‘অভিজ্ঞতার অভাব ও আত্মতুষ্টিতেই স্বপ্নভঙ্গ আরামবাগের’
১১ ডিসেম্বর ২০১৮ ২১:৩৪
।। স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকাঃ ঠিক পথেই এগিয়ে যাচ্ছিল আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ। স্বাধীনতা কাপে টানা দুইবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্নের পথে ছিল আর দুটি ম্যাচ। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে কোয়ার্টারে পা রাখা ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা যে ব্রাদার্স ইউনিয়নের কাছে হেরে বিদায় নিবে সেটা হয়তো মতিঝিল পাড়ার ফুটবল সমর্থকরা ভুলেও ভাবেনি। ভাবারও কথা কি?
গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে দেশের অন্যতম বড় দল সাইফ স্পোর্টিংকে ৩-১ ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়েছিল আরামবাগ। সেটাও গোছানো ফুটবল উপহার দিয়ে। তাই সমর্থকদেরও মনে আশা ছিল এবারও হয়তো অন্তত ফাইনালে যাওয়ার মতোই ফর্মে ছিল মারুফুল হক। তার কোচিংয়েই যে প্রতিষ্ঠার ৪০ বছর পর স্বাধীনতা কাপ জিতেছিল আরামবাগ।
এবার আর হলো না। ব্রাদার্স ইউনিয়নের কাছে পেনাল্টি শ্যুট আউটে ৪-৩ ব্যবধানে হেরে আরামবাগকে বিদায় নিতে হয়েছে শেষ আট থেকেই। এর জন্য অবশ্য খেলোয়াড়দের অভিজ্ঞতার অভাব আর আত্মতুষ্টিকে দুষছেন কোচ মারুফুল, ‘সাইফের মতো দলকে হারিয়ে খেলোয়াড়রা হয়তো আত্মতুষ্টিতে ভুগছিলো। আর এই ম্যাচে ব্রাদার্সকে ১০ জনের দল পেয়েও হারাতে পারিনি। এটা অভিজ্ঞতার অভাবেই।’
ম্যাচে শুরু থেকেই যেন দু’দলই আক্রমাণত্মক ফুটবল খেলতে থাকে। ১২ মিনিটে এগিয়ে যায় আরামবাগ। পল এমিলের পাস থেকে সাইড ভলিতে বল জালে জড়ান রবিউল। এবার ব্রাদার্সের সমতার পালা। ৪৩ মিনিটে বাম প্রান্ত থেকে লিমার গোলে ব্যবধান ১-১ করে ফেলে সৈয়দ নাঈমউদ্দীনের শিষ্যরা। প্রথমার্ধ্ব ড্র থেকে দ্বিতীয়ার্ধেও এগিয়ে যায় আরামবাগ। ৫৩ মিনিটে পল এমিলের চতুরতার দারুণ পাস থেকে আনমার্কে থাকা রবিউল বল পেয়ে বাঁ পায়ের জোরালো শটে জাল কাপিয়ে ব্যবধান বাড়ান এই দেশি ফুটবলার। এগিয়ে যাওয়া যেন ব্রাদার্স দেখতে সহ্য করতে পারছিলো না। ৬৫ মিনিটে শফিকুল ইসলাম শাফির ক্রস থেকে ভলিতে দুর্দান্ত গোল করে ব্রাদার্সকে সমতায় ফেরান মান্নাফ রাব্বি।
৭৮ মিনিটে এবার ব্রাদার্স ইউনিয়নের চমক। ডি বক্সের ভেতর থেকে দুর্দান্ত ভলিতে বল জালে জড়ান জ্যাক ড্যানিয়েলস ম্যাজা আগুলার। জার্সি খুলে উদযাপন করলেন। তাতেই যেন বিপদটা ডেকে আনলেন এই পানামার ফুটবলার। দ্বিতীয় হলুদ কার্ডে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হলো মাথা নিচু করেই। ১০ জনের দলে পরিণত হয় ব্রাদার্স। সেই সুযোগটা কাজেও লাগায় ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। ৮৫ মিনিটে রবিউলের কর্নার থেকে আরামবাগকে সমতায় ফেরান পল এমিল। জটলার মধ্যে উড়ন্ত পাস সিক্স ইয়ার্ডের ভেতর থেকে হেডে বলকে ঠিকানায় পাঠান ক্যামরুনের ফুটবলার।
নির্ধারিত সময়ে ৩-৩ এর ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। ৯৭ মিনিটে এবারও এমিলের ড্রিবলিং নৈপুণ্য। দুজনকে দারুণভাবে কাটিয়ে বল নিয়ে যান গোলকিপারের সামনে। সেখানে থেকে সহজ সুযোগ নষ্ট করেন তিনি। ১০১ মিনিটে আরিফুর রহমানের পাস থেকে সানওয়ার জামান নিপুর সাইড ভলি আটকে দেন ব্রাদার্সের গোলরক্ষক সুজন। এর মাঝে নিপু লাল কার্ড দেখলে আরামবাগও দশজনের দলে পরিণত হয়। বিধাতাও হয়তো চাচ্ছিলেন ম্যাচ পেনাল্টি শ্যুট আউটে পৌঁছাক।
পেনাল্টি শ্যুট আউটে ৪-৩ (৩-৩) ব্যবধানে হারিয়ে সেমিতে উঠে ব্রাদার্স ইউনিয়ন।
সারাবাংলা/জেএইচ