ইংলিশ লিগ স্প্যানিশ লিগের জন্য হুমকি
১৫ এপ্রিল ২০১৯ ১৪:৫৩
ইউরোপিয়ান শীর্ষ লিগে আধিপত্য বিস্তারের দিক দিয়ে এগিয়ে জার্মানির বুন্দেসলিগার দল বায়ার্ন মিউনিখ, ইতালির সিরি আর দল জুভেন্টাস, ফরাসি লিগ ওয়ানের দল পিএসজি। ফুটবল বোদ্ধাদের মতে, ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের মতো জমজমাট আসর বিশ্বের আর কোথাও নেই। যদিও অনেকেই এগিয়ে রাখেন স্পেনের লা লিগাকে। বেশির ভাগই বলে উঠেন, ইংলিশ লিগের কথা।
রিয়াল মাদ্রিদের ফরাসি কোচ জিনেদিন জিদান মনে করেন, ইউরোপিয়ান শীর্ষ সারির লিগে লা লিগা বিপদের মুখে নেই কিংবা ধ্বংসের দিকেও যাচ্ছে না। তবে তিনি মনে করেন, ইংলিশ লিগ কিছুটা হলেও স্প্যানিশ লিগকে হুমকি দিয়ে রাখছে।
গত মৌসুমে রিয়ালের সেরা অস্ত্র ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো স্প্যানিশ ক্লাবটি ছেড়ে চলে যান ইতালিয়ান ক্লাব জুভেন্টাসে। তার আগের মৌসুমে ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার নেইমার স্প্যানিশ ক্লাব বার্সা ছেড়ে চলে যান ফরাসি ক্লাব পিএসজিতে। এদিকে, ইংলিশ ক্লাব চেলসি থেকে এডেন হ্যাজার্ড, ফরাসি ক্লাব পিএসজি থেকে নেইমার-এমবাপে কিংবা লিভারপুল থেকে মোহামেদ সালাহকে স্প্যানিশ ক্লাবগুলো নিয়ে আসতে চাইলেও বার বার ব্যর্থ হয়েছে। ওদিকে, নেইমার চলে যাবার পর বার্সা ইংলিশ ক্লাব লিভারপুল থেকে আরেক ব্রাজিলিয়ান তারকা কুতিনহোকে আনলেও এই মৌসুম শেষেই তাকে ছেড়ে দিতে প্রস্তুত। কারণটাও স্বাভাবিক, কুতিনহো লিভারপুলে যা করেছেন সেভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি লা লিগায়। রোনালদো-নেইমাররা চলে যাওয়ায় স্প্যানিশ লিগ কিছুটা হলেও নিজেদের উজ্জ্বলতা হারিয়েছে।
এদিকে, ইউরোপিয়ান শীর্ষ সারির লিগে স্প্যানিশ লিগ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে সেটি নিয়ে কথা বলেছেন জিদান। রিয়াল কোচ জানান, আমি মনে করি না লা লিগা ইউরোপের শীর্ষ লিগে বিপদের সম্মুখীন। তবে, এটা ঠিক যে ইংলিশ লিগ লা লিগাকে হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে। ইংলিশ লিগ কিছুটা হলেও লা লিগাকে পিছিয়ে রাখছে। আপনারা খেয়াল করলে দেখবেন প্রতি মৌসুমে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের তিন থেকে চারটি ক্লাব ইউরোপ সেরার জন্য লড়াই করে। একই দেশের চারটি ক্লাব চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সুযোগ করে নিলে সেটি অবশ্যই অনেক বড় কিছু হয়ে দাঁড়ায়। এটা ইংলিশ ক্লাবগুলোর জন্যই সম্ভব হয়।
জিদান আরও জানান, এটা সম্ভব কারণ, সেখানে ফুটবলের উন্নতির গ্রাফটা উর্ধ্বমুখী। সেখানে ফুটবলের গ্রামার শিখানো হয়। এটা আমাকে কিন্তু অবাক করে না। তারা তো আর এমনিতেই ইউরোপ সেরার সুযোগ করে নেয় না। ওদের ক্লাবগুলো প্রচুর পরিশ্রম করে। কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলে না। ইংলিশ ক্লাবগুলো অভিজ্ঞ কোচদের সুযোগ করে দেয়। কোচরা তাদের দক্ষতা প্রমাণের সুযোগ পায়। খেলোয়াড়রা দক্ষ কোচের অধীনে আরও ক্ষুরধার হয়ে ওঠে।
ইংলিশ লিগে লিভারপুল, ম্যানচেস্টার সিটি, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, আর্সেনাল, চেলসি, টটেনহ্যাম এই ছয়টি ক্লাব প্রতি মৌসুমে দারুণ সব ম্যাচ উপহার দিয়ে আসছে। দলগুলো কেউ কাউকে একবিন্দু ছাড় দিচ্ছে না। মৌসুম শেষের আগে বলা মুশকিল কে হবে চ্যাম্পিয়ন। লা লিগায় আগেই বলে দেওয়া যায় বার্সা নয়তো রিয়াল কে হবে চ্যাম্পিয়ন। জুভেন্টাস, পিএসজি, বায়ার্ন মিউনিখকে মৌসুম শুরুর আগেই বলে দিতে পারেন চ্যাম্পিয়ন দল হিসেবে। কিন্তু ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে সেটা আগ বাড়িয়ে বলা মানে ফুটবল নিয়ে মুর্খতার প্রমাণ দেওয়া।
জিদান যোগ করেন, আমি কী কারণে এমনটি বলেছি সেটা নিশ্চয়ই আপনারা (সংবাদ কর্মী) বুঝতে পেরেছেন। তারপরও আমি বলবো স্প্যানিশ লিগ তার জায়গাতেই আছে। লা লিগার নিজস্ব একটা স্টাইল আছে। এই মৌসুমে আমার দল রিয়াল বিশ্ব ফুটবল থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। আশা করি পরের মৌসুমে লা লিগার ক্লাবগুলো নিজেদের সেরাটা দেখিয়ে দিতে পারবে।
এই মৌসুমে একের পর এক অঘটনের শিকার রিয়াল কোপা দেল রে থেকে ছিটকে পড়ে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সার বিপক্ষে টানা দুই এল ক্লাসিকোতে নিজেদের মাঠেই হেরে বসে রিয়াল। লা লিগায় আপাতত তিন নম্বরে, লিগের শিরোপা জেতা মোটামুটি অসম্ভব। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নেদারল্যান্ডসের ক্লাব আয়াক্সের বিপক্ষে হেরে বিদায় নিয়েছে কোয়ার্টার ফাইনালের আগেই।
সারাবাংলা/এমআরপি