Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দলের বাড়তি নিরাপত্তা নিয়ে ভাবছে বিসিবি


১৮ মার্চ ২০১৯ ১৯:০৫

বঙ্গবন্ধুর ৯৯তম জন্মদিবস এবং শিশু দিবস উপলক্ষে রোববার (১৭ মার্চ) বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) বন্ধ ছিল। সোমবার (১৮ মার্চ) দুপুরে ক্রাইস্টচার্চ হামলায় নিহতদের রুহের মাগফিরাত এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়ার জন্য শুকরানা মিলাদের আয়োজন করা হয় বিসিবিতে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিসিবি প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন।

ক্রিকেটারদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে খোলামেলা আলাপ করেন বিসিবি সভাপতি। গণমাধ্যমের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি। খেলোয়াড়দের সাথে কী কথা হলো? এমন প্রশ্নের উত্তরে পাপন জানান, ‘না, ওই সব বিষয় নিয়ে খেলোয়াড়দের সাথে আর কোনো কথা হয়নি। ওরা ঠিক মতো এসেছে, শুকরিয়ার জন্য একটা দোয়া মাহফিল করা হলো। এ ছাড়া ক্রাইস্টচার্চে কতো মুসলমান মারা গেল, ওখানে বাংলাদেশিও ছিল পাঁচজন। তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করা হয়েছে। আমরা দোয়া করেছি। এটাই মূল উদ্দেশ্য ছিল। এছাড়া ক্রিকেটারদের মানসিক অবস্থা বোঝারও ব্যাপার ছিল। আসলে এর চেয়ে ভয়াবহ মানসিক অবস্থা তো আর হতে পারে না। তবে আমার বিশ্বাস ওরা দ্রুত মানসিক অবস্থার উন্নতি করতে পারবে।‘

বিজ্ঞাপন

ক্রিকেটারদের সাইকোলজিক্যাল কাউন্সেলিং নিয়ে কথা বলেন পাপন, এ রকম কিছু চিন্তা করছি। আমরা ওদের অবাজারবেশনে রেখেছি। তবে এ জন্যই যে মনোবিদ আসবে, তা নয়। আমরা ঠিক করেছি যে, সব মিলিয়ে, বিশ্বকাপ আছে সামনে… তার আগে একজন মনোবিদ এসে যদি ওদের সাথে সময় কাটায় তা দলের জন্যই ভালো। তখন যদি কারো মনে হয় কারো বিশেষ কোনো হেল্প দরকার, তাহলে অবশ্যই তা নেয়া হবে।

আরও নিরাপত্তার কথা ভেবে ভবিষ্যতে দলকে পাঠাবেন বলে জানান পাপন। তিনি আরও জানান, আগে রিয়েলিটি বুঝতে হবে। পাকিস্তানে নারী দল খেলতে যাওয়ার আগে আমরা কিন্তু নিরাপত্তার লোক পাঠিয়েছি। ডিজিএফআই থেকেও লোক পাঠিয়েছি। নিরাপত্তা বোঝার জন্য। পাকিস্তানে যেটা হয়েছে, বাংলাদেশের মতোই তারা নিরাপত্তা দিয়েছে। উপমহাদেশে নিরাপত্তা দেখি একরকম ভাবে। অন্য দেশে দেখেন, ক্রিকেট খেলার কথা বলি, সিকিউরিটি একদম ভিন্ন। আমাদের মতো সিকিউরিটি ব্যবস্থাপনা আমরা অন্য কোথাও দেখি না। আপনি যদি অস্ট্রেলিয়া যান, নিউজিল্যান্ড বা সাউথ আফ্রিকা যান, ওদের একেক জায়গায় একেক রকম। লন্ডনে যে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ছিল, সেখানেও সিকিউরিটি বলতে নাম মাত্র। সেখানে পুলিশ-বন্দুক-গাড়ি, এগুলো দেখাই যায় না। এটাই ওদের সিস্টেম। রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাও একই রকম।

বিজ্ঞাপন

সিঙ্গাপুরে আমার নিজের অভিজ্ঞতা বলি, ওদের রাষ্ট্রপতি যায় শুধু একটা মোটরসাইকেল নিয়ে। এটাই ওদের সিস্টেম। আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে মনে হয়েছে, আমরা যখন সিকিউরিটি নিয়ে কথা বলতে যাই, ওদের ধারণা আমাদের কেউ কিছু করবে না। যেনো যতো ভয় ওদের। আমাদের আবার মারবে কে, এ রকম একটা ভাব। ওরা মনে করে, সিকিউরিটিটা ওদের বেশি দরকার। মাথার মধ্যে ওদের এটাই চিন্তা। তবে এই ঘটনার পর সিকিউরিটি ইস্যু সব জায়গায় জোরদার করা হবে। আমাদের তরফ থেকে অবশ্যই, আগে যেটা বলতো তা মেনে নিয়েছি, চুক্তিতে বলা থাকে সব সিকিউরিটি ওরা দেখবে। ওদের উপর সব ছেড়ে দিতাম। কিন্তু এটা আর ছাড়বো না। সামনে আগের চেয়ে ভালো হবে সিকিউরিটি। যোগ করেন পাপন।

বিদেশের যে কোনো সফরে বাংলাদেশের একাধিক সদস্য নামাজ আদায় করতে মসজিদে যান। মুসলিম ক্রিকেটারদের জন্য নিজস্ব সিকিউরিটি পাঠানো হবে কি না-এমন প্রশ্নে পাপন বলেন, এটা আমাদের জন্য আরো একটা ইস্যু। বিদেশে সাধারণত সিকিউরিটি দেয় খেলার মাঠে, হোটেল থেকে মাঠে যাওয়া-আসা; এ ছাড়া কোথাও ব্যবস্থা থাকে না। তবে ওদের সাথে আগে বলে কিছু করা যায় কি না তা আমরা দেখবো। আমাদের এখান থেকে সিকিউরিটি যাবে কি না তা নির্ভর করবে আমরা কী পাচ্ছি, তার উপর। আগে তো বিষদ আলোচনা করতাম না। নিউজিল্যান্ডে তিন দিন ছিলাম, সেখানে কোনো পুলিশই দেখিনি। ওই দেশটাই হয়তো এমন। পুলিশ থাকলেও তারা মসজিদে পাহারা দেয়ার কথা চিন্তাই করেনি। কিন্তু নতুন ঘটনা চোখ খুলে দিয়েছে। এখন ব্যবস্থা নিতেই হবে। আমাদের যদি মনে হয় বিদেশ থেকে যা দিচ্ছে, তা যদি যথেষ্ট মনে না হয়, তাহলে অবশ্যই আমরা ব্যবস্থা নিবো। তবে এটা নির্ভর করবে তারা যা দিচ্ছে, তার উপর।

বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশ আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় একটি সিরিজ খেলতে যাবে। সেটি নিয়েও কথা বলেন পাপন। তিনি যোগ করেন, আমরা এখন যে কোনো দেশে যাওয়ার আগে নিরাপত্তা পরিকল্পনা চাইবো। সেটা ঠিক মতো প্রয়োগ হচ্ছে কি না, তা দেখতে কাউকে পাঠাবো। সিকিউরিটির লোকই পাঠানো হবে, ব্যাপারটা তা নয়। দেখা হবে ওরা যা বলছে, তা ঠিক মতো আছে কি না। এরপর যদি মনে হয়, তাহলে আমরা প্রয়োজন মতো ব্যবস্থা নিবো।

নিউজিল্যান্ড সিরিজে কী সিকিউরিটি দেয়ার কথা ছিল এমন প্রশ্নে বিসিবি সভাপতি জানান, তারা বলেছিল সব সিকিউরিটিই থাকবে। কিন্তু একেক দেশে সিকিউরিটি একেক রকম। যেমন একবার এক দেশে আমি সিকিউরিটির কাউকে না দেখে বললাম, কই তোমার দেশের কোনো সিকিউরিটির লোক তো দেখি না। তখন আমাকে বলেছিল যে, তুমি যদি দেখতেই পাও, তাহলে সেই সিকিউরিটি রেখে লাভ কী? আমি জানি না তারা দুষ্টুমিই করে কি না। এতোদিন ওদের কথাই তো বিশ্বাস করতাম। কিন্তু ভবিষ্যতে না বুঝে, না দেখে যাওয়া যাবে না।

** বিশ্বকাপে নিরাপত্তা নিয়ে কোনো শঙ্কা থাকবে না: আইসিসি

সারাবাংলা/এমআরএফ/এমআরপি

নিরাপত্তা বিসিবি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর