দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স
৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২১:১৮
।। স্পোর্টস ডেস্ক ।।
ষষ্ঠ বিপিএলের ফাইনালে মুখোমুখি হয় সাবেক দুই চ্যাম্পিয়ন ঢাকা ডায়নামাইটস এবং কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ২০০ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ঢাকা ডায়নামাইটসের ইনিংস থামে ১৮২ রানে। তাতে বিপিএলের দ্বিতীয় শিরোপা জিতলো কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ঢাকাকে ফাইনালের মঞ্চে হারিয়েছে ১৭ রানে। গতবারের মতো এবারো রানার্সআপ হয়ে আসর শেষ করলো সাকিবের দল।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামের এই ফাইনাল ম্যাচটির দিকেই তাকিয়ে ছিল কোটি দর্শক-সমর্থকরা। ইমরুল কায়েসের কুমিল্লার বিপক্ষে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ঢাকার দলপতি সাকিব আল হাসান। এর আগে মিরপুরে খেলা সবশেষ পাঁচ ম্যাচের সবকটিতেই জিতেছে আগে ফিল্ডিং করা দল। ৮ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হয় ম্যাচটি। নির্ধারিত ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে কুমিল্লা তোলে ১৯৯ রান। ঢাকা ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে তোলে ১৮২ রান।
২০০ রানের টার্গেটে ওপেনিংয়ে নামেন ঢাকার ক্যারিবীয়ান তারকা সুনীল নারাইন এবং লঙ্কান তারকা উপুল থারাঙ্গা। প্রথম ওভারেই রানআউট হয়ে ফেরেন নারাইন। বোলার সাইফউদ্দিন দারুণ এক থ্রোতে ফেরান নারাইনকে। এরপর ব্যাটে উপুল থারাঙ্গা ও রনি তালুকদার মিলে ব্যাটে ঝড় তোলেন। তবে দলীয় ১০২ রানে উইকেট বিলিয়ে দেন থারাঙ্গা। পেরেরার করা নবম ওভারের শেষ বলে ক্যাচ দিয়ে ব্যক্তিগত ৪৮ রানে ফেরেন তিনি। ২৭ বলে ৪৫ বাউন্ডারি ও ৩ ছক্কায় ইনিংসটি খেলেন থারাঙ্গা। এরপর ব্যাটিংয়ে আসেন অধিনায়ক সাকিব। তবে দলীয় ১২০ রানে তাকে ফেরান ওয়াহাব রিয়াজ। তার করা ১২তম ওভারের প্রথম বলে ব্যক্তিগত ৩ রানে ফেরেন সাকিব।
এরপর ১ রানের ব্যবধানে রানআউট হয়ে ফেরেন রনি তালুকদার। ফেরার আগে ৩৮ বলে ৬ চার ও ৪ ছক্কায় ৬৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন এই ব্যাটসম্যান। এরপর দলীয় ১৩২ রানে আন্দ্রে রাসেলকে ৪ রানে ফেরান থিসারা পেরেরা। তার করা ১৪তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ওয়াহাব রিয়াজের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন রাসেল। দলীয় ১৪১ রানের মাথায় কাইরন পোলার্ড ১৫ বলে ১৩ রান করে সাজঘরের পথে হাঁটেন। কোনো রান না করেই বিদায় নেন শুভাগত হোম। ১৯তম ওভারে ১৫ বলে দুই ছক্কায় ১৮ রান করে বিদায় নেন নুরুল হাসান সোহান। আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি ঢাকা। কুমিল্লার পেসার ওয়াহাব রিয়াজ তিনটি, থিসারা পেরেরা দুটি আর সাইফউদ্দিন দুটি করে উইকেট পান।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে বিদায় নেন ক্যারিবীয়ান ওপেনার এভিন লুইস। রুবেল হোসেনের বলে এলবির ফাঁদে পড়ে বিদায়ের আগে তিনি ৭ বলে এক বাউন্ডারিতে করেন ৬ রান। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি লুইস। দলীয় ৯ রানের মাথায় কুমিল্লা প্রথম উইকেট হারায়। এরপর জুটি গড়েন তামিম-বিজয়। ১২তম ওভারে সাকিবের বলে এলবি ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন তিন নম্বরে নামা এনামুল হক বিজয়। তার আগে তামিমের সঙ্গে ৬১ বলে ৮৯ রানের জুটি গড়েন। বিজয় ৩০ বলে দুই বাউন্ডারিতে করেন ২৪ রান। কোনো রান না করেই রানআউট হন শামসুর রহমান শুভ। দলীয় ৯৯ রানে তিন উইকেট হারায় কুমিল্লা।
এরপর জুটি গড়েন তামিম আর দলপতি ইমরুল কায়েস। দুজনে মিলে ৪৬ বলে তোলেন ১০০ রান। অবিচ্ছিন্ন থাকে এই জুটি। তামিম নিজের প্রথম ফাইনাল খেলতে নেমে সেঞ্চুরি হাঁকান। ৬১ বলে ১০টি চার আর ১১টি বিশাল ছক্কায় করেন অপরাজিত ১৪১ রান। ইমরুল ২০ বলে ১৭ রান করে অপরাজিত থাকেন। একটি করে উইকেট পান সাকিব এবং রুবেল।
বিপিএল ষষ্ঠ আসরের শুরু থেকে শেষ অবধি সবকটি ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচার করেছে র্যাবিটহোলবিডি।
লিগের শেষ দিকে এসে একের পর এক হারে কিছুটা শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল ঢাকা। এরপর বেশ লড়াই করেই উঠতে হয়েছে সেরা চারে। এলিমিনেটর ম্যাচে মুশফিকের চিটাগং ভাইকিংস, দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে মাশরাফির রংপুর রাইডার্সকে হারিয়ে জায়গা করে নেয় ফাইনালে। সাকিবের নেতৃত্বাধীন ঢাকা দলে ছিলেন আন্দ্রে রাসেল, কাইরন পোলার্ড ও সুনীল নারাইনের মতো তারকা। এছাড়াও ছিলেন রুবেল হোসেন আর নুরুল হাসান সোহানরা।
অন্যদিকে, অনেকটা দুর্দান্ত খেলেই কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ফাইনালে উঠে। ইমরুল কায়েসের নেতৃত্বাধীন দলটিতে তামিম ইকবাল ছাড়াও ছিলেন শহীদ আফ্রিদি, থিসারা পেরেরা, ওয়াহাব রিয়াজ, শামসুর রহমান শুভ ও সাইফউদ্দিনরা। চলতি আসরের লিগ পর্বে ঢাকার বিপক্ষে দুই ম্যাচ খেলে দুটিতেই জয় পায় কুমিল্লা। যা এবার শিরোপার লড়াইয়ে তামিম-ইমরুলদের জন্য বড় আত্মবিশ্বাসের জায়গা ছিল।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স: তামিম ইকবাল, এভিন লুইস, ইমরুল কায়েস (অধিনায়ক), এনামুল হক বিজয়, শামসুর রহমান শুভ, শহীদ আফ্রিদি, থিসারা পেরেরা, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, ওয়াহাব রিয়াজ, মেহেদি হাসান রানা এবং সঞ্জিত সাহা।
ঢাকা ডায়নামাইটস: উপুল থারাঙ্গা, সুনীল নারাইন, রনি তালুকদার, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), কাইরন পোলার্ড, আন্দ্রে রাসেল, নুরুল হাসান সোহান, মাহমুদুল হাসান, শুভাগত হোম, রুবেল হোসেন এবং কাজী অনিক।
সারাবাংলা/এমআরপি/এসএন