Saturday 13 Sep 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অল্প বয়সেই না ফেরার দেশে ফুটবলার তানভীর


৯ অক্টোবর ২০১৮ ১৭:৫০ | আপডেট: ৯ অক্টোবর ২০১৮ ১৭:৫১
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

।। স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকাঃ সেই দুর্ঘটনাই একেবারে কুড়ে কুড়ে খেয়েছে তাকে। জাতীয় দলের সাবেক এই ফুটবলার মনের শক্তিতেও তাও বেঁচে ছিলেন তিন বছর। আর পেরে উঠলেন না। চলে গেলেন না ফেরার দেশে। সাবেক এই ফুটবলার রিয়াজ আলম খান চৌধুরী তানভীর আর নেই।

মঙ্গলবার (৯ অক্টোবর) সকাল সোয়া ১১ টার দিকে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল মাত্র ৪০ বছর।

মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী শাহ্দিল-ই-আফরোজ (আলো), ২ মেয়ে তাজবিতা ও তানবিতা এবং অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে যান। সাবেক এ ফুটবলারের বাড়ি নাটোরের কানাইখালী পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায়। তার নামাযে জানাজা মঙ্গলবার (৯ অক্টোবর) বাদ এশা নাটোর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ্ মাঠে (কাছারী মাঠ) অনুষ্ঠিত হবে। পরে মাদ্রাসা মোড় গাড়িখানা গোরস্থানে জাতীয় দলের সাবেক এ ফুটবলারের দাফন সম্পন্ন হবে।

বিজ্ঞাপন

এক সময়ের জাতীয় দলের দাপুটে ফুটবল খেলোয়াড়। সেই ১৯৯৫ সাল থেকে ফার্স্ট ডিভিশন লীগের মাধ্যমে ক্যারিয়ার শুরু। এশিয়া কাপ খেলার মাধ্যমে ১৯৯৮ সালে জাতীয় দলে অভিষেক। ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলংকা, ওমান, উজবেকিস্তান, কাতার, লন্ডনসহ প্রায় ১৪টি দেশের মাটিতে জাতীয় দলের হয়ে বিভিন্ন ফুটবল টুর্ণামেন্টে অংশ নিয়েছেন তিনি। খেলতেন লেফ্ট মিড ফিল্ডার হিসাবে। গোল করেছেন গোল করিয়েছেন, তবে গোল করিয়েই আনন্দ পেতেন বেশি।

মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া চক্র, ফেনী সকার, ব্রাদার্স ইউনিয়ন, আবাহনী ক্রীড়া চক্র, শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের মত নামিদামি ফুটবল টিমে খেলে তানভীর কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন। ২০০৫ সালে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের প্রথম প্রতিষ্ঠার বছরেই রানার্সআপ ট্রফি জিতিয়ে দেয়া ছিল তাঁর ক্যারিয়ার সেরা অবদান।

উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৫ সালের ১৯শে মে ভোর ৫.৪৫ মিনিটে দেশ ট্রাভেলসের একটি কোচে ঢাকা যাওয়ার পথে গুরুদাসপুরের কাছিকাটা এলাকায় বিপরীতগামী একটি ট্রাকের সাথে সংঘর্ষে মারাত্মক ভাবে আহত হন সাবেক জাতীয় দলের ফুটবলার তানভীর। তার বুকে-পেটে রড ও কাঁচ ঢুকে যায়, মাথার পিছনে মারাত্মক আঘাতে তাঁর স্মৃতিশক্তি, কথাবলা ও চলার শক্তি সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়। মারাত্মক জখম অবস্থায় তাকে প্রথমে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নেয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর তাকে স্থানান্তর করা হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে । তার শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে রাজশাহী মেডিকেলের ডাক্তারগণ উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে রেফার্ড করেন। তাকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় নেয়া হয়। এরপরে তাঁকে তাৎণিকভাবে ঢাকা মেডিকেল থেকে স্কয়ার মেডিকেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে দীর্ঘ ৩ মাস ৬ দিন চিকিৎসা দেয়ার পর তাকে সাভারে অবস্থিত সিআরপিতে আরো ৩ মাস ফিজিওথেরাপি দেয়া হয়। কিন্তু সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি তার মাথার পেছনে এমন মারাত্মক আঘাত পেয়েছেন যে দেশে এত উন্নত চিকিৎসা করার পরও তাকে পঙ্গুত্ব বরণ করে নিতে হয়েছে। তিনি উঠে দাঁড়াতে পারতেন না, নিজ হাতে তুলে কিছু খেতে পারতেন না, কাউকে চিনতেও পারতেন না, তার সমস্ত সময় কেটেছে হুইল চেয়ারে আর বিছানায়।

সারাবাংলা/জেএইচ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর