Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ব্যাট হাতে দাপট দেখালেন তারা


৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৬:৫৯

।। স্পোর্টস ডেস্ক ।।

এক মাসের বেশি সময় ধরে চলা বিপিএলের উত্তেজনা শেষ। এই আসরে ব্যাট হাতে শীর্ষে এক বিদেশি। ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ রান করেছেন রংপুর রাইডার্সের রিলে রুশো। শীর্ষ পাঁচের তিনজনই বিদেশি, দেশিদের মধ্যে দুই ও তিনে আছেন তামিম ইকবাল এবং মুশফিকুর রহিম।

ব্যাটিংয়ের শীর্ষ পাঁচ:

১। রিলে রুশো (রংপুর রাইডার্স)
এই আসরে শুরু থেকেই চমক দেখানো রংপুর রাইডার্সের দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যান রিলে রুশো সর্বোচ্চ ৫৫৮ রান সংগ্রহ করেছেন। জাতীয় দলে মাত্র ১৫টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন রুশো। সবশেষটি ২০১৬ সালের মার্চে, ভারতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। প্রায় তিন বছর জাতীয় দলের বাইরে থাকা এমন একজন ব্যাটসম্যানকে ধরে আনায় রংপুরের সমর্থকরা একটু অবাকই হয়েছিল। যদিও গতবার খুলনার জার্সিতে খেলেছেন। বিপিএলের এই আসরে তিনি খেলেছেন শুরু থেকেই। একটি সেঞ্চুরি আর পাঁচটি হাফসেঞ্চুরি করা এই প্রোটিয়া তারকা ১৪ ম্যাচের ১৩ ইনিংসে ব্যাট করেছেন। অপরাজিত ছিলেন পাঁচবার, ২০০ রানের বেশি করা আর কোনো ব্যাটসম্যানই এতোবার অপরাজিত থাকতে পারেননি। তবে, দুইবার ০ রানেও ফেরার স্বাদ পেয়েছেন রুশো। ১৫০ স্ট্রাইকরেটে আর ৬৯.৭৫ গড়ে ৩৭২ বল খেলে রুশো করেন ৫৫৮ রান। যা বিপিএলের একক কোনো আসরে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত মোট রান। তার ইনিংস সর্বোচ্চ ছিল ১০০ রান (অপরাজিত)। এই বিপিএল রুশোর ব্যাট থেকে দেখেছে ৪৯টি চার আর ২৪টি ছক্কার মার।

বিপিএলের এক আসরে এতদিন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন পাকিস্তানের আহমেদ শেহজাদ। বিপিএলের প্রথম আসরে পাকিস্তানের এই ওপেনার বরিশাল বার্নার্সের হয়ে ১২ ম্যাচ খেলে করেছিলেন ৪৮৬ রান। এতদিন পর্যন্ত সেটাই ছিল বিপিএলের এক আসরে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহের রেকর্ড। আগের মৌসুমে ক্রিস গেইল শেহজাদের কাছাকাছি চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু মাত্র ১ রানের জন্য তাকে স্পর্শ করতে পারেননি গেইল। রুশো টপকে গেছেন গেইল-শেহজাদদের। ইংল্যান্ডে কাউন্টি খেলেন, ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে তাকে দেখা যায় নিয়মিতই। রুশো গত মৌসুমে খুলনার হয়ে করেছিলেন ১৮৭ রান। এবার শুরু থেকেই রংপুর রাইডার্সের অন্যতম স্বপ্নসারথি হয়ে ওঠেন তিনি।

২। তামিম ইকবাল (কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স)
দেশ সেরা ওপেনার, মেগা ইভেন্টের রান সংগ্রাহকের তালিকায় শীর্ষ পাঁচে না থাকলে চলে? শুরুতে ছন্দে দেখা না গেলেও মান রেখেছেন তামিম ইকবাল। গতবার কুমিল্লার দলপতি ছিলেন। এবার স্টিভ স্মিথ, ইমরুল কায়েস ছিলেন অধিনায়ক। ব্যাট হাতে নিজের কাজটা ঠিকঠাক করতেই হয়তো অধিনায়কত্বের আর্মব্যান্ডটা বাহুতে গলাননি। বিপিএলে ফাইনালে প্রথমবার খেলতে নেমেই সেঞ্চুরি করেছেন। এই আসরে একটি সেঞ্চুরি, দুটি ফিফটির পাশাপাশি দুবার ডাকও মেরেছেন তামিম। ১৪ ম্যাচের ১৪ ইনিংসে ব্যাট করে তামিম করেছেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৬৭ রান। ৩৪৯ বল মোকাবেলা করা এই বাঁহাতির ইনিংস সর্বোচ্চ রান ফাইনালে অপরাজিত ১৪১। ১৩৩.৮১ স্ট্রাইকরেট আর ৩৮.৯১ গড়ে রান তোলা তামিমের ব্যাট থেকে আসে ৪১টি বাউন্ডারি আর ২৩টি ওভার বাউন্ডারি।

৩। মুশফিকুর রহিম (চিটাগং ভাইকিংস)
বিপিএল শুরুর আগেই টাইগারপ্রেমীদের মনটা ভেঙে গিয়েছিল। ক্রিকেট পাড়ায় গুঞ্জন ওঠে তাহলে কি মুশফিককে বিপিএলের এই আসরে দেখা যাবে না! ষষ্ঠ বিপিএলের আইকন ঝামেলা আর বরিশাল বুলসের অংশ না নেওয়ার মারপ্যাঁচে মুশফিকের দল পাওয়া নিয়েই যত গণ্ডগোল বাধে। এগিয়ে আসে বন্দনগরীর দল চিটাগং ভাইকিংস। টাইগারদের মিস্টার ডিপেন্ডেবল খ্যাত মুশফিককে শুধু দলটি নিজেদের করেই নেয়নি, তার হাতে তুলে দিয়েছিল অধিনায়কত্বের গরম আর্মব্যান্ড। চিটাগং ফ্র্যাঞাইজির আস্থা রেখেছেন মুশফিক। দলকে দুর্দান্ত গতিতে নিয়ে ছুটেছেন। এলিমিনেটর ম্যাচ থেকে বিদায় নেওয়ার আগে মুশফিক করেছেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪২৬ রান। ১৩ ম্যাচের সবকটিতেই ব্যাট করেছেন তিনি। ৩০৬টি বল মোকাবেলা করা মুশফিক তিনটি হাফসেঞ্চুরি করেন। ১৩৯.২১ স্ট্রাইকরেট আর ৩৫.৫০ গড়ে মুশফিকের ব্যাট থেকে আসে ৩৬টি বাউন্ডারি আর ১৮টি ওভার বাউন্ডারি। ব্যক্তিগত ইনিংস সর্বোচ্চ ৭৫ রান।

৪। নিকোলাস পুরান (সিলেট সিক্সার্স)
প্রাথমিক পর্বের ১২ ম্যাচ খেলে দ্বিতীয় দল হিসেবে ছিটকে পড়ে সিলেট সিক্সার্স। সাত দলের লড়াইয়ে ছয়ে থেকেই আসর শেষ করেছে তারা। দল প্লে-অফে উঠতে ব্যর্থ হলেও ব্যাট হাতে ব্যর্থ হননি ক্যারিবীয়ান তারকা নিকোলাস পুরান। বরং ১১ ম্যাচের ১১ ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে প্রতিপক্ষ বোলারদের শাসন করেছেন। তিন ইনিংসে অপরাজিত থাকা এই ব্যাটসম্যান ২৩৭ বলে করেছেন ৩৭৯ রান। চারের চেয়ে ছক্কা বেশি হাঁকানো ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানের ইনিংস সর্বোচ্চ রান ছিল হার না মানা ৭৬। ১৫৯.৯১ স্ট্রাইকরেটে আর ৪৭.৩৭ গড়ে নিকোলাস পুরান হাঁকিয়েছেন তিনটি ফিফটি। তার নামের পাশে জমেছে ২৭টি চার আর ২৮টি ছক্কা।

৫। লরি ইভান্স (রাজশাহী কিংস)
কুইজের প্রশ্ন হতে পারে, ষষ্ঠ বিপিএলের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান কে? উত্তর রাজশাহী কিংসের ইংলিশ ব্যাটসম্যান লরি ইভান্স। দেশের জার্সিতে যার এখনও খেলাই হয়নি। ৩১ বছর বয়সী এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে ৬২ বলে ৯টি চার আর ৬টি ছক্কা করেছিলেন ১০৪ রান। সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় ইভান্স আছেন চার নম্বরে। ১১ ম্যাচের ১১ ইনিংসে ২৪৬ বলে করেছেন ৩৩৯ রান। ১৩৭.৮০ স্ট্রাইকরেটে আর ৩৭.৬৬ গড়ে ইভান্স একটি সেঞ্চুরি, দুটি ফিফটির পাশাপাশি দুটি ডাকও মেরেছেন। কিংসদের এই ইংলিশ তারকা দেশের বিমান ধরার আগে ৩৭টি চারের পাশাপাশি ১০টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন।

সারাবাংলা/এমআরপি


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর