রোমাঞ্চকর ম্যাচ জিতে সেমিতে ব্রাদার্স
১১ ডিসেম্বর ২০১৮ ২০:১৯
।। স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকাঃ এমন ম্যাচ ঠিক কবে হয়েছে দেশের মাটিতে? দুই লাল কার্ড আর ছয় গোলের রোমাঞ্চকর ম্যাচ। মুহূর্মুহূ আক্রমণ-প্রতি আক্রমণের পসরা। এক দল এগিয়ে গেলে আরেক দলের দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন। যেন তুলির আচরে ফুটবল ঈশ্বর সাজিয়ে রেখেছেন সকল নাটকীয়তা। এতটা ভেবেছিল কেউ! এ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন আরামবাগ আর সি গ্রুপের রানার্স আপ ব্রাদার্স ইউনিয়ন মিলে যেন দুর্দান্ত গোল আর পাসের ফুটবল নৈপুণ্য উপহার দিলো সবাইকে।
যেন পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচিত্রের মঞ্চায়ন হলো বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে। নির্ধারিত ম্যাচ শেষে অতিরিক্ত সময়েও যেন রোমাঞ্চের শেষ নেই। সেই রোমাঞ্চ ছড়িয়েছে পেনাল্টি শু্যটআউটেও। শেষ হাসিটা অবশ্য হেসেছে ব্রাদার্স ইউনিয়ন।
এখানেও ৩-৩ এ সমতা। মীমাংসা পেতে ম্যাচ গড়িয়েছে শু্যটআউটের অতিরিক্ত শটেও। নির্ধারিত ম্যাচে ৩-৩ থাকা ম্যাচ পেনাল্টি শু্যটআউটে ৪-৩ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে ব্রাদার্স ইউনিয়ন।
ম্যাচে শুরু থেকেই যেন দু’দলই আক্রমাণত্মক ফুটবল খেলতে থাকে। ১২ মিনিটে এগিয়ে যায় আরামবাগ। পল এমিলের পাস থেকে সাইড ভলিতে বল জালে জড়ান রবিউল। এবার ব্রাদার্সের সমতার পালা। ৪৩ মিনিটে বাম প্রান্ত থেকে লিমার গোলে ব্যবধান ১-১ করে ফেলে সৈয়দ নাঈমউদ্দীনের শিষ্যরা। প্রথমার্ধ্ব ড্র থেকে দ্বিতীয়ার্ধেও এগিয়ে যায় আরামবাগ। ৫৩ মিনিটে পল এমিলের চতুরতার দারুণ পাস থেকে আনমার্কে থাকা রবিউল বল পেয়ে বাঁ পায়ের জোরালো শটে জাল কাপিয়ে ব্যবধান বাড়ান এই দেশি ফুটবলার। এগিয়ে যাওয়া যেন ব্রাদার্স দেখতে সহ্য করতে পারছিলো না। ৬৫ মিনিটে শফিকুল ইসলাম শাফির ক্রস থেকে ভলিতে দুর্দান্ত গোল করে ব্রাদার্সকে সমতায় ফেরান মান্নাফ রাব্বি।
৭৮ মিনিটে এবার ব্রাদার্স ইউনিয়নের চমক। ডি বক্সের ভেতর থেকে দুর্দান্ত ভলিতে বল জালে জড়ান জ্যাক ড্যানিয়েলস ম্যাজা আগুলার। জার্সি খুলে উদযাপন করলেন। তাতেই যেন বিপদটা ডেকে আনলেন এই পানামার ফুটবলার। দ্বিতীয় হলুদ কার্ডে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হলো মাথা নিচু করেই। ১০ জনের দলে পরিণত হয় ব্রাদার্স। সেই সুযোগটা কাজেও লাগায় ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। ৮৫ মিনিটে রবিউলের কর্নার থেকে আরামবাগকে সমতায় ফেরান পল এমিল। জটলার মধ্যে উড়ন্ত পাস সিক্স ইয়ার্ডের ভেতর থেকে হেডে বলকে ঠিকানায় পাঠান ক্যামরুনের ফুটবলার।
নির্ধারিত সময়ে ৩-৩ এর ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। ৯৭ মিনিটে এবারও এমিলের ড্রিবলিং নৈপুণ্য। দুজনকে দারুণভাবে কাটিয়ে বল নিয়ে যান গোলকিপারের সামনে। সেখানে থেকে সহজ সুযোগ নষ্ট করেন তিনি। ১০১ মিনিটে আরিফুর রহমানের পাস থেকে সানওয়ার জামান নিপুর সাইড ভলি আটকে দেন ব্রাদার্সের গোলরক্ষক সুজন। এর মাঝে নিপু লাল কার্ড দেখলে আরামবাগও দশজনের দলে পরিণত হয়। বিধাতাও হয়তো চাচ্ছিলেন ম্যাচ পেনাল্টি শ্যুট আউটে পৌঁছাক।
পেনাল্টি শ্যুট আউটে ৪-৩ (৩-৩) ব্যবধানে হারিয়ে সেমিতে উঠে ব্রাদার্স ইউনিয়ন। গতবারের চ্যাম্পিয়নরা তাই বিদায় নিতে হয় শেষ আট থেকেই। পেনাল্টিতে কয়েকটি শট আটকে দিয়ে ম্যাচ সেরা ব্রাদার্সের গোলরক্ষক সুজন।
আগামীকাল ‘বি’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন চট্টগ্রাম আবাহনীর প্রতিপক্ষ ‘ডি’ গ্রুপ রানার্সআপ শেষ রাসেল। ১৩ ডিসেম্বর ‘সি’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনী খেলবে ‘এ’ গ্রুপ রানার্সআপ সাইফ স্পোর্টিংয়ের বিপক্ষে। ১৪ তারিখে শেষ আটের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে ‘ডি’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস ও ‘বি’ গ্রুপ রানার্সআপ রহমতগঞ্জ।
সারাবাংলা/জেএইচ