ডিপিএলের চেয়ে আইপিএলকেই গুরুত্ব দিচ্ছে বিসিবি
১৩ মার্চ ২০১৯ ১৭:৫৩
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
গত ৮ মার্চ থেকে দেশের তিনটি ভেন্যুতে শুরু হয়েছে ঘরোয়া ক্রিকেটের সবচেয়ে মর্যাদার আসর ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল)। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো সেখানে নেই সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিমের মতো ‘ইম্প্যাক্ট’ ক্রিকেটাররা। পুরো মৌসুমে তাদের দেখাও যাবে না।
তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিমের ব্যাপারটি ভিন্ন। এই মুহূর্তে নিউজিল্যান্ড সিরিজে ব্যস্ত এই দুই টাইগার দেশে ফিরে ব্যক্তিগত উদ্যেগে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নেবেন বলে বিসিবি থেকে ছুটি নিয়েছেন। পক্ষান্তরে বিপিএল ফাইনালে বাঁহাতের অনামিকার চোটে পড়ে দেশের হয়ে নিউজিল্যান্ড সিরিজে না খেলা সাকিব ব্যস্ত থাকবেন আইপিএল নিয়ে।
আশঙ্কার কথা হলো, প্রিমিয়ার লিগ বাদ দিয়ে সাকিব আইপিএলে খেলবেন এটাই বিসিবির কাছে সর্বাধীক গ্রহণযোগ্য এবং যুক্তিযুক্ত। মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস তো তাই জানালেন!
তিনি জানান, ‘সাকিবের যে ইনজুরিটা ছিল সেটা সে কিছুটা সেরে উঠেছে। তাকে আরো দশ দিনের একটা বিশ্রাম দেয়া হয়েছে। এই দশ দিনে ফিটনেস চলে আসলেও তৃতীয় টেস্ট খেলার সুযোগ নেই। এরপরে যদি সে ফিট হতে পারে এবং চিকিৎসক তাকে ক্লিয়ারেন্স দেয়, যে কোনো ফরম্যাটেই সে খেলতে যেতে পারে। শুধু আইপিএল না, বাংলাদেশের খেলাও যদি থাকতো অবশ্যই সাকিব সেখানে যোগ দিতো।’
অথচ দেশের ক্রিকেটের স্বার্থেই প্রিমিয়ার লিগে সাকিবের উপস্থিতি অপরিহার্য ছিল। খুব বেশি কিছু না, সাকিব যদি তার লম্বা ঝলমলে ক্যারিয়ারের অভিজ্ঞতার ঝুলিটি কিছুটা হলেও অনুজদের জন্য খুলে দিতেন, তাতে তারা যেমন এগিয়ে যেতেন, তেমনি এগিয়ে যেত এদেশের ক্রিকেট। কেননা সাকিব তো সাধারণ কেউ নন।
‘টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি সাকিবের বরাবরই অনীহা।’-কথাটি এই মুহূর্তে বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রায় সবার মুখে মুখে ফিরছে। ২০১৭ সালে টেস্ট থেকে ৬ মাসের জন্য ছুটি নেন সাকিব। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চলমান সফরে ওয়ানডের পর টেস্টেও খেলছেন না। সেটা অবশ্য ইনজুরির কারণে।
কিন্ত ইনজুরি সেরে না উঠতেই ২৩ মার্চ থেকে শুরু হওয়া আইপিএলে ঠিকই খেলবেন সাকিব! সেখানে যদি তিনি আবার ইনজুরিতে পড়েন? তখন কী হবে? ‘একের ভেতরে দুই’ সাকিবকে ছাড়াই বিশ্বকাপ মিশনে যেতে হবে বাংলাদেশকে।
সেক্ষেত্রে আইপিএলে যেতে সাকিবের প্রতি বিসিবির কি কড়াকড়ি আরোপ করা উচিত ছিল না? বুধবার (১৩ মার্চ) রাজধানীর স্থানীয় একটি হোটেলে সাংবাদিকেদের করা এই প্রশ্নটির জবাবে জালাল ইউনুস জানালেন, ‘আমার মনে হয় বিধি-নিষেধ কোনোভাবেই থাকা উচিত না। যদি প্লেয়ার ফিট থাকে খেলতে যেতেই পারে। তবে ওইখানে গিয়ে যাতে ইনজুরিতে না পড়ে সেইদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।’
‘তাকে নিজেকে রক্ষা করে খেলতে হবে। দরকার হলে হয়তো কিছু ম্যাচ খেললো, কিছু ম্যাচ খেলে চলে এলো। যাতে চাপ না থাকে। তবে আমরা কোনো প্লেয়ারকে এভাবে মানা করতে পারি না যে সে কোনো টুর্নামেন্ট খেলতে পারবে না। যদি সাকিব ফিট থাকে এবং বোর্ড মনে করে সে যেতেই পারে।’ যোগ করেন জালাল ইউনুস।
সাকিব, তামিম, মুশফিকের অনুপস্থিতে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ রং হারিয়েছে সেটা বলা যায়। কিন্তু কী আর করা? তবে ভারত (পারিবারিক সফর) থেকে ফিরে মাশরাফি যোগ দিলে এবং নিউজিল্যান্ড সিরিজ শেষে মাহমুদউল্লাহর উপস্থিতিতে নিঃসন্দেহে হারানো রং ফিরে পাবে দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক এই আসরটি।
** রোনালদো-মেসির সঙ্গে সাকিব-মুশফিক-মাশরাফি
সারাবাংলা/এমআরএফ/এমআরপি