জিম্বাবুয়েকে ধবলধোলাই করল টাইগাররা
২৬ অক্টোবর ২০১৮ ২১:১৫ | আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৮ ২৩:০৯
।। স্পোর্টস ডেস্ক ।।
তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ জিতে আগেই সিরিজ নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচে বাকি ছিল জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করার। এবার সফরকারী দলকে ধবলধোলাই করল মাশরাফি বাহিনী।
তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে মাঠে নেমেছিল স্বাগতিক বাংলাদেশ ও সফরকারী জিম্বাবুয়ে দল। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টসে হেরে আগে ব্যাট করে ২৮৬ রান তোলে জিম্বাবুয়ে। জবাবে জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪২.১ ওভারে মাত্র ৩ উইকেট হারিয়েই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ (২৮৮/৩)। মুশফিকুর রহিম ২৮ এবং মোহাম্মদ মিথুন ৭ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন।
জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে কাইল জারভিসের করা ইনিংসের প্রথম বলেই শূন্য হাতে ফেরেন লিটন দাস (০/১)। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে দলের হাল ধরেন ইমরুল-সৌম্য। ১৪তম ওভারের দ্বিতীয় বলে দলীয় ৯৪ রানে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১৭তম অর্ধশতক তুলে নেন ইমরুল।
একই পথে হাঁটেন সৌম্যও। ১৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে সপ্তম অর্ধশতক তুলে নেন সৌম্য। এরপর ব্যাটে ঝড় তোলেন দুজন মিলে। গড়ে তোলেন দেশের মাটিতে সর্বোচ্চ ও দেশের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ড। ২৮তম ওভারের প্রথম বলে সৌম্য তুলে নেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারে নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। মাত্র ৮৮ বল খরচায় ৯ চার ও চার ছক্কায় দ্রুততম সেঞ্চুরি তুলে নেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।
এরপর সৌম্যের দুর্দান্ত ইনিংস থেমে যায় দলীয় ২২০ রানে। মাসাকাদজার করা ৩০তম ওভারের শেষ বলে তিরিপানোর হাতে ক্যাচ দিয়ে ব্যক্তিগত ১১৭ রানে ফেরেন সৌম্য (২২০/২)। ৯২ বলে ৯ চার ও ৬ ছক্কায় দুর্দান্ত ইনিংসটি খেলেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।
এরপর সেঞ্চুরিতে যোগ দেন ইমরুল কায়েস। ৯৯ বলে ৯টি চার ও এক ছক্কায় দুর্দান্ত সেঞ্চুরি তুলে নেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। দলীয় ২৭৪ রানে ব্যক্তিগত ১১৫ রানে থামেন ইমরুল। ওয়েলিংটন মাসাকাদজার বলে এলটন চিগুম্বুরার হাতে বাউন্ডারির কিনারে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এই সিরিজে সর্বোচ্চ রান করা এই ব্যাটসম্যান।
এর আগে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাংলাদেশের দলপতি মাশরাফি বিন মর্তুজা। আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৮৬ রান তোলে জিম্বাবুয়ে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১২৯ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন শেন উইলিয়ামস। ১৪৩ বলে ১০ চার ও ১ ছক্কায় ১২৯ ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ এই ইনিংস খেলেন তিনি। এ ছাড়াও ৭২ বলে ৮টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৭৫ রান করে আউট হন ব্র্যান্ডন টেইলর। সিকান্দার রাজা ৪০ ও পিটার মুর করেন ২৮ রান।
বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ২টি উইকেট তোলেন নাজমুল হাসান অপু। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও আবু হায়দার রনি ১টি করে উইকেট নেন।
ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন সৌম্য সরকার। আর সিরিজ সেরার পুরস্কার আসে ইমরুল কায়েসের হাতে।
এই ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত করেছে টাইগাররা। এই ম্যাচের একাদশে ছিলেন না মেহেদি হাসান মিরাজ, ফজলে মাহমুদ এবং মোস্তাফিজুর রহমান। তাদের জায়গায় দলে ঢুকেছেন আরিফুল হক, আবু হায়দার রনি এবং সৌম্য সরকার। আরিফুলের এই ম্যাচের মধ্যদিয়ে অভিষেক হয়।
ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করে গাজী টিভি। খেলাটির অনলাইন সম্প্রচার করে র্যাবিটহোলবিডি।
সিরিজের প্রথম ম্যাচে প্রত্যাশিত জয় পেয়েছিল লাল-সবুজরা। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ভেন্যু বদলালেও বদলায়নি টাইগাররা, সহজ জয় নিয়ে সিরিজে ২-০ তে লিড নেয়। মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে গত ২১ অক্টোবর তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ২৮ রানে জয় পায়। আর সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে সফরকারী জিম্বাবুয়েকে ৭ উইকেটে উড়িয়ে দেয় টাইগাররা। সিরিজের তৃতীয় ম্যাচটি তাই টাইগারদের জন্য পরীক্ষা-নিরিক্ষার ম্যাচ। জিম্বাবুয়েকে আরেকবার হোয়াইটওয়াশের অপেক্ষায় মাশরাফি-মুশফিক-মাহমুদুল্লাহরা।
ওয়ানডেতে সব শেষ পাঁচ ম্যাচের মাত্র একটিতেই হেরেছে বাংলাদেশ। সেটি এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে মাত্র ২ রানের ব্যবধানে। ওদিকে, জিম্বাবুয়ে নিজেদের খেলা সব শেষ ৫ ম্যাচের পাঁচটিতেই হেরেছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ ২৩টি ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে। ঘরের মাঠেই জিতেছে ১৮টি সিরিজ। আর অ্যাওয়ে সিরিজে পাঁচবার সিরিজ জয়ের স্বাদ নিয়ে এসেছে।
বাংলাদেশ একাদশ: লিটন দাস, ইমরুল কায়েস, আরিফুল হক, মুশফিকুর রহিম, মোহাম্মদ মিঠুন, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, আবু হায়দার রনি, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মাশরাফি বিন মর্তুজা, নাজমুল ইসলাম অপু এবং সৌম্য সরকার।
জিম্বাবুয়ের একাদশ: হ্যামিলটন মাসাকাদজা, সেফাস ঝুয়াও, ব্রেন্ডন টেইলর, সিকান্দার রাজা, শেন উইলিয়ামস, পিটার মুর, এলটন চিগুম্বুরা, ডোনাল্ড তিরিপানো, রিচার্ড এনগারাভা, কাইল জারভিস এবং ওয়েলিংটন মাসাকাদজা।
ছবি: শ্যামল নন্দী
সারাবাংলা/এসএন