।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।
প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট খেলেছেন প্রায় ১৪ বছর হয়ে গেছে। এ দলের হয়ে ক্যাম্প করেছেন, সফরও করেছেন। তারপরও জাতীয় দলের অভিজ্ঞতাটা ফজলে মাহমুদ রাব্বির জন্য একেবারেই নতুন। ৩০ বছর বয়সে এসে প্রথমবারের মতো ডাক পেয়েছেন জাতীয় দলে। সোমবার (১৫ অক্টোবর) মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে অনুশীলনের ফাঁকে সেই উচ্ছ্বাসের ঝিলিক রাব্বির চোখেমুখে। জিম্বাবুয়ে সিরিজের আগে পুরনো কথাটাই আবার মনে করিয়ে দিলেন, ফিটনেস আর বয়স কোনো বিষয় নয়, পারফরম্যান্স দিয়েই জাতীয় দলে জায়গা পাকা করে নিতে চান।
জাতীয় দলে যখন ডাক পেয়েছেন, রাব্বি যাচ্ছিলেন পিরোজপুরে নিজের বাড়িতে। সোমবার ক্যাম্প শুরু হয়েছে। প্রথম দিন থেকেই যোগ দিয়েছেন কোচ স্টিভ রোডস, বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশসহ অন্যরা। রাব্বির জন্য দিনটা অন্যরকমই, জাতীয় দলের ড্রেসিংরুমে প্রথমবারের মতো ভাগাভাগি করেছেন সতীর্থদের সঙ্গে। সেই উচ্ছ্বাস টের পাওয়া গেল তার কন্ঠেও, ‘খুব ভাল লাগছে। আমি খুব উপভোগ করছি, এই সময়টা। সবাই সবার কাজ নিয়ে খুব চিন্তা করে। কার কি দায়িত্ব, সেটা সবাই খুব ভাল জানে। আমি দেখছি, শেখার চেষ্টা করছি। তারা এক একজন কতোটা সিরিয়াস, এটা আমাকে খুবই অনুপ্রাণিত করছে।’
জাতীয় দলে এখন যারা আছেন তারা সবাই কঠোর পরিশ্রম করছেন। রাব্বি কীভাবে তাদের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেবেন? সেটার ব্যাখ্যাও দিলেন, ‘এবারের প্রিমিয়ার লিগ ভাল হয়েছিল আমার। মনে হয়েছে ফিটনেসটা যদি আরেকটু ভাল হত, তাহলে আমার রান ৭০০ থেকে ৮০০-৮৫০ রান হতে পারত। তখন আমার মাথায় আসছে, যে করেই হোক নিজের ফিটনেসের মানে উন্নতি করতে হবে। আমার সৌভাগ্য, তখন আমাকে বাংলাদেশ ‘এ’ দলে ডাকা হয়েছিল। সেখানে দুই আড়াই মাসের মত একটা ফিটনেস ক্যাম্প হয়েছে। ওই ক্যাম্পটা আমাকে খুব কাজে দিয়েছে। আমি খাওয়া দাওয়া নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছি। ওজন কমিয়েছি। বয়স নিয়ে যেই কথা হচ্ছে, আমি আসলে এসব নিয়ে ভাবি না। আমি যদি ফিট থাকি ও আমার পারফরম্যান্স থাকে তাহলে বয়স কোন বিষয় না।’
তবে কয়েক বছর আগে একটা সময় ক্রিকেট প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন। পড়াশোনা শেষে চাকুরিতে ঢুকে গিয়েছিলেন, পরে আবার ফিরেছেন ক্রিকেটে। রাব্বি সেই সময়ের কথাও মনে করলেন, ‘আসলে খেলতে খেলতে হয় না এমন, আমি সামনেও যাচ্ছি না। আমার পড়াশোনাও শেষ হয়ে যাচ্ছে। আমি ওই চিন্তা করেছি, অন্য কোন পেশায় যাই কিনা। সেই সময় চিন্তা করেছিলাম খেলা ছাড়ার। কিন্তু কিছুদিন চাকরি করার পর আমি আমার মনকে সায় দিতে পারলাম না। আমার মনে হল, আমি খেলা ছাড়া থাকতে পারব না। তারপর আবার চলে আসলাম, আবার খেলায় মন দিলাম। ওই বছর আমি আমার বন্ধুদের বলেছিলাম, আমি খেলব না। এরপর একদম খোলা মনে যখন খেলতে গিয়েছিলাম, তখন আমার মনে কোন চাপ ছিল না। শেষ পর্যন্ত পারফর্ম ভাল হয়েছে। এরপর থেকেই আসলে পরিবর্তনটা শুরু, মানসিকতায় পরিবর্তন এসেছে। বুঝেছি চাপ ছাড়া খেললে ভাল খেলত পারব। এখন ওইরকম চিন্তাই করি না খেলা নিয়ে। আমি সেটাই করার চেষ্টা করছি।’
রাব্বির কাছ থেকে এমন চাপহীন ক্রিকেটই চাইবে বাংলাদেশ।
সারাবাংলা/এএম/এসএন