কালের গর্ভে হারিয়ে যাবেন না তো?
১৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ২২:০২
।।জাহিদ-ই-হাসান, স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকাঃ ‘মেঘ চাইতে না চাইতে বৃষ্টি’ মাত্র এক মাসের অনুশীলনে দেশকে সাফের শিরোপা উপহার দিয়েছে জুনিয়র ফুটবলাররা। তারপর উয়েফার টুর্নামেন্টেও এক ম্যাচ ছাড়া দুর্দান্ত পারফরমেন্স। থাইল্যান্ডের মতো দলের সঙ্গে জিততে জিততে ড্র। মালদ্বীপকে প্রায় ডজন গোলে ভাসানো মেহেদী-উচ্ছাসরা দেশে ফিরেছেন বুক উঁচিয়ে।
তাদের চোখে মুখে স্বপ্ন পেশাদার ফুটবলার হওয়ার। তারই পথে আছেন ফুটবলাররা। এখন স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষায় অংশ নিতে ছুটিতে নিজ নিজ বাসায়।
উয়েফার টুর্নামেন্টের পর কি আছে তাদের ভাগ্যে? কি ভাবছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)?
বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ অবশ্য আশার বুলিই ছড়ালেন, ‘বছরের শুরুর দিকে আমরা যে স্থায়ী একাডেমি করতে চলেছি সেখানেই বয়সভিত্তিক ফুটবলারদের দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণে রাখবো। পাইপলাইন শক্ত করতে একাডেমি প্রয়োজন।’
এর আগেও ২০১৫ সালে অ-১৬ দল সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। বাফুফে কর্মকর্তারা সেই দলকে দীর্ঘমেয়াদী অনুশীলন ও একাডেমিতে রাখার কথা বলেছিল। ফেডারেশন তাদের দেখাশোনা না করায় অনেকেই হারিয়ে গেছে। সেই দলের মধ্য থেকে মাত্র সাদউদ্দিন জাতীয় দলে খেলছেন। দুই একজন ক্লাব পর্যায়ে রয়েছেন।
দীর্ঘ তিন বছর পরে পুরুষ ফুটবল দল দেশের বাইরে থেকে ট্রফি আনল। ১৯৯৯ সালে কাঠমান্ডু সাফ গেমসের ফুটবল ট্রফির স্মৃতি টানলেন অনেকে। সাফ অ-১৫ দলের কোচ পারভেজ বাবু ১৯৯৯ সালের চূড়ান্ত স্কোয়াডে সুযোগ পাননি। তার কোচিংয়েই ১৯ বছর পর কাঠমান্ডু থেকে আরেকবার শিরোপা নিয়ে ফিরলো বাংলাদেশ। সেটা কোচ মাসুদ আনোয়ার পারভেজ বাবুর হাত ধরে। তিনি জানান, ‘এরা ভালো ফুটবল খেলে। দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণে রাখলো পেশাদার ফুটবলার হওয়ার পাশাপাশি দেশের জন্য অনেক শিরোপা আনতে সক্ষম হবে। সেই দিকে নজর দেয়া দরকার বাফুফের।’
কোচ ও খেলোয়াড় (২০০৩ সালে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য) হিসেবে সাফের ট্রফি জয়ের উজ্জ্বল রেকর্ড গড়া এই স্থানীয় কোচ জানান, ‘দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণ ছাড়া কোনও ফুটবলার পেশাদার হতে পারবে না। ক্যাম্প বা একাডেমিতে থাকলে তারা ফুটবলের মধ্যেই থাকবে। শিখবে প্রতিদিন। নিজেকে ঝালাই করবে। সঙ্গে দেশের জন্য কিছু করার চেষ্টা করবে।’
সাফ চ্যাম্পিয়নজয়ী এই ফুটবলাররা অন্তত চান না হারিয়ে যেতে। তারা চান পেশাদার ফুটবলার হতে। ফুটবলই তাদের ধ্যান-জ্ঞান। এটাকেই জীবন হিসেবে বেছে নিয়েছে। তাই চেয়ে আছেন বাফুফের উদ্যোগের উপর। এর আগে ২০১৫ সালের মতো ইতিহাসের অতল গহ্বরে হারিয়ে যেতে চান না তারা। হতে চান দেশের ফুটবলের উজ্জ্বল নক্ষত্র।
সারাবাংলা/জেএইচ