পারফর্ম করতে পারছি না তাই ক্রিকেট ছেড়ে দিয়েছি : রবিউল
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২০:০০
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
সব ধরণের ক্রিকেট থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিলেন লাল সবুজের জার্সি গায়ে এক সময়ে গতির ঝড় তোলা পেসার রবিউল ইসলাম। জন্মের পর থেকে যে ক্রিকেটই ছিলো ধ্যানজ্ঞ্যান সেই ক্রিকেটকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানিয়ে দিলেন তিনি।
রবিউল বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের হয়ে সবশেষ খেলেছেন ২০১৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। দেশে ফিরে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ খেলতে গিয়ে ইনজুরিতে পড়েন ডানহাতি এই পেসার। ইনজুরি কাটিয়ে ফিরলেও জাতীয় দলে আর ফেরা হয়নি। কোচ হাথুরুসিংহের অবজ্ঞায় টাইগার দলে হয়ে গেলেন অপাঙতেয়।
ক্লাব ক্রিকেটেও দিনের পর দিন পেয়েছেন অবজ্ঞা। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের গেল মৌসুমের আগের মৌসুমে ব্রাদার্স ইউনিয়ন তাকে দলে ভেড়ালো ঠিকই, কিন্তু একটি ম্যাচেও সেরা একাদশে জায়গা মেলেনি। গেল মৌসুমে কোন ক্লাব থেকে ডাক পাননি।এবারও তাই। আসন্ন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে কোন ক্লাবই তাকে কিনতে আগ্রহ দেখালো না। ঘরোয়া ক্রিকেটে সবশেষ খেলেছেন গেল বছর। জাতীয় লিগে খুলনা বিভাগের হয়ে একটি মাত্র নেমেছিলেন। কিন্তু পারফর্ম করতে পারেননি।
ফলে নির্বাসনকেই তার শ্রেয়তর মনে হল। তবে তার এই নির্বাসন কোন ক্ষোভ থেকে নয়। ‘অনেকদিন ক্রিকেট উপভোগ করলাম। এখন না হয় অন্যকিছু উপভোগ করি। ক্লাব ক্রিকেট নিয়ে কোন ক্ষোভ নেই, বিসিবি নিয়েও কোন ক্ষোভ নেই। কোন ক্ষোভ নেই আমার। পারফর্ম করতে পারছি না সেজন্য। ক্লাব ক্রিকেটের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ খেলেছি গত বছর তার আগের বছর। ব্রাদার্স ইউনিয়ন দলে নিয়েছিলো কিন্তু কোন ম্যাচ পাইনি। এবছর তো দলই পেলাম না। জাতীয় লিগ অবশ্য খেলেছি। গতবছরও খেলেছি কিন্তু পারফর্ম করতে পারিনি।’
এটা ঠিক ২২ গজের লড়াইয়ে বল হাতে তাকে আর কখনো দেখা যাবে না ঠিকই। কিন্তু তারপরেও ক্রিকেট নিয়েই অনাগত দিন কাটিয়ে দিতে চান। হয় কোচ হিসেবে না হয় নিজ জেলায় ক্রিকেট একাডেমির স্বত্বাধিকারী হয়ে।
‘ক্রিকেটের শীর্ষ পর্যায়ে ভালো একটি সময় কাটিয়েছি। ক্রিকেটের সাথেই থাকতে চাই। ক্রিকেট ছাড়া চলবো কি করে? সেই স্কুল থেকে ক্রিকেট খেলি। যখন থেকে জ্ঞান বুদ্ধি হয়েছে তখন থেকেই খেলার সাথে। অতএব ছাড়ার প্রশ্নই উঠে না। দেখি কোচিংয়ে ইচ্ছে আছে। সেটা না হলে একটি একাডেমি করবো ভাবছি।’
যেহেতু পারফরম্যান্স নেই তাই ক্রিকেট ছেড়ে দিয়েছেন রবিউল। কাজেই বিসিবি বা ক্লাব কর্তৃপক্ষের প্রতি তার ক্ষোভের প্রশ্ন ওঠে না। বা থাকলেও সারাবাংলার সঙ্গে তার একান্ত কথোপকথনে তা বোঝা যায়নি। তবে একটি জায়গায় তার ভীষণ ক্ষোভ আছে। সেটা হলো নিজ জেলার প্রতি। ‘একটা ক্ষোভ আছে। সাতক্ষীরা জেলায় ৩৪ সদস্যের ক্রিকেট দল হয় সেখানে আমি থাকি না। ঘরের মানুষের কষ্টই বড় কষ্ট।’
ডানহাতি এই পেসার জাতীয় দলের জার্সি গায়ে তোলেন ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ দিয়ে। কিন্তু নিয়মিত হতে পারেননি দলে। জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন মাত্র নয় টেস্ট, তিন ওয়ানডে ও একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ।
৯ টেস্টে তার উইকেট সংখ্যা ২৫টি। সেরা বোলিং ইনিংস ৭১ রানের বিনিময়ে ৬ উইকেট। যা তুলে নিয়েছিলেন ২০১৩ সালে জিম্বাবুয়ে সফরে স্বাগতিকদের বিপক্ষে। তিন ওয়ানডে থেকে তার প্রাপ্ত উইকেট ২টি। আর একমাত্র টি টোয়েন্টিতে ছিলেন উইকেট শূন্য।
সারাবাংলা/এমআরএফ/এসএন