শ্যাপেকোয়েন্স ট্রাজেডির দুই বছর
২৮ নভেম্বর ২০১৮ ১৫:৪৭
সারাবাংলা ডেস্ক ।।
দুই বছর আগের শ্যাপেকোয়েন্সের সেই দুর্ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছিল পুরো বিশ্বকেই। বিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন একঝাঁক ফুটবলার, ফুটবল বিশ্বে নেমে এসেছিল শোকের ছায়া। আজ (২৮ নভেম্বর) সেই দূর্ঘটনার দুই বছর।
২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর ব্রাজিলের ফুটবল দল শ্যাপেকোয়েন্সের ফুটবলারসহ ৭৭ আরোহী নিয়ে বলিভিয়ার সান্তা ক্রুজ থেকে কলম্বিয়ার মেডেলিনে যাওয়ার পথে বিধ্বস্ত হয় লামিয়া এয়ারলাইন্সের বিমান (লামিয়া ফ্লাইট ২৯৩৩)। যেখানে নিহত হন ৭১ জন।
দক্ষিণ আমেরিকার দ্বিতীয় শীর্ষ ক্লাব টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলতেই সেদিন কলম্বিয়া যাচ্ছিল শ্যাপেকোয়েন্স। ক্লাবটির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ম্যাচ হতো সেই ম্যাচটি। ফাইনালের দুই লেগের প্রথম লেগ খেলতেই কলম্বিয়ার পথে রওনা হয়েছিল দলটি। কিন্তু বিমান দুর্ঘটনার কারণে ইতিহাসটা আর লেখা হয়নি। এরপর ফিরতি লেগে ব্রাজিলের দলটির প্রতি সম্মান দেখিয়ে কলম্বিয়ার ক্লাবটি নিজেদের ম্যাচ ছেড়ে দিয়ে শ্যাপেকোয়েন্সকে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করে কলম্বিয়ার দলটি।
দুর্ঘটনায় স্তব্ধ হয়ে পড়েছিল ব্রাজিলসহ সারাবিশ্ব। খেলার দায়িত্বে থাকা ব্রাজিলের ২০ জন সাংবাদিকও সেই দুর্ঘটনায় মারা যান। তবে দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফিরেছিলেন শ্যাপেকোয়েন্স ক্লাবের দুই ডিফেন্ডার অ্যালান রাচেল, হেইলো নেটো এবং গোলরক্ষক জ্যাকসন ফোলম্যান ফিরেছিলেন। এরপর এই দুর্ঘটনায় ব্রাজিলের ফুটবল ফেডারেশনে সাতদিন ও তিনদিনের শোক ঘোষণা করা হয়।
দুর্ঘটনার পর বলিভিয়া, ব্রাজিল এবং কলম্বিয়ার কয়েকজনকে বিমান দুর্ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। তদন্তের পর চলতি বছরেই জানা যায়, জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ার কারণেই সেই দুর্ঘটনা হয়েছিল। এয়ারলাইন্সটির লাইসেন্স বাতিল করা হয়। সেই সঙ্গে নিহতদের প্রতি পরিবারকে ১ লাখ ৫৩ হাজার ইউএস ডলার করে সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দেয় বলিভিয়া সরকার।
লামিয়া এয়ারলাইন্সের বিমানটি (লামিয়া ফ্লাইট ২৯৩৩) লাতিন আমেরিকার ফুটবল ক্লাবের দায়িত্বে ছিল। বলিভিয়া থেকে বিমানটি যাত্রা শুরু করে কলম্বিয়ার মেডিন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরী অবতরণ করার সময় বিমান বন্দরের খুব কাছে একটি পাহাড়ে বিধ্বস্ত হয়েছিল। তবে অল্প কিছু জ্বালানি থাকলেই হয়তো সেই দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেতে পারতো বিমানটি।
ব্রাজিলের দক্ষিণের শহর শ্যাপেকোর এই ক্লাবটির (শ্যাপেকোয়েন্স) প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ১৯৭৩ সালে। সাফল্য পেতেও লেগেছিল কয়েক দশক। ২০০৯ সালেও ক্লাবটির নাম ব্রাজিলের খুব কম মানুষই জানতো। ক্লাবটি খেলতো ব্রাজিলের চতুর্থ বিভাগে। তবে ২০১৩ সালের পর থেকেই নিজেদেরকে চেনাতে শুরু করেছিল এই ক্লাবটি। ২০১৪ সালে ব্রাজিলের শীর্ষ লিগ সিরি আ লীগে উত্তীর্ণ হয় শ্যাপেকোয়েন্স। এরপর ২০১৬ সালের মধ্যেই ব্রাজিল ও দক্ষিণ আমেরিকার অন্যতম শক্তিধর ক্লাব হিসাবে বিবেচিত হয়।
সারাবাংলা/এসএন