।। জাহিদ-ই-হাসান, স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: সবশেষ এশিয়ান গেমসে (দক্ষিণ কোরিয়া ২০১৪) অ্যাথলেটিকস থেকে কোন নারীই অংশ নিতে পারেন নি এশিয়ার সর্ববৃহত এই টুর্নামেন্টে। এবার অবশ্য শূন্যের জায়গায় একজন যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। সংখ্যাটা প্রতিবারই এই ১ আর ০ এর মধ্যেই ঘুরপাক খায়। বেশিরভাগ ডিসিপ্লিনেই বাংলাদেশের চেহারা অভিন্ন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিবেশি দেশে যখন প্রচুর অ্যাথলেট বের হচ্ছেন সেই হিসেবে বাংলাদেশে নারী খেলোয়াড়ের সংখ্যা নেহাতই কম।
কতটা কম সেটারই ছোট্ট পরিসংখ্যান দেয়া যেতে পারে। চলতি মাসের ১৮ তারিখ থেকে সেপ্টেম্বরের ১২ তারিখ পর্যন্ত ইন্দোনেশিয়ায় চলবে এশিয়ান গেমসের ১৮ তম আসর। সেখানে বাংলাদেশ ১৪টি ডিসিপ্লিনে মোট ১১৭ জন খেলোয়াড় অংশ নিবে।
অ্যাথলেটিকসসহ মোট ৫৪টি ডিসিপ্লিন আছে এশিয়াডে। বাংলাদেশ তার দুই তৃতীয়াংশ ডিসিপ্লিনে অংশই নিতে পারছে না! সংখ্যাটা ৪০। এতোগুলো ইভেন্টে দেশের কোন খেলোয়াড়ই নেই যাওয়ার মতো!
১১৭ জনের মধ্যে ৮১ জনই পুরুষ খেলোয়াড়। নারী খেলোয়াড়ের সংখ্যা মাত্র ৩১ জন। কাবাডির ১২, আর্চারির ৬ ও শুটিংয়ের ৭ জন বাদ দিলে নারীদের খুঁজেই পাওয়া যায়না। ১৪ ডিসিপ্লিনের ৬টিতে কোন নারী খেলোয়াড়ই নাই। শূন্যের এই তালিকায় আছে- বাস্কেটবল, ফুটবল, বীচ ভলিবল, ব্রিজ, হকি আর রোইং। এই ডিসিপ্লিনে নারী খেলোয়ারে অস্তিত্বই নেই।
এখন যেগুলোতে আছে সেখানেই ‘যায় যায় অবস্থা’। অ্যাথলেটিকস থেকে মাত্র একজন নারী, গল্ফ থেকে দুজন, সুইমিং থেকে একজন, ভারোত্তোলন থেকে একজন, রেসলিং থেকে একজন। রুগ্নাবস্থা!
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশ থেকে নারী খেলোয়াড় উঠে আসছে না। পাইপলাইনেও নারীরা নেই। ফেডারেশনগুলোর অবহেলাতো আছেই। দীর্ঘমেয়াদী নেই পরিকল্পনাও। সঙ্গে এই ডিসিপ্লিনগুলোতে নারীদের নেই কোন আর্থিক নিশ্চয়তাও।
দেশের ১০০ মিটার স্প্রিন্টার রাণী শিরিন আক্তার সারাবাংলাকে ব্যাখ্যা দিলেন তার, ‘গতবার তো ছিলই না। এবার একজন যাচ্ছে। শুরু হয়েছে যাওয়া। সেটা ভালো। কিন্তু সেই তুলনায় নেই অ্যাথলেট। এখানে আর্থিক নিশ্চয়তা নেই। আর ভালো ভালো খেলোয়াড়রা স্পন্সরও পায় না। দেশের পরিবারে অভিভাবকদের মধ্যে উদাসীনতা আছে। আছে সামাজিক বাধাও। সেই জন্য উঠে আসছে না নারী খেলোয়াড়।’
এই ‘নেই নেই’ মাঝে একটা অবশ্য সুখবর আছে নারীদের জন্য। এই এশিয়াডে বাংলাদেশের পতাকা বহন করবেন এস এ গেমসে স্বর্ণজয়ী নারী ভারোত্তোলক মাবিয়া আক্তার সীমান্ত। তার মুখেও আক্ষেপের সুর। উঠে আসছেন না নারী খেলোয়াড়।
কবে, এমন পরিস্থিতির আক্ষেপ ঘুচবে?
সারাবাংলা/জেএইচ