সহজ টার্গেটেও হারলো ঢাকা
১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৭:৫০
।। স্পোর্টস ডেস্ক ।।
আরো একটি হার। তাতে বিপিএলের ষষ্ঠ আসরের প্লে অফে যাওয়ার পথটা আরো কঠিন হয়ে গেল ঢাকা ডায়নামাইটসের। তবে এই ম্যাচে হারের আক্ষেপটা হয়তো বেশিই পোড়াবে সাকিবদের। কারণ এই ম্যাচে হারতে হয়েছে মাত্র ১ রানে।
শুক্রবার (১ ফেব্রুয়ারি) শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আসরের ৩৯তম ম্যাচে মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ঢাকার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। আগে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং ধ্বসে পড়ে ১৯.৫ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১২৭ রান তোলে কুমিল্লা। জবাবে জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ওভারে ৯ উইকেট ১২৬ রান তোলে ঢাকা। তাতেই ভিক্টোরিয়ান্সের কাছে মাত্র ১ রানে হারলো সাকিবের দল।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য ঢাকার দরকার ছিল ১৩ রান, হাতে ছিল ২টি উইকেট। কুমিল্লার হয়ে বোলিংয়ে আসেন সাইফউদ্দিন। প্রথম বলে রুবেলকে এলবিতে ফেরান শূন্য রানে। দ্বিতীয় বলে ১ রানে নিয়ে স্ট্রাইকে রাসেলকে পাঠান শাহাদাত হোসেন। তৃতীয় বলে কোনো রান পেলেন না রাসেল। চতুর্থ বলেও পেলেন না কোনো রান। তাতে জয়টা যে কঠিন হয়ে গেছে, সেটা বোঝাই যাচ্ছিল। তবে ওভারের পঞ্চম বলে ছক্কা হাঁকালেন রাসেল। তাতে শেষ বলে দরকার ছিল একটি ছয়। কিছুটা সময় নিয়ে শেষ বল করলেন সাইফউদ্দিন। শেষ বলে ইয়র্কার বল করলেও ব্যাটে লেগে বাউন্ডারিতে বল চলে যায়। তাতে ১ রানেই জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে কুমিল্লা।
১২৮ রানের সহজ টার্গেটে জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ২৯ রানেই ৪ উইকেট হারায় ঢাকা। মিজানুর রহমান (১৬), উপুল থারাঙ্গা (০), রনি তালুকদার (১) ও সাকিব (৭) আউট হয়ে ফেরেন।
এরপর সুনীল নারাইনকে সঙ্গে করে দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন কাইরন পোলার্ড। তবে দলীয় ৭১ রানে উইকেটে হানা দেন শহীদ আফ্রিদি। তার বলে ওয়াহাব রিয়াজের হাতে ক্যাচ দিয়ে ২২ রানে ফেরেন নারাইন। এরপর পোলার্ডকে ফেরান মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। দলীয় ৯০ রানে তামিম ইকবালের হাতে ক্যাচ দিয়ে ৩৪ রানে ফেরেন উইন্ডিজ এই অলরাউন্ডার।
এরপর দলের রান যোগ হওয়ার আগে সাইফউদ্দিনের বলে লুইসের হাতে ক্যাচ দিয়ে শূন্য হাতে ফেরেন নুরুল হাসান সোহান। তবে এরপর শুভাগত হোমকে সঙ্গে করে ব্যাটে ঝড় তোলেন আন্দ্রে রাসেল। আফ্রিদির ওভারে পরপর ২টি ছক্কা হাঁকান উইন্ডিজ এই অলরাউন্ডার। তবে দলীয় ১১২ রানে ওয়াহাব রিয়াজের বলে ক্যাচ দিয়ে শুভাগত ফেরেন ৪ রানে।
এরপর রুবেল হোসেন ফেরেন শূন্য হাতে। আর শেষ পর্যন্ত ৩০ রানে অপরাজিত থাকেন রাসেল। আর ১ রানে অপরাজিত ছিলেন শাহাদাত হোসেন।
কুমিল্লার হয়ে ৪ ওভারে ১টি মেডেনসহ ২২ রান খরচায় সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট নেন সাইফউদ্দিন। এছাড়াও মেহেদী হাসান ২টি উইকেট নেন। আর ১টি করে উইকেট নেন ওয়াহাব রিয়াজ, মোশাররফ হোসেন ও শহীদ আফ্রিদি।
বিপিএল ষষ্ঠ আসরের সবকটি ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচার করছে র্যাবিটহোলবিডি।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিল কুমিল্লা। দুই ওপেনার তামিম ও এভিন লুইস মিলে গড়েন ৩৮ রানের জুটি। তবে এই জুটি ভেঙে দেন সুনীল নারাইন। তার করা বলে বোল্ড হয়ে ব্যক্তিগত ৮ রানে ফেরেন এভিন লুইস। এরপর দলীয় ৪৫ রানে এনামুল হককে শূন্য হাতে ফেরান রুবেল হোসেন। তার করা বলে নুরুল হাসান সোহানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।
এরপর দলীয় ৫২ রানে তামিমকে ফেরান শুভাগত হোম। তার বলে রুবেলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ২০ বলে ৪ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায় ইনিংস সর্বোচ্চ ৩৮ রান করেন তামিম। তাতেই ধ্বস নামে কুমিল্লার ব্যাটিং লাইনআপে। এরপর অধিনায়ক ইমরুল কায়েস ৭, শামসুর রহমান ২ রানে ফেরেন।
পরের উইকেটে থিসারা পেরেরাকে সঙ্গে করে দলের হাল ধরার চেষ্টা করলেও দলীয় ৮৩ রানে ব্যক্তিগত ১৮ রানে ফেরেন শহীদ আফ্রিদি। এরপর দুই রানের ব্যবধানে ফেরেন সাইফউদ্দিন (২)। আর দলীয় ৮৭ রানে ফেরেন পেরেরা (৯)।
এরপর মেহেদী হাসানকে সঙ্গে করে দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন ওয়াহাব রিয়াজ। তবে দলীয় ১০৮ রানে তাকে ফেরান রুবেল হোসেন। ১১ বলে ২ ছক্কায় ১৬ রানের ইনিংস খেলে থারাঙ্গার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। শেষ উইকেটে মেহেদী হাসান ২০ রানে আউট হলেও মোশাররফ হোসেন ৪ রানে অপরাজিত থাকেন।
ঢাকার হয়ে রুবেল হোসেন সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট নেন। এছাড়াও দুটি করে উইকেট নেন সাকিব আল হাসান ও সুনীল নারাইন। আর একটি উইকেট নেন শুভাগত হোম।
এ নিয়ে নিজেদের ১১ ম্যাচের ৮টিতে জয়ে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলের শীর্ষে উঠে গেছে প্লে অফ নিশ্চিত করা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। অন্যদিকে, সমান ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের পাঁচে আছে ঢাকা ডায়নামাইটস।
ঢাকা ডায়নামাইটস একাদশ
মিজানুর রহমান, উপুল থারাঙ্গা, রনি তালুকদার, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক),সুনীল নারাইন, কাইরন পোলার্ড, আন্দ্রে রাসেল, শুভাগত হোম, নুরুল হাসান (উইকেটরক্ষক), রুবেল হোসেন ও শাহাদাত হোসেন।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স একাদশ
তামিম ইকবাল, এভিন লুইস, এনামুল হক (উইকেটরক্ষক), ইমরুল কায়েস (অধিনায়ক), শামসুর রহমান, শহীদ আফ্রিদি, থিসারা পেরেরা, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মেহেদি হাসান, ওয়াহাব রিয়াজ ও মোশাররফ হোসেন ।
সারাবাংলা/এসএন