নিউজিল্যান্ডের লজ্জার দিন
২৮ মার্চ ২০১৯ ১৩:০২
টেস্ট ক্রিকেটে সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ ২৬। ১৯৫৫ সালের এই দিনে (২৮ মার্চ) ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে ২৬ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। সেটি ছিল টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে ৪০২ নম্বর ম্যাচ। অকল্যান্ডে নিজেদের মাঠে কিউইরা হেরেছিল ইনিংস ও ২০ রানের ব্যবধানে। হেরেছিল দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজে (২-০)। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে এখনও সেই দলীয় ২৬ রান যেকোনো দলের সর্বনিম্ন রানের স্কোর।
২৫ মার্চ শুরু হওয়া সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে নিউজিল্যান্ড ২০০ রান তুলে অলআউট হয়। নিজেদের প্রথম ইনিংসে ২৪৬ রান তুলে অলআউট হয় ইংল্যান্ড। ৪৬ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামে স্বাগতিক কিউইরা। ২৭ ওভারে মাত্র ২৬ রান করে নিউজিল্যান্ড।
২৫ মার্চ শুরু হলেও ২৭ মার্চ ছিল রেস্ট ডে। ২৮ মার্চ ম্যাচের ফল হয়ে যায়। তিনদিনেই শেষ হয় পাঁচদিনের ম্যাচ। টস জিতে প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে কিউই ওপেনার ব্রেট সাচলিফ আটটি বাউন্ডারিতে করেন ৪৯ রান। জন রেইডের ব্যাট থেকে আসে সর্বোচ্চ ৭৩ রান। ২৯ রান করেন দলপতি জিওফ রাবোন। ম্যাকগ্রেগর ১৫ রানে অপরাজিত থাকেন। ৮৮.৪ ওভারে ২০০ রান তুলে অলআউট হয় কিউইরা।
ইংল্যান্ডের ডানহাতি পেসার ব্রায়ান স্টাথাম ১৭.৪ ওভার বল করে ২৮ রানের বিনিময়ে তুলে নেন চারটি উইকেট। আরেক ডানহাতি পেসার বব অ্যাপ্লাইয়ার্ড ১৬ ওভারে ৩৮ রান খরচায় তুলে নেন তিনটি উইকেট। ডানহাতি পেসার ফ্রাঙ্ক টাইসন ১১ ওভারে ৪১ রানের বিনিময়ে পান দুটি উইকেট। জনি ওয়ারডেল ৩১ ওভারে ১৯টি মেডেন নিয়ে ৪৪ রান খরচায় তুলে নেন একটি উইকেট।
ইংল্যান্ডের দলপতি স্যার লেন হ্যাটন এই ম্যাচের পর আর কোনো ম্যাচ খেলেননি। নিজের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচে ব্যাট হাতে খেলেছিলেন দলের সর্বোচ্চ ইনিংস। করেছিলেন ৫৩ রান। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৮ রান করেন তিন নম্বরে নামা পিটার মে। ওপেনার রেগ সিম্পসন ২৩, টম গ্রাভেন ১৩, কলিন কাউড্রে ২২, ট্রেভর বেইলি ১৮ আর ফ্রাঙ্ক টাইসন অপরাজিত ২৭ রান করেন। ১১৯.১ ওভারে ২৪৬ রান তুলে অলআউট হয় ইংলিশরা।
নিউজিল্যান্ডের ডানহাতি লেগস্পিনার অ্যালেক্স মোইর ২৫.১ ওভারে ৬২ রান খরচায় পান ৫টি উইকেট। ডানহাতি পেসার জনি হায়েস ২৩ ওভারে ৭১ রানের বিনিময়ে তুলে নেন তিনটি উইকেট।
৪৬ রানে পিছিয়ে থেকে ব্যাটিংয়ে নামে নিউজিল্যান্ড। ওপেনার ব্রেট সাচলিফ ৩৩ বলে ১১ রান করেন। বাকি ১০ ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কের দেখা পাননি। কিউই পাঁচ ব্যাটসম্যান রানের খাতা খুলতে পারেননি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭ রান আসে দলপতি গ্যাবোনের ব্যাট থেকে।
ইংলিশ বোলার ব্রায়ান স্টাথাম ৯ ওভারে ৯ রান দিয়ে তিনটি উইকেট পান। অ্যাপ্লাইয়ার্ড ৬ ওভারে ৭ রান দিয়ে পান সর্বোচ্চ চারটি উইকেট। ফ্রাঙ্ক টাইসন ৭ ওভারে ১০ রান দিয়ে নেন দুটি উইকেট। প্রথম ইনিংসে মেডেনের পসরা সাজানো ওয়ারডেল দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ ওভার বল করে কোনো রানই দেননি, নিয়েছিলেন একটি উইকেট।
উল্লেখ্য, টেস্টের সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ (২৬) নিউজিল্যান্ডের হলেও পরের চারটি স্থানেই আছে দক্ষিণ আফ্রিকার নাম। ১৮৯৬ সালে পোর্ট এলিজাবেথে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রোটিয়ারা ৩০ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল। ১৯২৪ সালে বার্মিংহামে ইংলিশদের বিপক্ষে আরও একবার ৩০ রানে অলআউট হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। ১৮৯৯ সালে কেপটাউনে ইংলিশদের বিপক্ষে ৩৫ এবং ১৯৩২ সালে মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩৬ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ৩৬ রানে অলআউট হওয়ার রেকর্ড আছে অস্ট্রেলিয়ার। ১৯০২ সালে ইংলিশদের বিপক্ষে এমন লজ্জা পেয়েছিল অজিরা।
নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ ৪৩। ২০১৮ সালে নর্থ সাউন্ডে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশ ৪৩ রানে অলআউট হয়। তবে, বাংলাদেশের উপরে আছে দক্ষিণ আফ্রিকা (৪৩), ভারত (৪২), অস্ট্রেলিয়া (৪২) এবং নিউজিল্যান্ড (৪২)।
** হত্যার হুমকি পেয়েছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী
সারাবাংলা/এমআরপি