হ্যামিল্টন টেস্ট মনে রেখে দেবে রিয়াদ-সৌম্যদের!
৩ মার্চ ২০১৯ ১৪:১৫
।। সুমিত্র নাথ, নিউজরুম এডিটর ।।
তিন ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ ও ৫২ রানের ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। তবে হ্যামিল্টনে এই টেস্ট হারলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট হাতে আশা জাগিয়েছিলেন সৌম্য সরকার এবং অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
কিউইদের বিপক্ষে এই টেস্ট নিজেদের প্রথম ইনিংসে ২৩৪ রান তোলে লাল সবুজ জার্সিধারীরা। তামিম ইকবাল একাই ১২৬ রানের ইনিংস খেলেন। জবাবে নিজেদের প্রথম ইনিংসে বড় স্কোর করে নিউজিল্যান্ড। ৬ উইকেটে ৭১৫ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে কিউইরা। তাতে ৪৮১ রানে পিছিয়ে থেকে ব্যাট করতে নামে টাইগাররা।
আগের দিনের ৪ উইকেটে ১৭৪ রান নিয়ে রোববার (৩ মার্চ) চতুর্থ দিনের ব্যাটিংয়ে নামেন অপরাজিত থাকা দুই ব্যাটসম্যান সৌম্য ও অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। তবে এদিন সৌম্য ১৪৯ ও মাহমুদউল্লাহ ১৪৬ রানের ইনিংস খেললেও ৪২৯ রানেই থামে টাইগার ইনিংস। তাতেই কিউইদের কাছে হেরে সিরিজে ১-০ তে পিছিয়ে পড়েছে টাইগাররা।
তবে এই টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসের পঞ্চম উইকেটে আশা জাগিয়েছিলেন সৌম্য সরকার ও মাহমুদউল্লাহ। কিউইদের বিপক্ষে এই ইনিংসে দুই ব্যাটসম্যানই খেলে ফেললেন টেস্টে নিজেদের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। রিয়াদ পেলেন ক্যারিয়ারের চতুর্থ আর সৌম্য পেলেন ক্যারিয়ারের প্রথম শতক।
পঞ্চম উইকেটে দু’জন মিলে শতকসহ করেন ২৩৫ রানের জুটি। যা হ্যামিল্টনে বাংলাদেশের হয়ে যেকোনো উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি। এর আগে ২০১০ সালে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে এই মাঠে ২১৩ রানের জুটি গড়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। যা ছিল হ্যামিল্টনে টাইগারদের সর্বোচ্চ উইকেট জুটি।
এছাড়াও চলতি সিরিজে সাদমানকে সঙ্গে করে ১৪৫ রানের জুটি গড়েন ওপেনার তামিম ইকবাল। হ্যামিল্টনে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ রানের জুটি। এর আগে ২০১০ সালে ইমরুল কায়েসের সঙ্গে ১১৪ রানের জুটি গড়েন তামিম।
এই টেস্টে আরেকটি রেকর্ড গড়েছে টাইগাররা। দ্বিতীয় ইনিংসে ৪২৯ রানের এই ইনিংসটি হ্যামিল্টনে বাংলাদেশের দলীয় সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। এর আগে হ্যামিল্টনে এক ইনিংসে বাংলাদেশের দলীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ ছিল ৪০৮ রানের। ২০১০ সালে কিউইদের বিপক্ষে এক ইনিংসে ৪০৮ রানের সেই ইনিংসকে ছাড়িয়ে গেছে এবারের ইনিংসটি। তাতে সবচেয়ে বেশি কীর্তির ভাগিদার হবেন নিশ্চয়ই সৌম্য আর রিয়াদ।
এছাড়াও হামিল্টনে এই দুই ব্যাটসম্যানের করা ২৩৫ রানের জুটি লেখা হয়েছে আরেক রেকর্ডের খাতায়। টাইগারদের হয়ে পঞ্চম উইকেটে এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ড। পঞ্চম উইকেটে সবচেয়ে বড় জুটি গড়েছিলেন সাকিব আর মুশফিক। সেটিও ছিল কিউইদের বিপক্ষেই। ২০১৭ সালে ওয়েলিংটনে ৩৫৯ রানের জুটি গড়েন সাকিব-মুশফিক। তবে সেই ম্যাচে ৭ উইকেটে হেরেছিল টাইগাররা।
এছাড়াও পঞ্চম উইকেটে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ড আছে মুশফিকুর রহিম ও মোহাম্মদ আশরাফুলের। ২০১৩ সালের মার্চে গলে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পঞ্চম উইকেটে ২৬৭ রানের জুটি গড়েন এই দুই ব্যাটসম্যান।
কিউইদের বিপক্ষে সৌম্য আর রিয়াদের ২৩৫ রানের এই জুটি টেস্টে টাইগারদের ষষ্ঠ সর্বোচ্চ রানের জুটি।
এর আগে টেস্টে কিউদের বিপক্ষে সাকিব-মুশফিকের করা ৩৫৯ রানের জুটিই এখন পর্যন্ত টাইগারদের সর্বোচ্চ রানের জুটি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের জুটি আছে ওপেনার তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েসের। পাকিস্তানের বিপক্ষে খুলনায় ২০১৫ সালে ৩১২ রানের জুটি গড়েছিলেন এই দুই ওপেনার।
এছাড়াও টাইগারদের তৃতীয় সর্বোচ্চ ২৬৭ রানের জুটি আছে মোহাম্মদ আশরাফুল ও মুশফিকুর রহিমের। আর চতুর্থ ও পঞ্চম সর্বোচ্চ রানের জুটি আছে মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহিমের। গতবছরের নভেম্বরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২৬৬ রানের জুটি গড়েছিলেন এই দুই ব্যাটসম্যান। এর আগে গতবছরের জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২৩৬ রানের জুটি গড়েন মুশফিক-মুমিনুল।
তবে হ্যামিল্টনে এবার খুব কাছে গিয়েও মুশফিক মুমিনুলের সেই রেকর্ডে হানা দিতে পারেননি রিয়াদ-সৌম্যরা।
এছাড়াও হ্যামিল্টন টেস্টে দুই দলের জুটির দিক থেকে রিয়াদ সৌম্যের ২৩৫ রানের এই জুটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। চলতি সিরিজে কিউইদের হয়ে ২৫৪ রানের জুটি গড়েন কিউই দুই ওপেনার জীত রাভাল ও টম ল্যাথাম। যেটি এই ম্যাচে দু’দলের মধ্যকার সর্বোচ্চ রানের জুটি।
তবে কিউইদের বিপক্ষে এই টেস্টে হারলেও বলা যায়, মনে রাখার মতো একটি ইনিংস খেলেছে টাইগাররা।
সারাবাংলা/এসএন