ওরা আন্তর্জাতিক দল, আমরাও আন্তর্জাতিক দল: সুজন
১৬ মার্চ ২০১৯ ১৬:৪৫
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
বিশ্ব ক্রিকেটে নিউজিল্যান্ডের মতো বাংলাদেশও আন্তর্জাতিক একটি দল। আইসিসির পূর্ণ সদস্য হিসেবে নিউজিল্যান্ড যে মর্যাদার দাবীদার বাংলাদেশ তার কোনো অংশে কম নয়। হ্যাঁ, এটা হতে পারে ওদের ক্রিকেটের ইতিহাস, বাংলাদেশের চেয়ে পুরোনো এবং সমৃদ্ধ। তার মানে তো এই না কিউইদের কাণ্ডজ্ঞান থাকবে না এবং বৈষম্যমূলক আচরণ দেখাবে।
দেশটির নিরাপত্তার উদাসীনতায় কতগুলো প্রাণ অকালে ঝড়ে গেল! ঝড়ে যেতে পারতো তামিম, মুশফিক, রিয়াদ, তাইজুল, মিরাজের প্রাণও। অথচ তারা সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ সফরে এলে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা চেয়ে বসে। তাই বেজায় চটেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের সাবেক অধিনায়ক ও বিসিবির গেমস ডেভেলপমেন্ট চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ সুজন।
শনিবার (১৬ মার্চ) হোম অব ক্রিকেট মিরপুরে সুজন বলেন, ‘এখানে যখন ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া কিংবা নিউজিল্যান্ড আসে তখন পুরো সিকিউরিটি দল আসে। আমাদের হোটেল চেক করে, রাস্তাঘাট দেখে। কোন রাস্তা দিয়ে বাস আসবে এবং কোন দিক দিয়ে হোটেলে যাবে প্রত্যেকটি জিনিস দেখে। এমনকি প্রত্যেকটি ভেন্যুতেও যায়। আমার মনে হয় বাংলাদেশেরও এমন করা উচিৎ। কারণ ওরাও আন্তর্জাতিক দল, আমরাও আন্তর্জাতিক দল। নিজেদের মাটিতে যদি এমন একটি ঘটনা ঘটতে পারে, তাহলে বলা যায় বিশ্বের কোথাও এখন নিরাপত্তা নেই আসলে।’
ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভালের আল নূর মসজিদে এমন বিভীষিকার পরে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সফর নিয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতার পরামর্শও দিলেন এই টাইগার ম্যানেজার, ‘প্রতিটি সফরের আগেই আমাদের নিরাপত্তা দল যাওয়া উচিৎ বলে আমার মনে হয়। কোথায় কি আছে সব দেখা উচিৎ। আমার কাছে মনে হতো যে তৃতীয় বিশ্বের দেশ হিসেবে আমাদের ছোট করা হচ্ছে। তবে এটি আসলে ছোট করা নয়। ওরা এখানে আসবে সুতরাং নিরাপত্তা ঠিক আছে কিনা সেটি দেখবে।‘
তিনি যোগ করেন, ‘আমার মনে হয় বাকিরা ঠিক। আমাদের ক্রিকেটাররা আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। একজন তামিমকে খেলানো আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যাপার। বা একজন সাকিবকে খেলানো অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যেমন ওদের ইনজুরি কাটানোর জন্য কাজ করি, ভালো জায়গায় ট্রিটমেন্টে পাঠাই, তেমন আমাদের নিরাপত্তার বিষয়টিও অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং শক্তভাবে এই নিরাপত্তার বিষয়টি দেখা উচিৎ। সেটি আমরা যেখানেই দল পাঠাই না কেন। ইংল্যান্ড বা অস্ট্রেলিয়া যেখানেই হোক। সফরকারী একটি আন্তর্জাতিক দলের জন্য নূন্যতম নিরাপত্তা ব্যবস্থাও তারা রাখবে না! অতিথিদের হুমকির মুখে ফেলে দেবে!’
শুক্রবার (১৫ মার্চ) ক্রাইস্টচার্চে ঘটে গেল নারকীয় এক ঘটনা। হ্যাগলি ওভালের আল নূর মসজিদে সন্ত্রাসী হামালায় ৪৯ জন মানুষের প্রাণ যায়! তবে বড় বাঁচা বেঁচে গেছে দেশটিতে সফররত বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সদস্যরা। শেষ টেস্টের প্রস্তুতি শেষে টাইগারদের একটা গ্রুপ গিয়েছিল স্টেডিয়াম সংলগ্ন আল নূর মসজিদে জুম্মার নামাজ আদায় করতে। মসজিদের সামনে টিম বাস থেকে নামতেই সামনে পার্ক করা একটি গাড়ি থেকে বের হয়ে একজন মহিলা বলছিলেন, ‘ওদিকে যেও না।’ এর মাঝেই তামিম, রিয়াদ, মুশফিকরা গুলির আওয়াজ পান।
ভীত সন্ত্রস্ত বাংলাদেশ দল দ্রুত সেখান থেকে পার্ক হয়ে সোজা চলে যায় স্টেডিয়ামে। এরপর পুলিশি পাহাড়ায় চলে যায় টিম হোটেলে। এভাবেই অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যায় লাল সবুজের ক্রিকেটের যোদ্ধারা।
সারাবাংলা/এমআরএফ/এমআরপি