বিদেশিদের ভিড়ে দেশিদের জয়জয়কার
২৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ২০:৪৬
।।স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকাঃ বিজয়ের মাসে স্বাধীনতা কাপে এবার বিদেশিরা খেলছে। কম সমালোচনা হয় নি দেশের ফুটবলে। গতবার এমন সমালোচনার মুখে বিদেশি দরজা বন্ধ হলেও এবার ক্লাবপর্যায়ের চাপে স্বাধীনতা কাপে বিদেশিদের সুযোগ দেয়া হয়েছে। জর্জ গোটর-ড্যানিয়েল কলিনদ্রেসের মতো উঁচু মানের ফুটবলাররা দেশের মাটিতে দাঁপাবে এটাই অনুমেয়। তবে, স্বাধীনতা কাপে দেশি ফুটবলাররা বুঝিয়ে দিয়েছে তারাও ‘সেরা’ হতে প্রতিজ্ঞবদ্ধ।
চলমান টুর্নামেন্টে ম্যাচগুলো খোলা চোখে বিশ্লেষণ করলেই পাওয়া যায় বিদেশিদের ভিড়ে দেশিদের দাপটের চিত্র।
এবার ঘরোয়া ফুটবলে এএফসির শর্তে ক্লাবগুলো অন্ততপক্ষে চারজন বিদেশি ফুটবলার দলে ভেড়িয়েছে। ঘরোয়া ফুটবলের সর্বোচ্চ আসরের ১৩ টি ক্লাব ২১ দেশের মোট ৫১ বিদেশি ফুটবলার নিয়ে এসেছে। নোফেল স্পোর্টি ছাড়া প্রত্যেক দলের চারজন করে বিদেশি ফুটবলার। বেশিরভাগ ক্লাবই স্টাইকার ও মিডফিল্ডার পজিশনে বেশি বিদেশি ফুটবলার নিয়েছে। নামকরা ফুটবলাররা সেটার প্রতিদান দিচ্ছে কি দিচ্ছে না সেটা স্বাধীনতা কাপের পুরো চিত্র দেখলেই স্পষ্ট বোঝা যায়।
বিশ্বকাপ খেলুড়ে দেশ ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, স্পেন, কলম্বিয়া, কোস্টারিকা, আইভরিকোস্ট, রাশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, পানামা, ক্যামেরুনের মতো দেশ থেকে ক্লাবগুলো আমদানি করেছে বিদেশি ফুটবলার। তাদেরই দাপট থাকা অনুমেয়। তবে চলমান স্বাধীনতা কাপে যেন স্থানীয় ফুটবলারদেরই দাপট পরিলক্ষিত।
তবে, স্বাধীনতা কাপের ফাইনাল ম্যাচ এখনও বাকী। শেখ রাসেলের বিপক্ষে লড়বে নবাগত বসুন্ধরা কিংস। বুধবারই পর্দা নামবে টুর্নামেন্টের।
সেমি ফাইনাল পর্যন্ত ২১টা ম্যাচ মাঠে গড়িয়েছে টুর্নামেন্টের। বেশিরভাগ ম্যাচেই যেন স্থানীয় ফুটবলারদের জয়জয়কার। উঁচুমানের বিদেশি ফুটবলারদের ভিড়ে দেশিরাই ম্যাচ নির্ধারণ করেছে।
স্বাধীনতা কাপে এই ২১ ম্যাচের চিত্র লক্ষ্য করলে দেখা যায়, ২১ ম্যাচে মোট গোল হয়েছে ৪১টি। তার মধ্যে ১৭ গোলই এসেছে স্থানীয় ফুটবলারের কাছ থেকে। তার মধ্যে নক আউট পর্বের রোমাঞ্চকর ম্যাচগুলোতে দেশিদের গোল ৬টি। তিন গোল করে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় আছে আরামবাগের উদীয়মান ফুটবলার ও অধিনায়ক রবিউল হাসান। দুটি করে গোল পেয়েছেন সাইফ স্পোর্টিংয়ের তারকা ফুটবলার জামাল ভুঁইয়া ও ঢাকা আবাহনীর ফয়সাল আহমেদ। একটি করে গোল পেয়েছেন আরামবাগের আরিফ, রহমগঞ্জের ফয়সাল, রাকিব ও জামাল, নোফেলে আশরাফুল, ব্রাদার্স ইউনিয়নের রাব্বি, নোফেলের রোমান, বসুন্ধরার মতিন ও নাসির এবং মুক্তিযোদ্ধার সুজন বিশ্বাস।
চার গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতার শীর্ষে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নেয়া আরামবাগের পল এমিল।
তাছাড়া একক নৈপুণ্যে দুটি ম্যাচ জিতিয়েছেন কিংসের গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো। গোলরক্ষক হয়েও সবাইকে ছাপিয়ে যে টানা দুই ম্যাচে সেরার স্বীকৃতি পাওয়া যায় সেই উদাহরণই সৃষ্টি করেছেন কক্সবাজারের এই তরুণ।
‘দেশি ফুটবলাররা গোল পায় না’ এমন তথাকথিত সমালোচনার জবাব হয়তো দেশিরাই দিচ্ছেন প্রতি ম্যাচে। দেশের ফুটবলের মান বেড়েছে অনিবার্যভাবে। সেখানে দেশিরাই দাপট দেখিয়েছে নিশ্চিতভাবে। যেটা হচ্ছে না সেটা হলো এদের নিয়মিতকরণ ও সুযোগ। সেটা নিশ্চিত করার দায়িত্ব বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন ও ক্লাবগুলোর।
সারাবাংলা/জেএইচ