এবারও জয়ের নায়ক জিকো
২০ ডিসেম্বর ২০১৮ ২১:৫৭
।। স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকাঃ রহমতগঞ্জকে হারিয়ে কিংসকে সেমি ফাইনালে তুলেছিলেন তিনি। মানডের শটসহ তিনটি পেনাল্টি শট আটকে দিয়েছিলেন এই তরুণ গোলরক্ষক। এবার আরও বড় ম্যাচ। একদিকে যেমন প্রতিশোধ ছিলো তেমন ম্যাচজুড়ে ঝাঁঝালো উত্তেজনা। সেই উত্তেজনাকে হাতের মুঠোয় করে ম্যাচ বের করে নিয়ে এলেন তিনি। একটা শট সেভ দিয়ে নিজেই কাঁধে নিলেন শট নেয়ার ভার। সেই যুদ্ধে আবাহনীকে হারিয়ে জয়ের নায়ক আবারও তিনি।
তার নাম আনিসুর রহমান জিকো। কক্সবাজারের এই তুর্কী কিংসকে তুললেন স্বাধীনতা কাপের ফাইনালে। রোমাঞ্চকর পেনাল্টি শুট আউটে ঢাকা আবাহনীকে ৭-৬ ব্যবধানে হারানোয় তার ভূমিকা অনস্বীকার্য। ম্যাচজুড়েও দুর্দান্ত কিছু সেভ দিয়ে জয়ের নায়ক জিকো।
স্বাধীনতা কাপের সেমি ফাইনাল ম্যাচ। ফেডারেশন কাপে ফাইনালে ঢাকা আবাহনীর কাছে হেরেই এএফসির স্বপ্ন হারিয়ে যাওয়া ঘরোয়া ফুটবলের অন্যতম ও তারকাবহুল দল বসুন্ধরা কিংস ছিল প্রতিশোধের নেশায়। গোলবার সামলানোর দায়িত্বে কোয়ার্টার ফাইনালের নায়ক জিকো। জাতীয় দলের স্কোয়াডে থাকা এই গোলরক্ষক এবারও গ্লাভসকে রেকর্ডের সাক্ষী করলেন। টানা দ্বিতীয় ম্যাচেও ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার তালুবন্দী করলেন। ম্যাচটাকেও তালুবন্দী করেছেন আবাহনীর একটি শট ঠেকিয়ে। ডু আর ডাই শট নিয়ে গোল করে।
১-১ গোল ব্যবধান নির্ধারিত সময়েও যখন কোন মীমাংসা নেই তখন ম্যাচ গড়ায় পেনাল্টি শুট আউটে। রোমাঞ্চ ছড়ানো সেই ম্যাচ একটা পর্যায়ে ৬-৬। সাডেন ডেথে ম্যাচ ঝুলছে। ঢাকা আবাহনীর ইমতিয়াজ সুলতান জিতু শট নিতে এলেন। সেই শট বাঁজপাখির মতো আটকে দিলেন বিশ্বমানের মতো। এবার কিংসের পালা। না কোনও ডিফেন্ডার-স্টাইকার বা মিডফিল্ডার নন নিজেই সাহস করে বল নিয়ে ডি বক্সের ভেতরে। ডু আর ডাই শট। সামনে ঢাকা আবাহনীর গোলরক্ষক শহিদুল আলম সোহেল। যিনি বিশ্বকাপার কলিনদ্রেসের শট আটকে দিয়েছেন দুর্দান্তভাবে। তাতে কি? নিখুঁত শটে বল জালে জড়িয়ে আনন্দে ভাসলেন। ভাসালেন বসুন্ধরা কিংসের সমর্থকদের।
কোয়ার্টার ফাইনালের পর সেমি ফাইনালেও জিকোর ঝলক অব্যাহত রইলো। তাতে টানা দ্বিতীয় ঘরোয়া জায়ান্ট টুর্নামেন্টের ফাইনালে জিকোর দল কিংস। তার বিশ্বস্ত হাতেই শোভা পেল ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কারও।
এমন জয়ের পরেও যেন বিনীত জিকো, ‘এ জয়টা ফেডারেশন কাপে হলে খুবই ভালো হতো। এখনও খুশি। তবে সেই ম্যাচটা আবাহনীকে হারাতে পারলে আমরা এএফসি খেলতাম। সামনের ম্যাচেও এই ধারা অব্যাহত রাখতে চাই।’
জাতীয় ফুটবল দলের স্কোয়াডে থাকলেও এখনও লাল-সবুজ জার্সিতে অভিষেক হয়নি জিকোর। তবে, এমন পারফরমেন্স করেই পাকাপোক্ত করতে চান জাতীয় দল। যেভাবে নিজেকে ঝালিয়ে নিচ্ছেন তিনি জানালেন সারাবাংলাকে, ‘অনুশীলনে আমাদের কোচসহ খেলোয়াড়দের শট আটকে দেই। বিশ্বাস থাকে। তাছাড়া নিজেও অনেকবার পেনাল্টি শট নিয়েছি। তাতে সফলও হয়েছি। সেই অভিজ্ঞতা আর সাহস থেকেই আজকে শট নিয়েছি। সামনে এভাবে পারফর্ম করতে চাই।’
এ জয়ে টানা দ্বিতীয় টুর্নামেন্টের ফাইনালে অস্কার ব্রুজনের শিষ্যরা। সেখানে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে হারিয়ে সঙ্গীর অপেক্ষায় বসে আছে শেখ রাসেল। ২৪ ডিসেম্বর বিকালে একই ভেন্যুতে কিংসের মুখোমুখি হবে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র।
সারাবাংলা/জেএইচ
আনিসুর রহমান জিকো বসুন্ধরা কিংস শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র স্বাধীনতা কাপ