গেইলকে টপকে গেছেন মুশফিক, অপেক্ষায় তামিম
১০ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৪:২৮
।। স্পোর্টস ডেস্ক ।।
সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। এবার তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ক্যারিবীয়ানদের উড়িয়ে দিয়ে ১-০ তে লিড নিয়েছে টাইগাররা। পরিসংখ্যানে মুখোমুখি লড়াইয়ে উইন্ডিজরা এগিয়ে থাকলেও এই সিরিজে ফেভারিট বাংলাদেশ। টেস্টের পর নিজেদের মাটিতে ক্রমেই শক্তিশালী হয়ে ওঠা বাংলাদেশ এবার তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজটিও বগলদাবা করতে চায়।
প্রথম ম্যাচে জয়ের আনন্দের মাঝে একটি জিনিস দৃষ্টির অগোচরে চলে গিয়েছিল। ব্যাপারটি আড়ালে চলে গেলেও অনেকেই হয়তো ধরেও ফেলেছিলেন। প্রথম ম্যাচে ৭০ বলে ৫টি বাউন্ডারিতে অপরাজিত ৫৫ রানের ইনিংস খেলেন টাইগারদের রানমেশিন মুশফিকুর রহিম। সেই ইনিংসের সুবাদে মুশফিক টপকে গেছেন ক্যারিবীয়ান তারকা ওপেনার ক্রিস গেইলকে।
দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে সর্বোচ্চ রান স্কোরার ছিলেন গেইল। যিনি এই সিরিজে উইন্ডিজ দলে নেই। ক্যারিবীয়ান এই হার্ডহিটার ওপেনার ২১ ম্যাচে করেছেন ৬৬১ রান। সেটি পেরিয়ে গেছেন মুশফিক। দুই দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৭০ রান এখন মুশফিকের নামের পাশে, তাও আবার গেইলের থেকে এক ম্যাচ কম খেলে। উইন্ডিজদের বিপক্ষে ২০ ম্যাচে পাঁচটি ফিফটিতে ৪১.৮৭ গড়ে মুশফিক এখন সর্বোচ্চ রান স্কোরারের ভূমিকায়, গেইলের গড় ৩৪.৭৮।
এবার তামিম ইকবালের সামনে সুযোগ থাকছে গেইলকে টপকে যাওয়ার। দেশসেরা এই ওপেনার ২০ ম্যাচে ৩৫.২৭ গড়ে করেছেন ৬৩৫ রান। এই তালিকায় আপাতত তিনে রয়েছেন তামিম। মারলন স্যামুয়েলস ৫৫৮ রান করে আছেন চার নম্বরে। পাঁচে থাকা সাকিব ১৩ ম্যাচে করেছেন ৪৪২ রান। আর ছয়ে থাকা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১৫ ম্যাচে করেছেন ৪১৭ রান।
দুই দলের মুখোমুখি দেখায় সর্বোচ্চ দুইবার করে তিন অঙ্কের ঘরে যেতে পেরেছেন বাংলাদেশের ওপেনার এনামুল হক বিজয় এবং তামিম ইকবাল। দুই দলের আর কেউ দুবার সেঞ্চুরি পাননি। এবারের স্কোয়াডে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজের শিমরন হেটমেয়ার একটি সেঞ্চুরি করেছেন। সবথেকে বেশিবার ফিফটি পেয়েছেন সাকিব, তামিম, স্যামুয়েলস আর গেইল। তাদের দলে যোগ দিয়েছেন মুশফিক। প্রত্যেকেই পেয়েছেন পাঁচটি করে ফিফটি। স্যামুয়েলস থাকলেও এই সিরিজে নেই গেইল। চারবার করে ফিফটি করেছেন সাবেক তারকা শিবনারায়ন চন্দরপল, টাইগারদের বর্তমান তারকা মাহমুদউল্লাহ।
দুই দলের মুখোমুখি সিরিজে সর্বোচ্চ ২৮৭ রান তামিমের দখলে। চলতি বছর তিন ম্যাচের সিরিজে তামিম দুটি সেঞ্চুরি আর একটি ফিফটিতে ১৪৩.৫০ গড়ে করেন ২৮৭ রান। এই সিরিজে না থাকা দিনেশ রামদিন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৭৭ রান করেছিলেন ২০১৪ সালের সিরিজে। ২০৭ রান নিয়ে তিনে আছেন শিমরন হেটমেয়ার আর ২০৪ রান নিয়ে চারে আছেন মুশফিক।
১৯৯৯ সালের পর থেকে বাংলাদেশ মোট ৩২ ওয়ানডে ম্যাচে উইন্ডিজের মুখোমুখি হলো। যেখানে জয়ের পাল্লা ভারী ক্যারিবীয়ানদের দিকে। ২০ ম্যাচে জিতেছিল ভিভিয়ান রিচার্ডস, কোর্টনি ওয়ালস, কার্টলি অ্যামব্রোস, গ্যারি সোবার্স, ক্লাইভ লয়েড, গর্ডন গ্রিনিজদের উত্তরসূরিরা। বাংলাদেশ জিতেছে ১০টি ম্যাচে। বাকি দুটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। এবার টাইগারদের সামনে জয়ের পাল্লাটা আরেকটু ভারী করার পালা। সবশেষ তিন ম্যাচের সিরিজে ক্যারিবীয়ানদের ঘরের মাঠে সিরিজ জিতে আসে বাংলাদেশ (২-১)। তিনটি ম্যাচেই জেতার সম্ভাবনা জেগেছিল। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ৪৮ রানে হারিয়ে দেয় ক্যারিবীয়ানদের। পরের ম্যাচে তীরে এসে তরী ডুবলে হারতে হয় মাত্র ৩ রানের ব্যবধানে। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে মাশরাফির দল জেতে ১৮ রানের ব্যবধানে।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৯ ডিসেম্বর সিরিজের প্রথম ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হয়। একই মাঠে ১১ ডিসেম্বর হবে দ্বিতীয় ওয়ানডে। আর ১৪ ডিসেম্বর সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি হবে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। ওয়ানডে সিরিজের সবকটি ম্যাচই দিবা-রাত্রির।
সারাবাংলা/এমআরপি