প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩২৪
২৩ নভেম্বর ২০১৮ ০৯:৩০
।। স্পোর্টস ডেস্ক ।।
দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে মাঠের লড়াইয়ে মুখোমুখি স্বাগতিক বাংলাদেশ এবং সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বৃহস্পতিবার (২২ নভেম্বর) টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম দিন শেষে ৮ উইকেটে ৩১৫ রান সংগ্রহ করে টাইগাররা। দ্বিতীয় দিনে ব্যাট করতে নেমে ৯ রান যোগ করতেই বাকি দুই উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
আগের দিনে ৫৬ রানের জুটি গড়ার পর দ্বিতীয় দিনের ব্যাটিংয়ে নামেন নাঈম-তাইজুল। তবে বেশিদূর এগোয়নি দু’জনের জুটি।দলীয় ৩২৪ রানে ব্যক্তিগত ২৬ রানে জোমেল ওয়ারিকানের বলে শাই হোপের হাতে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন নাঈম হাসান (৩২৪/৯)। এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে দলের রান যোগ হওয়ার আগেই এলবির শিকার হন মোস্তাফিজুর রহমান। তাতেই ইনিংস থেমে যায় বাংলাদেশের (৩২৪/১০)।
এর আগে প্রথম দিনে ইমরুল কায়েসের সঙ্গে ওপেনিংয়ে জুটি গড়তে নামেন দারুণ ফর্মে দলে ফেরা সৌম্য সরকার। কিন্তু, কেমার রোচের করা ইনিংসের প্রথম ওভারের তৃতীয় বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে শূন্য হাতে সাজঘরে ফেরেন তিনি (১/১)। ব্যক্তিগত ৩ রানে দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ দিয়েও জীবন পান ইমরুল কায়েস। ব্যক্তিগত ১৬ রানে নো-বলের কল্যানে আবারো বেঁচে যান ইমরুল। তবে, মধ্যাহ্ন বিরতির তিন-চার মিনিট আগে বিদায় নেন ওপেনার ইমরুল কায়েস (৪৪)। ওয়ারিকানের বলে শর্ট লেগে থাকা অ্যামব্রিসের তালুবন্দি হন তিনি (১০৫/২)। তার আগে মুমিনুলের সঙ্গে স্কোরবোর্ডে ১০৪ রান যোগ করেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।
মধ্যাহ্ন বিরতির পর মোহাম্মদ মিথুনকে সঙ্গে করে দ্বিতীয় সেশনের এক ঘণ্টা বেশ ভালোভাবেই পার করেন মুমিনুল। জুটি গড়েন ৪৮ রানের। তবে, পানি পানের বিরতির পর দেবেন্দ্র বিশুর বল অযথাই তুলে মারতে গিয়ে ব্যক্তিগত ২০ রানে আউট হন মিথুন (১৫৩/৩)। দ্বিতীয় সেশন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ২১৬ রান।
শেষ সেশনে ব্যাটিংয়ে নেমে বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি মুমিনুল হক। দলীয় ২২২ রানে শেনন গ্যাব্রিয়েলের বলে শেন ডরউইচের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান (২২২/৪)। ফেরার আগে ১৬৭ বলে ১০ চার ও ১ ছক্কায় ১২০ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। চট্টগ্রামের মাটিতে মুমিনুল এর আগে পাঁচটি সেঞ্চুরি করেছিলেন, ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৮১ রানের ইনিংসটিও সেখানেই। এবার করলেন এই মাঠে ষষ্ঠ সেঞ্চুরি, ক্যারিয়ারে দেখা পেলেন অষ্টম সেঞ্চুরির।
মুমিনুলের পর সাজঘরের পথে হাঁটেন মুশফিকুর রহিম (২২৬/৫)। ৩ বলে ১টি বাউন্ডারিতে ৪ রান নিয়ে গ্যাব্রিয়েলের বলে এলবির শিকার হয়ে ফেরেন বাংলাদেশি এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। দলীয় ২৩০ রানে গ্যাব্রিয়েলের বলেই বোল্ড হয়ে ব্যক্তিগত ৩ রানে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ (২৩০/৬)। এরপর মিরাজকে সঙ্গী হিসেবে পান সাকিব। তবে দলের রান যখন ২৩৫, ঠিক তখনই গ্যাব্রিয়েলের বলে বোল্ড হয়ে ব্যক্তিগত ৩৪ রানে ফেরেন সাকিব (২৩৫/৭)। আর তাতেই বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ।
এরপর অভিষিক্ত নাঈম হাসানকে সঙ্গী করে এগুতে থাকলেও দলীয় ২৫৯ রানে ব্যক্তিগত ২২ রান করে বোল্ড হয়ে ফেরেন মেহেদী হাসান মিরাজ (২৫৯/৮)। তবে, লেজের ঝাপটা দেখিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। দিনের শেষ দিকে নাঈম-তাইজুল জুটিতে স্কোরবোর্ডে যোগ হয় ৫৬ রান। তাতেই ২ উইকেট হাতে রেখে ৩১৫ রানে প্রথম দিন শেষ করে টাইগাররা।
এর আগে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ইনজুরি থেকে দীর্ঘদিন পর ফেরা অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। এই ম্যাচের মধ্যদিয়ে অভিষেক হয় নাঈম হাসানের। ৯৩তম বাংলাদেশি টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে এই ম্যাচে অভিষেক হয় নাঈম হাসানের। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের পর এই সিরিজ থেকে বাদ পড়েছেন খালেদ আহমেদ, আরিফুল হক এবং লিটন দাস। তাদের জায়গায় এসেছেন নাঈম হাসান, সৌম্য সরকার এবং সাকিব আল হাসান।
টেস্ট র্যাংকিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আট নম্বরে আর বাংলাদেশ নয় নম্বরে। এর আগে সাতটি সিরিজে মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ-উইন্ডিজ। ১০টিতেই জয় পায় ক্যারিবীয়ানরা। দুটি ম্যাচে জয় পায় টাইগাররা। বাকি দুটি ম্যাচ ড্র হয়। সবশেষ ক্যারিবীয় সফরে গিয়ে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে বাংলাদেশ। সবশেষ পাঁচ টেস্টের চারটিতেই হেরেছে মুশফিক-ইমরুল-মিরাজরা। আর নিজেদের খেলা সবশেষ পাঁচ ম্যাচের তিনটিতে হেরেছে উইন্ডিজ।
চট্টগ্রাম থেকে ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করে গাজী টিভি। এছাড়া, ম্যাচটি সরাসরি দেখা যায় র্যাবিটহোলবিডিতে।
বাংলাদেশ একাদশ: সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), ইমরুল কায়েস, সৌম্য সরকার, মুমিনুল হক, মাহমুদউল্লাহ, মুশফিকুর রহিম, মোহাম্মদ মিঠুন, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান এবং নাঈম হাসান।
উইন্ডিজ একাদশ: ক্রেইগ ব্রাথওয়েইট (অধিনায়ক), কিয়েরন পাওয়েল, শাই হোপ, শিমরন হেটমেয়ার, সুনীল অ্যামব্রিস, রোস্টন চেজ, শেন ডরউইচ, দেবেন্দ্র বিশু, কেমার রোচ, জোমেল ওয়ারিকান এবং শ্যানন গ্যাব্রিয়েল।
ছবি: শ্যামল নন্দী
সারাবাংলা/এসএন