বাংলাদেশের যত সিরিজ জয়
২৫ অক্টোবর ২০১৮ ১৪:১৩
।। মুশফিক পিয়াল, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর ।।
আরও একটি সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। ওয়ানডেতে ক্রমেই শক্তিশালী হয়ে উঠা টাইগারদের এটি ২৩তম ওয়ানডে সিরিজ জয়। প্রথম জয়টা এসেছিল সেই ২০০৫ সালে এই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। এরপর টাইগাররা হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ভারত, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো জায়ান্ট দলগুলোকে। জিম্বাবুয়েকে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৭ উইকেটে হারিয়ে ২৩তম ওয়ানডে সিরিজ জয়ের স্বাদ নিয়েছে বাংলাদেশ। দেশের মাটিতে দুই বছর পর দ্বিপক্ষীয় ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে টাইগাররা। দেশের মাটিতে এটি বাংলাদেশের ১৮তম সিরিজ জয়। এছাড়া দেশের বাইরে জিতেছে আরও ৫টি ওয়ানেড সিরিজ।
২০০৫ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৫ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশ জিতেছিল ৩-২ ব্যবধানে। এরপর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুইবার সিরিজ হেরে টাইগাররা খেলেছিল কেনিয়ার বিপক্ষে। সেবার চার ম্যাচের চারটিতেই জিতেছিল লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। প্রথমবার টাইগাররা প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে দিয়ে হোয়াইটওয়াশ করার স্বাদ নিয়েছিল। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পরের সিরিজে বাংলাদেশ হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল ৩-০ ব্যবধানে। ২০০৬ সালে আবারো প্রতিপক্ষ ছিল জিম্বাবুয়ে। এবার সিরিজ হারতে হয়েছিল ৩-২ ব্যবধানে।
২০০৬ সালে আবারো কেনিয়ার প্রতিপক্ষ হয়ে বাংলাদেশ জিতেছিল ৩-০ ব্যবধানে। ২০০৬ সালে ৫ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশ জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করে, ৫-০ ব্যবধানে সিরিজ জেতে টাইগাররা। এরপর স্কটল্যান্ডকে ২-০, জিম্বাবুয়েকে ৩-১ ব্যবধানে হারায় বাংলাদেশ।
২০০৭ সালে ভারতের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে ২-০ ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ। একই বছর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানে হারে লাল-সবুজরা। এরপর নিউজিল্যান্ড আর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানে হেরেছিল। তবে, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষে ৫ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল বাংলাদেশ। ২০০৮ সালে ৩-০ ব্যবধানে হেরেছিল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। পরের সিরিজে বাংলাদেশ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২-১, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২-০ (৩ ম্যাচ সিরিজ) ব্যবধানে হেরেছিল। শ্রীলঙ্কায় ত্রিদেশীয় সিরিজেও হেরেছিল বাংলাদেশ।
২০০৮-০৯-১০ মৌসুমে বাংলাদেশ পর পর চারটি ওয়ানডে সিরিজে জিতেছিল। জিম্বাবুয়েকে ২-১, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৩-০ তে হোয়াইটওয়াশের পর জিম্বাবুয়েকে ৪-১ এবং ৪-১ ব্যবধানে হারিয়েছিল টাইগাররা। এরপর শ্রীলঙ্কায় ত্রিদেশীয় সিরিজে শিরোপা জেতা হয়নি টাইগারদের। পরে নিউজিল্যান্ডের কাছে ৩-০ আর ইংল্যান্ডের কাছে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশের পর এশিয়া কাপ খেলেছিল বাংলাদেশ। ২০১০ সালে ন্যাটওয়েস্ট সিরিজে ইংলিশদের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচ ওয়ানেড সিরিজটি ১-১ এ ড্র হয় আর স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে এক ম্যাচ সিরিজের ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়। স্কটিশদের মাঠে নেদারল্যান্ডসও এক ম্যাচ সিরিজে বাংলাদেশকে হারিয়ে দেয়।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১০ সালে বাংলাদেশ জিতেছিল ৪-০ ব্যবধানে, সিরিজটি ছিল ৫ ম্যাচের। এরপর জিম্বাবুয়েকে ৩-১ ব্যবধানে হারিয়ে দেয় টাইগাররা। ২০১১ বিশ্বকাপের আসরে এরপর বাংলাদেশ খেলেছিল নিজেদের মাটিতে। পরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩-০, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৩-২, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২-১, পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানে হারে লাল-সবুজরা। এশিয়া কাপে অংশ নেওয়ার পর ২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৩-২ ব্যবধানে হারায় বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১-১ (৩ ম্যাচ সিরিজ) ড্র করার পর জিম্বাবুয়ের কাছে ২০১৩ সালে ২-১ ব্যবধানে হারে। পরের সিরিজে জিম্বাবুয়েকে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করে টাইগাররা। এরপর লঙ্কানদের বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হয় বাংলাদেশ।
এশিয়া কাপে খেলার পর বাংলাদেশ ভারতের কাছে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে ২-০ ব্যবধানে হারে। ২০১৪ সালে ক্যারিবীয়ানদের কাছে হারে ৩-০ ব্যবধানে, পরের সিরিজে জিম্বাবুয়েকে ৫-০ ব্যবধানে উড়িয়ে দেয় টাইগারর। ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলেছে টাইগাররা। এরপরই পাল্টে যায় বাংলাদেশ, নতুনভাবে জেগে উঠে টাইগাররা। টানা পাঁচটি সিরিজ জেতে লাল-সবুজরা। বিশ্বকাপের পর ঘরের মাঠে পাকিস্তানকে ৩-০, ভারতকে ২-১, দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২-১, জিম্বাবুয়েকে ৩-০ আর আফগানিস্তানকে ২-১ ব্যবধানে হারায় টাইগাররা।
এরপর তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ। পরের তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজটি লঙ্কানদের বিপক্ষে ১-১ এ ড্র হয়। এরপর নিউজিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ, ইংল্যান্ডে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার পর ২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশ হেরেছিল ৩-০ ব্যবধানে। বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা-জিম্বাবুয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজে শিরোপা জেতা হয়নি টাইগারদের। তবে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়ে চলতি বছর বাংলাদেশ ২-১ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছিল। এরপর এশিয়া কাপের আসরে ফাইনালে উঠলেও বাংলাদেশ ২ রানে হেরেছিল ভারতের বিপক্ষে।
চলতি সিরিজে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচটি জিতেছিল ২৮ রানের ব্যবধানে। মিরপুরে প্রত্যাশিত জয়ের পর চট্টগ্রামেও জয়ের ধারা ধরে রেখেছে টাইগাররা। মাশরাফি-মোস্তাফিজ-লিটন-ইমরুল-মুশফিক-মিঠুনরা দ্বিতীয় ম্যাচে জিতেছে ৭ উইকেটে। ২-০ তে লিড নেওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশ সিরিজ নিশ্চিত করেছে। আগামী ২৬ অক্টোবর চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে সিরিজের শেষ ম্যাচটি খেলতে নামবে টাইগাররা। আরেকটি ধবলধোলাইয়ের স্বাদ নেওয়ার অপেক্ষায় মাশরাফির দল।
ছবি: শ্যামল নন্দী
সারাবাংলা/এমআরপি