Sunday 11 May 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দেশি কোচে ভরসাহীন, বিদেশি কোচের সন্ধানে কাবাডি


১১ ডিসেম্বর ২০১৮ ২১:২২ | আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৮ ২১:২৩

।। স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকাঃ ইন্দোনেশিয়ায় গেল এশিয়ান গেমসে পদকের আশা নিয়ে যাওয়া দেশের জাতীয় কাবাডি পুরুষ ও নারী দল ফিরেছে ব্যর্থতার চাদর গায়ে চাপিয়ে। সামনে কাঠমুণ্ডুতে এসএ গেমসকে সামনে রেখে কোচ বদলের চিন্তা করছে কাবাডি ফেডারেশন। তবে, এবার কোনও স্থানীয় কোচের উপর ভরসা রাখতে চায় না ফেডারেশন। বিদেশি কোচের সন্ধানে বেরিয়েছে তারা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, এই বিদেশী কোচের তালিকায় রয়েছেন ভারতীয় এবং ইরানি কোচরা। সূত্র মতে, প্রথমে ইরানি কোচকে বিবেচনায় রাখা হলেও শেষ পর্যন্ত ভারতীয় কোচই দায়িত্ব পেতে পারেন। তা পুরুষ ও মহিলা উভয় জাতীয় দলের জন্যই।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় কোচরাই এর আগে বাংলাদেশকে এশিয়ান গেমসে তিনটি রৌপ্য এবং পাঁচটি ব্রোঞ্জ উপহার দিলেও সেটি অতীত। সর্বশেষ অতীত বলছে, এশিয়ান গেমসের ব্যর্থতার পরপরই স্থানীয় কোচের উপরে ভরসা উঠে গেছে ফেডারেশনের। তাই বিদেশি কোচের সন্ধানে নেমেছে কাবাডি। এর আগেও দু দু’বার বিদেশি (ভারতীয়) কোচ নিয়োগ দেয়া হলেও তাদের পক্ষে ব্রোঞ্জ পদকের বেশি এনে দেয়া সম্ভব হয়নি।

২০১৪ সালের ইনচন এশিয়ান গেমস পর্যন্ত পদক তালিকায় বাংলাদেশের নিয়মিত উপস্থিতি থাকত কাবাডির কল্যাণেই। অবশ্য ২০১০ এবং ২০১৪তে ক্রিকেট থেকে আসে স্বর্ণ রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ। কিন্তু এবার জাকার্তা-পালেম্বাং এশিয়াড থেকে একেবারেই খালি হাতে ফেরা বাংলাদেশ দলের। আশা ছিল পুরুষ এবং মহিলা কাবাডিতেই। অথচ মহিলা কাবাডি দল তাদের ব্রোঞ্জ ধরে রাখতে পারেনি। আর পুরুষ দল ব্যর্থ ন্যূনতম ব্রোঞ্জ পদক পুনরুদ্ধার করতে। পুরুষ দলের কোচ ছিলেন সুবিমল দাস এবং মহিলা বিভাগে আবদুল জলিল।

বিজ্ঞাপন

যেহেতু এই দুই দেশী কোচের অধীনে এশিয়াডে পদক জয়ে ব্যর্থতা তাই পুরুষ এবং মহিলা জাতীয় দলের জন্য বিদেশী কোচ আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হয়েছে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) সাথে। বিওএ খরচ বহন করলে কাবাডি ফেডারেশনের পক্ষে বিদেশী কোচ রাখা সম্ভব। আগামী আগস্ট সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে পারে পরবর্তী এসএ গেমস। এই জন্যই বিদেশী কোচ আনার চেষ্টা। বিওএ সূত্রেও নিশ্চিত হওয়া গেছে তা।

১৯৮৬ সালের সিউল এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশের প্রথম পদকের সাক্ষাৎ পাওয়া। বক্সার মোশাররফ হোসেন এনে দেন ব্রোঞ্জ পদক। এরপর ১৯৯০ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত কাবাডি খেলোয়াড়েরাই পদক এনে দেন দেশকে। পুরুষ কাবাডি দল ১৯৯০, ১৯৯৪ এবং ২০০২ সালের এশিয়ান গেমসে রৌপ্য এবং ১৯৯৮ এবং ২০০৬ সালে ব্রোঞ্জ পদক জয় করে। মহিলা দল ২০১০ এবং ২০১৪তে গলায় তোলে ব্রোঞ্জ পদক। তা দেশী কোচের অধীনেই। অর্থাৎ কাবাডির আন্তর্জাতিক সাফল্যের পেছনে দেশী কোচরাই। মাঝে ১৯৯৩ সালের ঢাকা সাফ গেমস এবং ২০১৬-এর শিলং-গৌহাটি এসএ গেমসে পুরুষ কাবাডি দলের ব্রোঞ্জ জয় ভারতীয় কোচের অধীনে। গত এসএ গেমসের আগে মহিলা দলের জন্য ভারতীয় কোচ নিয়োগ দেয়া হলেও পরে তাকে বাদ দেয়া হয়। ফলে দেশী কোচ রৌপ্য পদক এনে দেন দেশকে। তাই এখন ফেডারেশনে বিদেশী কোচ খোঁজাকে ভালোভাবে দেখছেন না কাবাডি সংশ্লিষ্টরা।

তাদের মতে, কাবাডির যাবতীয় সাফল্যই তো দেশীরা এনে দিয়েছেন। তাহলে কেন বিদেশী কোচ আনার চেষ্টা। তাদের মতে জাকার্তা যাওয়ার আগে মহিলা দল ৩৬ মাস ছিল কোনো ধরনের ম্যাচের বাইরে। ২০১৬-এর গৌহাটি এসএ গেমসের পর ২০১৮ সালের আগস্টে জাকার্তায় গিয়ে খেলা মহিলা দলের। মাঝে কোনো ম্যাচ খেলেনি তারা। এই লম্বা খ্যাপই তাদের বাধ্য করেছে পদক হারাতে। জাকার্তায় মহিলা দল ইরান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং চায়নিজ তাইপের কাছে পরাজিত হয়। পুরুষ দল শ্রীলংকা এবং থাইল্যান্ডের বিপক্ষে জয় পেলেও ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে পরাজিত হয়ে ছিটকে পড়ে গ্রুপ পর্ব থেকেই। এই পুরুষ কাবাডি দল ২০১০-এর পর লম্বা সময় ছিল অবহেলিত।

ক্ষোভের সাথে দেশী এক কোচ বললেন, যেহেতু সর্বশেষ এশিয়ান গেমস বাংলাদেশ কাবাডিতে রেজাল্ট পায়নি তাই বিদেশী কোচ খুঁজতেই পারে ফেডারেশন। কিন্তু গোড়াতে তো হাত দিতে হবে। কেন ব্যর্থ হলো কাবাডির দুই দল। অবশ্য আরেকজনের মন্তব্য, ভারতই এখন কাবাডির মা-বাপ। খুব ভালো করছে ইরানও। সুতরাং এই দুই দেশ থেকে কোচ আনা যেতেই পারে।

সারাবাংলা/জেএইচ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর