নেপিয়ারে এবারও পারলো না টাইগাররা
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৪:৩৩
।। স্পোর্টস ডেস্ক ।।
২০০৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর নেপিয়ারে প্রথমবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামে বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে ১০২ রানের জয় পায় স্বাগতিকরা। এরপর ২০১০ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি একই মাঠে ১৪৬ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছিল টাইগাররা। এবার সেই মাঠেই প্রায় ৯ বছর পর কিউইদের হারানোর আশা দেখেছিল লাল-সবুজের দল। কিন্তু সেটা এবারও হলো না।
মাশরাফি বিন মর্তুজার নেতৃত্বে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) নেপিয়ারে টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক। আগে ব্যাট করতে নেমে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৩২ রান তোলে টাইগাররা। জবাবে ২৩৩ রানের টার্গেটে নেমে ৪৪.৩ ওভারে ২ উইকেট হারিয়েই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় কিউইরা (২৩৩/২)।
জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করে স্বাগতিকরা। প্রথম উইকেটেই ১০৩ রানের জুটি গড়েন ওপেনার মার্টিন গাপটিল ও হেনরি নিকোলস। তবে সেই জুটি ভাঙেন মিরাজ। তার করা ২৩তম ওভারের তৃতীয় বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন নিকোলস। ফেরার আগে ৮০ বলে ৫ চারে ৫৩ রানের ইনিংস খেলেন এই ওপেনার।
এরপর উইকেটে আসেন অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। দলীয় ১৩৭ রানে তাকে এলবিতে ফেরান মাহমুদউল্লাহ। ফেরার আগে ২২ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ১১ রান করেন কিউই অধিনায়ক। এরপর রস টেইলরকে সঙ্গে করে এগুতে থাকেন গাপটিল। তাতে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের নিজের ১৫তম শতক তুলে নেন কিউই এই ওপেনার।
দু’জন মিলেই দলকে নিয়ে যান জয়ের বন্দরে। শেষ পর্যন্ত ১১৬ বলে ১১৭ রানে অপরাজিত থাকেন গাপটিল। তার সঙ্গে ৪৫ রানে অপরাজিত থাকেন টেইলর।
বাংলাদেশের হয়ে একটি করে উইকেট নেন মিরাজ ও মাহমুদউল্লাহ।
এর আগে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ৫ রানে ট্রেন্ট বোল্টের বলে ল্যাথামের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ওপেনার তামিম ইকবাল। এরপর দলীয় ১৯ রানে ম্যাট হেনরির বলে বোল্ড হয়ে ব্যক্তিগত ১ রানে ফেরেন আরেক ওপেনার লিটন দাস।
লিটনের ফেরার পর সৌম্য সরকারকে সঙ্গে করে কিছুটা হাল ধরার চেষ্টা করলেও দলীয় ৪২ রানে ব্যক্তিগত ৫ রানে ফেরেন মুশফিক। আর মুশফিক ফেরার পর দলের রান যোগ হওয়ার আগে নিজের উইকেটটি বিলিয়ে দেন সৌম্য। হেনরির বলে আউট হয়ে ফেরার আগে ২২ বলে ৫ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কার সাহায্যে ৩০ রান করেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।
এরপর দলের কিছুটা হাল ধরার চেষ্টা করেন মোহাম্মদ মিঠুন ও মাহমুদউল্লাহ। তবে দলীয় ৭১ রানে নিজের উইকেট বিলিয়ে দেন মাহমুদউল্লাহ। ফার্গুসনের বলে রস টেইলরের হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে ২৯ বলে ১৩ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।
মাহমুদউল্লাহর ফেরার পর মিঠুনের সঙ্গে ব্যাটিংয়ে আসেন সাব্বির রহমান। দলীয় ৯৪ রানে স্যান্টনারের বলে স্ট্যাম্পিং হয়ে ব্যক্তিগত ১৩ রানে ফেরেন নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে দলে ফেরা এই ব্যাটসম্যান। এরপর মিঠুনের সঙ্গে ব্যাটিংয়ে আসেন মেহেদি হাসান মিরাজ। ২৭ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ২৬ রান তুলে দলীয় ১৩১ রানে তিনিও হাঁটেন সাজঘরের পথে। স্যান্টনারের বলে নিশামের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এই অলরাউন্ডার।
এরপর সাইফউদ্দিনকে সঙ্গে করে এগুতে থাকেন মিঠুন। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান তুলে নেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় অর্ধশতক। দু’জন মিলে গড়েন ৭৮ রানের ইনিংস। দলীয় ২১৫ রানে সাইফকে ফেরান স্যান্টনার। তার বলে গাপটিলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ৫৮ বলে ৩ চারে ৪১ রানের ইনিংস খেলেন সাইফ।
এরপর ব্যাটিংয়ে আসেন অধিনায়ক মাশরাফি। দলীয় ২২৯ রানে মিঠুনকে বোল্ড করে ফেরান ফার্গুসন। ফেরার আগে ৯০ বলে ৫ চারে ৬২ রানে ইনিংস খেলেন মিঠুন।
আর শেষ দিকে মোস্তাফিজকে বোল্ড করে শূন্য হাতে ফেরান বোল্ট। তাতেই বাংলাদেশের ইনিংস থামে ২৩২ রানে। ৯ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন মাশরাফি। কিউইদের হয়ে ৩টি করে উইকেট নেন ট্রেন্ট বোল্ট ও মিচেল স্যান্টনার। আর দুটি করে উইকেট নেন ম্যাট হেনরি ও ফার্গুসন।
বাংলাদেশ একাদশ :
তামিম ইকবাল, লিটন দাস, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), মোহাম্মদ মিঠুন, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সাব্বির রহমান, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মেহেদি হাসান মিরাজ, মাশরাফি বিন মর্তুজা ও মোস্তাফিজুর রহমান।
নিউজিল্যান্ড একাদশ :
মার্টিন গাপটিল, হেনরি নিকোলস, কেন উইলিয়ামসন (অধিনায়ক), রস টেইলর, টম ল্যাথাম (উইকেটরক্ষক), জিমি নিশাম, কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম, মিচেল স্যান্টনার, লুকি ফার্গুসন, ম্যাট হেনরি ও ট্রেন্ট বোল্ট।
সারাবাংলা/এসএন