বাফুফের ‘পরিকল্পনাহীনতার’ গ্যাড়াকলে বাংলাদেশ
৮ এপ্রিল ২০১৯ ২০:৪২
কাতার বিশ্বকাপ প্রাক বাছাইপর্ব ডিঙিয়ে মূলপর্বে পা রাখতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। সম্প্রতি ফিফার প্রকাশিত র্যাংকিংয়ে প্রাক বাছাইপর্বের নিয়তি চূড়ান্ত হয়ে গেছে। এখন অপেক্ষাটা ১৭ এপ্রিল নিয়ে। এ দিন কোন দলের সঙ্গে প্রাক বাছাইপর্ব খেলবে বাংলাদেশ, সেটার দিকেই পুরো দেশের ফুটবল সমর্থকরা তাকিয়ে। তবে এখানে একটা ‘কিন্তু’ রয়ে গেছে।
‘কিন্তুটা’ হলো এ বছর অন্তত ১০টি ম্যাচ খেলার পরিকল্পনা করেছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলেও সত্যি- কম্বোডিয়া ম্যাচের পর জাতীয় ফুটবল দলের পরবর্তী প্রস্তুতি নিয়ে কোনও নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই বাফুফের।
সবাই চেয়ে আছে ১৭ তারিখের দিকেই। প্রাক বাছাইপর্বে এশিয়ান অঞ্চলের প্রথম ৩৪ দল সরাসরি দ্বিতীয় রাউন্ড খেলবে। বাংলাদেশের অবস্থান ৪১ এ। সঙ্গে এশিয়ার শেষ দিকে থেকে সাতে অবস্থান করায় মালয়েশিয়া, কম্বোডিয়া, ম্যাকাও, লাওস, ভুটান ও মঙ্গোলিয়ার যে কোনো একটি দেশই হতে যাচ্ছে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ। আর তাদের একটি দলের সঙ্গেই খেলতে হচ্ছে প্রাক বাছাইপর্ব। আবার বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচটি খেলতে হবে অ্যাওয়ে ম্যাচ। হারলেই আবারও নির্বাসনে যেতে হতে পারে লাল-সবুজ জার্সিধারীদের। কারণ এর পরে বাংলাদেশের কোন শিডিউল ম্যাচ নেই।
তাই প্রস্তুতিটাও পরিকল্পিত হওয়া দরকার ছিল বাফুফের। বছরের শুরুতে যেখানে বাফুফে থেকে বলা হয়েছিল এ বছর অন্তত ১০টা ম্যাচ খেলবে জামাল-সুফিলরা, সেখানে আপাতত পরিকল্পনা নেই দেশের সর্বোচ্চ ফুটবল অভিভাবকের। তারা জানে না এর মধ্যে কি করতে হবে।
যেখানে প্রাক বাছাইপর্ব পার হতে হবে পাকিস্তানকেও। কিন্তু তারা প্রস্তুতির জন্য অন্তত ৮টি ম্যাচ নিশ্চিত করে ফেলেছে। সেখানেই পরিকল্পনার ঘাটতি স্পষ্ট বাফুফের। যার ফলে ভুগতে হতে পারে জামাল-সুফিলদের। কারণ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিজ্ঞতার ঘাটতি প্রাক বাছাইপর্বের ম্যাচে প্রভাব ফেলার জন্য যথেষ্ট।
অন্তত জাতীয় দলের সাবেক তারকা ফুটবল শেখ আসলাম এমনটাই মনে করছেন, ‘বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ম্যাচগুলো দেখছি। ভালো খেলছে ছেলেরা। মনোবল প্রচণ্ড শক্তিশালী। কিন্তু অভিজ্ঞতার অভাবে ম্যাচগুলো জিতে আসতে পারছে না তারা। বাফুফের উচিৎ পূর্ণ পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়ন। যদিও দীর্ঘমেয়াদি কোন পরিকল্পনা এখনও নিতে পারেনি ফেডারেশন।’
এ বিষয় নিয়ে কথা হয় ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইমের সঙ্গে। এ বছর ১০ ম্যাচের পরিকল্পনা নিয়ে সারাবাংলাকে তিনি জানান, ‘আপাতত ১৭ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা করছি। প্রাক বাছাইয়ে কোন দল প্রতিপক্ষ হচ্ছে সেটাই আমাদের চিন্তা। আপাতত কোনো পরিকল্পনা নেই। আগে প্রতিপক্ষ দেখি। তারপর সব নির্ধারণ করা হবে।’
এদিকে এর মাঝে প্রধান কোচ জেমি ডে’র চুক্তি শেষ হতে চলেছে মে’র প্রথম সপ্তাহে। চু্ক্তি নবায়ন করার বিষয়ে আশাবাদী ফেডারেশন। ১৭ এপ্রিল ঢাকায় পা রেখে জেমির সঙ্গে আলোচনায় বসবে ন্যাশনাল ফুটবল টিমস কমিটি। এসবের নিশ্চয়তা-অনিশ্চয়তার মধ্যেই গ্যাড়াকলে ফুটবলাররা। তাদের পরিণত করে মাঠে নামানোর প্রস্তুতির ভার নিতে হবে বাফুফেকেই। পরিকল্পিত প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে ফেডারেশনকে এমনটা আশা দেশের ফুটবল সংশ্লিষ্টদের।
সারাবাংলা/জেএইচ/এমআরপি
** অবশেষে যাত্রা শুরু করলো বাফুফের ফুটবল একাডেমি