই কিংবদন্তি জিতেছিলেন সিলভার বল। সে বছরেই যোগ দিয়েছিলেন রিয়াল মাদ্রিদে। তিন মৌসুমে ৩৭ ম্যাচ খেলেছিলেন। তার আগে জুভেন্টাসে কাটিয়ে এসেছেন আরও দুটি মৌসুম। ২০০৯ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে ফিরেছিলেন জুভিদের ক্লাবে।
৬। এমারসন: ব্রাজিলের হয়ে ৭৩ ম্যাচ খেলা ডিফেন্ডিস মিডফিল্ডার এমারসন জার্মান ক্লাব বায়ার লেভারকুজেনের হয়ে খেলার পর ২০০০ সালে যোগ দেন ইতালিয়ান ক্লাব রোমাতে। ২০০৪ সালে তিনি যোগ দেন জুভেন্টাসে, দুই মৌসুমে খেলেছেন ৪৭টি ম্যাচ। এরপর ২০০৬ সালে যোগ দেন রিয়াল মাদ্রিদে, এক মৌসুমে খেলেছেন ৩৪টি ম্যাচ। এরপর এসি মিলান ঘুরে যোগ দেন ব্রাজিলিয়ান ক্লাব সান্তোসে। ক্লাব ক্যারিয়ারে তিনি খেলেছেন ৫০০’র উপরে ম্যাচ।
৭। জিনেদিন জিদান: ২০০০ সালে ফ্রান্স জাতীয় দলের হয়ে জিনেদিন জিদান জিতেছিলেন উয়েফা ইউরোপিয়ান কাপ। এর আগে ১৯৯৮ সালে জিদান জিতেছিলেন বিশ্বকাপ শিরোপা। সে বছরই জিতেছিলেন ব্যালন ডি অর শিরোপা। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত পাঁচ মৌসুমে জিদান খেলেছেন জুভেন্টাসে। ইতালিয়ান এই ক্লাবের জার্সিতে তিনি খেলেছেন ২০৯ ম্যাচ। ২০০১ সালে জিদান যোগ দেন রিয়াল মাদ্রিদে। ২০০৬ সাল পর্যন্ত তিনি সেখানে খেলেছেন ২২৫ ম্যাচ। সবশেষ এই রিয়ালের কোচ হয়ে জিতেছিলেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা।
৮। মিখায়েল লাড্রুপ: জাতীয় দল ডেনমার্কের হয়ে ১০৪ ম্যাচ খেলা অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার মিখায়েল ক্লাব ক্যারিয়ারে খেলেছেন ল্যাজিও, আয়াক্স, জুভেন্টাস, বার্সেলোনা, রিয়াল মাদ্রিদের মতো বড় বড় ক্লাবে। ১৯৮৫ সালে ল্যাজিও ছেড়ে এই ডেনিশ তারকা যোগ দেন জুভেন্টাসে। চার মৌসুমে জুভিদের জার্সিতে খেলেছেন ৪১ ম্যাচ। ১৯৮৯ সালে তিনি যোগ দেন বার্সায়, পাঁচ মৌসুমে তিনি সেখানে খেলেন ২১৬ ম্যাচ। এরপর ১৯৯৪ সালে তিনি যোগ দেন রিয়াল মাদ্রিদে। মিখায়েল সেখানে দুই মৌসুমে খেলেছেন ৭৬ ম্যাচ। খেলোয়াড়ি জীবন পার করে মিখায়েল আটটি দলকে কোচিং করিয়েছেন। ছিলেন নিজ দেশ ডেনমার্কের সহকারী কোচ। গেটাফে, স্পার্টাক মস্কো, সোয়ানসি সিটির মতো ক্লাবকে তিনি কোচিং করিয়েছেন।
৯। হুয়ান এসনাইদার: আর্জেন্টিনার এই সাবেক স্ট্রাইকারও খেলেছেন জুভেন্টাস-রিয়াল মাদ্রিদে। ১৯৯১ সালে তিনি রিয়ালে যোগ দেন। এরপর ১৯৯৫ সালে স্প্যানিশ ক্লাব জারাজোজায় খেলেন। ১৯৯৫ সালে নাম লেখান রিয়াল মাদ্রিদে। এক মৌসুম রিয়ালে খেলে এসনাইদার যোগ দেন অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদে। কোথায় দীর্ঘমেয়াদে থিতু হতে পারেননি। এক মৌসুম পরেই তিনি যোগ দেন এসপানিওলে। সেখানেও এক মৌসুম কাটিয়ে যোগ দেন জুভেন্টাসে। মাঝে পুরোনো ক্লাব জারাজোজায় ধারে খেলে ২০০১ সালে যোগ দেন পোর্তোতে। এরপর থেকে প্রতি মৌসুমে ক্লাব বদল করা এসনাইদার সবশেষ ২০০৫ সালে নিজ দেশ আর্জেন্টিনার ক্লাব নিউওয়েলস ওল্ড বয়েজে খেলে অবসর নেন। গেটাফের সহকারী কোচের দায়িত্ব পালনের পর তিনি জারাজোজায় কোচিং করান। এরপর কর্দোভা, গেটাফের কোচের ভূমিকায় ছিলেন। ২০১৭ সালে আর্জেন্টাইন এই সাবেক খেলোয়াড় কোচ হিসেবে যোগ দেন জাপানিজ ক্লাব ইউনাইটেড চিবাতে।
১০। লুইস দেল সোল: স্পেনের সাবেক এই মিডফিল্ডার ১৯৫৩ সাল থেকে ১৯৫৯ সাল পর্যন্ত খেলেছেন রিয়াল বেতিসে। ১৯৬০ সালে তিনি যোগ দেন রিয়াল মাদ্রিদে। দেল সোল প্রথম ফুটবলার যিনি স্প্যানিশ ক্লাব রিয়াল থেকে ইতালির ক্লাব জুভেন্টাসে যোগ দিয়েছিলেন। ১৯৬২ সালে তিনি ইতালির ক্লাবটিতে নাম লেখান। রিয়ালে দুই মৌসুমে ৫৫ ম্যাচ খেলা দেল সোল জুভিদের জার্সিতে আট মৌসুমে খেলেছেন ২২৮ ম্যাচ। ১৯৭০ সালে তিনি যোগ দেন রোমাতে। এরপর ১৯৭২ সালে তিনি আবারো ফেরেন পুরোনো ক্লাব বেতিসে। ১৯৮৬-৮৭ সালে বেতিসের কোচ হিসেবে কাজ করার পর দেল সোল দ্বিতীয় মেয়াদে ২০০১ সালে আবারো বেতিসের কোচ হিসেবে যোগ দেন।
সারাবাংলা/এমআরপি