গেইলের মাইলফলকের দিনে হারলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৬:০৩
।। স্পোর্টস ডেস্ক ।।
অনেকটা তীরে গিয়েই তরী ডুবানোর মতো অবস্থা হয়েছে উইন্ডিজদের। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের চতুর্থ ওয়ানডেতে জয়ের খুব কাছে গিয়ে হতাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে তাদের।
ঘরের মাঠে প্রথম ওয়ানডেতে ইংলিশদের কাছে হারের পর দ্বিতীয় ওয়ানডেতে জয় তুলে ১-১ এ সমতায় ফেরে উইন্ডিজরা। এরপর বৃষ্টির কারণে মাঠে গড়ায়নি সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডে। তবে বুধবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সিরিজের চতুর্থ ওয়ানডেতে ২৯ রানে হেরেছে স্বাগতিকরা।
সেন্ট জর্জ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন উইন্ডিজ অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। আগে ব্যাট করতে নেমে উইন্ডিজ বোলারদের হতাশ করতে থাকেন ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা। ওপেনার জনি বেয়ারস্ট্রো ৫৬ ও অ্যালেক্স হেলস ৮২ রান করে আউট হন। এরপর জো রুট ৫ রান করে সাজঘরে ফেরেন।
তবে এরপর জশ বাটলারের সঙ্গে দারুণ এক জুটি গড়েন অধিনায়ক ইয়োন মরগাম। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দুজনই শতক তুলে নেন। এই জুটি থেকে আসে ২০৪ রান। এরপর ইয়োন মরগান ৮৮ বলে ৮ চার ও ৬ ছক্কায় ১০৩ রান করে সাজঘরে ফেরেন। আর আউট হওয়ার আগে জশ বাটলার খেলেন ক্যারিয়ার সেরা ১৫০ রানের ইনিংস। ৭৭ বলে ১৩ চার ও ১২ ছক্কায় দুর্দান্ত এই ইনিংস্টি খেলেন ইংলিশ এই ব্যাটসম্যান।
এরপর স্টোকস ১১ রান তুলে আউট হন। তাতে নির্ধারিত ওভার শেষে ইংলিশদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ৪১৮ রান।
উইন্ডিজদের হয়ে ২টি করে উইকেট নেন ব্রাথওয়েইট ও থমাস। আর একটি করে উইকেট নেন কটরেল ও অ্যাশলে নার্স।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৪৪ রানে ২ উইকেট হারায় উইন্ডিজরা। তাতে অবশ্য কিছুটা বিপদে পড়লেও সেটা বেশ ভালোভাবেই কাটিয়ে ওঠেন ক্রিস গেইল ও ড্যারেন ব্রাভো। দু’জনের ব্যাটে কিছুটা জয়ের আশা দেখে স্বাগতিকরা। তবে দলীয় ২২০ রানে উডের বলে স্টোকসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ব্রাভো ফিরলে আবারো বিপর্যয়ে পড়ে উইন্ডিজরা। এরপর হেটমায়ার ফেরেন ৬। তবে দলীয় ২৯৫ রানে স্টোকসের বলে বোল্ড হয়ে থামেন গেইল। তার আগে ৯৭ বলে ১১ চার ও ১৪ ছক্কায় ১৬২ রানের ঝড়ো এক ইনিংস খেলেন তিনি।
এরপর অধিনায়ক হোল্ডার ২৯ রান করে ফিরলে ব্রাথওয়েইট ও নার্স মিলে আবারো জয়ের আশা জাগান। তবে আদিল রশিদের বোলিংয়ের কাছেই একের পর এক উইকেট বিলিয়ে দিয়েছিলেন উইন্ডিজ ব্যাটসম্যানরা। নার্স ৪৩ ও ব্রাথওয়েইট ৫০ রান করলেও শেষ দিকে দেবেন্দ্র বিশু ও থমাস শূন্য হাতে ফিরলে দুই ওভার বাকি থাকতেই ৩৮৯ রানে থেকে যায় ক্যারিবীয় ইনিংস।
ইংলিশদের হয়ে সর্বোচ্চ ৫টি উইকেট নেন আদিল রশিদ। এছাড়াও উড নেন চারটি উইকেট, আর বাকি উইকেটটি পান স্টোকস।
ম্যাচসেরা হয় ইংল্যান্ডের জশ বাটলার।
তবে দল হেরে গেলেও এই ম্যাচে দারুণ এক মাইলফলক ছুঁয়ে ফেললেন গেইল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ানডেতে ১০ হাজার রানের মাইলফলকে ছুঁলেন তিনি। এর আগে উইন্ডিজদের হয়ে এই মাইলফলক ছুঁয়েছিলেন মাত্র একজন।ক্রিকেটের বরপুত্র খ্যাত ব্রায়ান লারার পর এবার সেই ক্লাবে প্রবেশ করলেন গেইল। ওয়ানডেতে লারার ঝুলিতে আছে ১০ হাজার ৪০৫ রান।
এছাড়াও এই ম্যাচে আরেকটি মাইলফলক ছুঁয়েছেন ক্যারিবীয় ব্যাটিং দানব। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে একের পর এক ওভার বাউন্ডারিতে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ছুঁয়ে ফেললেন ৫০০ ছক্কার মাইলফলক।
এই ম্যাচে মাঠে নামার আগে টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে সবমিলিয়ে ৫১৫ ইনিংসে খেলে ৪৯২টি ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন গেইল। ইংলিশদের বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ ওয়ানডেতে মাঠে নেমে ১৪টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন তিনি।
সবধরণের ক্রিকেট মিলিয়ে সবচেয়ে বেশি ছক্কা হাঁকানোর রেকর্ডটা আগেই থেকেই ছিল ক্রিস গেইলের। এবার সেই রেকর্ডটি আরো পোক্ত করে নিলেন ক্যারিবিয়ান এই হার্ডহিটার। সবধরণের ক্রিকেট মিলিয়ে ৫০০’র মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলা এই ব্যাটসম্যানের ছক্কার সংখ্যা এখন ৫০৬।
সবধরণের ক্রিকেট মিলিয়ে সর্বোচ্চ ছক্কা হাঁকানোর তালিকায় গেইলের পরেই আছেন শহীদ আফ্রিদি। সব ফরম্যাট মিলিয়ে তার ছক্কার সংখ্যা ৪৭৬টি।
তবে ওয়ানডেতে এখনো সবচেয়ে বেশি ছক্কার মালিক শহীদ আফ্রিদি। ক্যারিয়ারে সবমিলিয়ে ৩৯৮ ম্যাচে ৩৫১টি ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন পাকিস্তানি এই অলরাউন্ডার। আর ২৮৮ ওয়ানডেতে গেইলের আছে ৩০৫টি ছক্কা। উইন্ডিজ এই ব্যাটিং দানব আছেন সর্বোচ্চ ছক্কা হাঁকানোর তালিকায় দুইয়ে।
সারাবাংলা/এসএন