ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প লিখলো ইউনাইটেড, পিএসজির বিদায়
৭ মার্চ ২০১৯ ১০:৪৪
।। স্পোর্টস ডেস্ক ।।
অঢেল টাকা খরচ করে নেইমারকে এনেছিল পিএসজি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জেতাটাই ছিল দলটির মূল লক্ষ্য। তবে, নেইমারের দ্বিতীয় মৌসুমে আবারো চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বিদায় নিতে হলো পিএসজিকে। ঘরের মাঠেই হেরেছে তারা। ৩-১ গোলে পিএসজিকে হারিয়ে প্যারিসের মাঠেই নতুন রূপকথা লিখলো ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। আগের রাতে অঘটন ঘটিয়ে আয়াক্স বিদায় করে দিয়েছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদকে।
গতবারের মতো এবারও নেইমার ইনজুরিতে। আগের ম্যাচে ইনজুরিতে ছিলেন উরুগুয়ের তারকা এডিনসন কাভানি। এই ম্যাচেও শঙ্কা ছিল। যে কারণে কাভানিকে কোচ মাঠে নামিয়েছেন ম্যাচের ৯৫তম মিনিটে। ততক্ষণে ম্যাচ প্রায় শেষ। নেইমার-কাভানির অনুপস্থিতিতেও ওল্ড ট্র্যাফোর্ড থেকে প্রথম লেগে ২-০ গোলে জিতে এসেছিল প্যারিসের দলটি। সে ম্যাচে ডি মারিয়া আর এমবাপের অসাধারণ নৈপুণ্য দেখেছিল ফুটবলপ্রেমীরা।
পার্ক দে প্রিন্সেসে স্বাগতিক পিএসজিকে বিদায় করে দিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর নতুন উদাহরণ তৈরি করলো ইউনাইটেড। পিএসজিকে বিদায় করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে নাম লিখিয়েছে ইংলিশ ক্লাবটি। দুই লেগ মিলিয়ে রেড ডেভিলরা স্কোর করে ৩-৩, তবে প্রতিপক্ষের মাঠে বেশি গোল দেওয়ার সুবিধা নিয়ে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে সফল ক্লাবটি উঠে যায় কোয়ার্টার ফাইনালে। ক্লাব ফুটবলে ইউরোপের সেরা প্রতিযোগিতার ইতিহাসে প্রথম দল হিসেবে নকআউট পর্বের প্রথম লেগে ঘরের মাঠে ২-০ বা তার চেয়ে বড় ব্যবধানে হারের পর ঘুরে দাঁড়িয়ে পরের রাউন্ডে ওঠার কীর্তি গড়লো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।
ইউনাইটেডের হয়ে বেলজিয়াম তারকা রোমেলু লুকাকু জোড়া গোল করেন। পার্ক দে প্রিন্সেসের দর্শকরা নড়েচড়ে বসার আগেই ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটে পিএসজির গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি বুফনকে ফাঁকি দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন লুকাকু। প্রায় ৬ গজ দূর থেকে বাম পায়ে নেয়া লুকাকুর শট জাল ভেদ করে পিএসজির। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এই নিয়ে শেষ তিন ম্যাচের প্রতিটিতে দুটি করে গোল করলেন বেলজিয়ান ফরোয়ার্ড লুকাকু।
১২তম মিনিটে সমতায় ফেরে পিএসজি। কাইলিয়ান এমবাপের ক্রস থেকে বল জালে জড়িয়ে স্কোরলাইন ১-১ করেন হুয়ান বের্নাত। ম্যাচের ৩০তম মিনিটে আবারো গোল করে দলকে এগিয়ে নেন লুকাকু। মার্কাস রাশফোর্ডের দূর থেকে নেওয়া জোরালো শট রুখে দিলেও নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি বুফন। হাত ফসকে বেরিয়ে যাওয়া বলে আলতো টোকায় জালে জড়ান বেলজিয়াম তারকা লুকাকু (২-১)। ৫৫তম মিনিটে পিএসজির আর্জেন্টাইন তারকা ডি মারিয়া জালে বল পাঠালেও তিনি অফসাইডে থাকায় ভিএআরের সাহায্য নিয়ে গোল দেননি রেফারি।
২-১ গোলেই ম্যাচ শেষ হওয়ার দিকে চলে গিয়েছিল প্রায়। ম্যাচের নির্ধারিত সময়ও শেষ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, যোগ করা সময়ে চতুর্থ মিনিটে (৯৪ মিনিট) নিজেদের সীমানায় প্রেসনেল কিম্পেম্বের হ্যান্ডবল হলে রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। ভিএআর এর কারণে সময়ক্ষেপণ হয়। সফল স্পট কিকে বল জালে জড়ান রাশফোর্ড। পেনাল্টি না হলে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতো পিএসজি। শেষ মুহূর্তের নাটকীয়তায় পাল্টে গেল পুরো চিত্র। দুই লেগ মিলিয়ে স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৩-৩। কিন্তু প্রতিপক্ষের মাঠে এক গোল বেশি করে পরের রাউন্ডের টিকিট পায় উলে গুনার সুলশারের দল। আর এই নিয়ে টানা তিন মৌসুমে প্রতিযোগিতাটির শেষ ষোলো থেকেই বিদায় নিলো পিএসজি।
আরেক ম্যাচে কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠেছে পোর্তো। ঘরের মাঠে অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো ম্যাচে রোমাকে ৩-১ গোলে হারিয়ে দুই লেগ মিলিয়ে ৪-৩ ব্যবধানে এগিয়ে পরের রাউন্ডে ওঠে পর্তুগালের ক্লাবটি। প্রথম পর্বে নিজেদের মাঠে ২-১ গোলে জিতেছিল ইতালিয়ান ক্লাব রোমা।
** ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ইতিহাস পিএসজির
সারাবাংলা/এমআরপি