বিশ্বকাপকে প্রাধান্য দিয়ে রশিদ-সাঈদ পরিষদের ইশতেহার
২৫ এপ্রিল ২০১৯ ২০:২৪
ঢাকা: দেশের হকি পাড়ায় নির্বাচনের ডামাডোল। মাঝে দফায় দফায় নির্বাচন অজুহাত, বয়কট বা স্থগিত হওয়ায় কিছুটা স্থবির হলেও এখন ২৯ এপ্রিলকে কেন্দ্র করেই যেন সক্রীয় প্রার্থীসহ ভোটাররা। ১৩ বছর পর হকিতে ভোটের নির্বাচন বলে কথা!
আর বাকী আছে চারদিন। এর মধ্যে কোনও ‘অজুহাত’ তৈরি না হলে নির্বাচন গড়াচ্ছে ঠিক সময়েই। যদিও নির্বাচনের কেন্দ্র নিয়ে এখনও দ্বিমত আছে। তবে, সবকিছু নিয়েই ৮৪ ভোটার ২০০৫ সালের পর এই প্রথম ব্যালট পেপারে সিল মারার সুযোগ পাচ্ছেন।
এমন অবস্থার মধ্যে আজ বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাজধানীর এক হোটেলে এর মধ্যে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে বাঁচাও হকি পরিষদ। সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মমিনুল হক সাঈদ ও সহ-সভাপতি পদে দাঁড়ানো রশিদ শিকদারের প্যানেলই মূলত এই বাঁচাও হকি পরিষদ।
২৫ জনের প্যানেল দিয়েছে এই পরিষদ। প্যানেলের পরিচিতি পর্বসহ এসময় ইশতেহার ঘোষণা করা হয়েছে।
২০২৬ সালে হকি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ নিশ্চিতসহ এশিয়া কাপের সেমি ফাইনাল খেলাকে প্রাধান্য দিয়ে ইশতেহার দিয়েছে বাঁচাও হকি পরিষদ।
পরিষদের ইশতেহারে বলা হয়েছে, বর্তমানে মাঠ ও মাঠের বাইরে দেশের হকির অবস্থান নাজুক। স্বাভাবিকভাবেই তাতে হকি প্রেমিরা ভীষণভাবে হতাশাগ্রস্থ। এমন পরিস্থিতি থেকে হকিকে মুক্ত করতে আজ আমরা একতাবদ্ধ। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস সম্মানিত কাউন্সিলরদের ভোটে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের আসন্ন নির্বাচনে আমরা জয়ী হবো। নির্বাচনে জয়ী হলে বাস্তবভিত্তিক একটি পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে আমরা দেশের হকিকে নতুন রূপ দিতে বদ্ধপরিকর।
‘আমাদের সকল কাজের মূলে থাকবে ২০২৬ সালে বিশ্বকাপ হকি এবং ২০২৫ সালে এশিয়ান হকির সেমি ফাইনাল খেলার জন্য বাংলাদেশ দলকে প্রস্তুত করা।
পাশাপাশি আমরা নির্বাচিত হলে আধুনিক ক্রীড়া ব্যবস্থাপনার আলোকে হকি ফেডারেশনের সকল কার্যক্রম পরিচালিত করা হবে। ফেডারেশনের সকল কর্মসূচি সমন্বিতভাবে কয়েকটি কমিশনের মাধ্যমে হবে। একই সঙ্গে ফোডারেশনের সাধারণ পরিষদের সদস্য ও সাবেক হকি খেলোয়াড় ও সংগঠকদের যোগ্যতা অনুযায়ী সকল কার্যক্রমে জড়িত করা হবে।
ফেডারেশন হকি কার্যক্রমের ওপর ভিত্তি করে প্রথম চার বছরের মধ্যে কমপক্ষে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দুটি বিভাগে টার্ফ স্থাপনার জন্য সার্বিক প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হবে। প্রতিবছর সাধারণ পরিষদের সভার (এজিএম) আয়োজন নিশ্চিত করার কথাও বলা হয়েছে ইশতেহারে।
বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের ভবিষ্যৎ কার্যক্রমপরিচালনা করার জন্য পাঁচটি কমিশন গঠন করা হবে- ০১. ডেভলপমেন্ট কমিশন, ০২. হাই পারফরমেন্স কমিশন, ০৩. কম্পিটিশন কমিশন, ০৪. ট্রেনিং অ্যান্ড মনিটরিং কমিশন ০৫. অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কমিশন।
নির্বাচিত হতে পারলে আগামি চার বছর হকির উন্নয়নে বিরাট ভুমিকা রাখতে পারবে বাঁচাও হকি পরিষদ। সঙ্গে নির্বাচিত নাহলেও হকির উন্নয়নে পাশে থাকবে বলে জানান সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মমিনুল হক সাঈদ।
পাঁচ কমিশনের পাঁচ প্যারায় অনেকগুলো বিষয় উল্লেখ করেছে এই পরিষদের ইশতেহার। প্রান্তিক পর্যায়ের হকির উন্নয়নসহ নারী হকি নিয়েও দেয়া হয়েছে ইশতেহারে। অলিম্পিক দলসহ জাতীয় দলের কার্যক্রম নিয়ে দেয়া হয়েছে এই ইশতেহারে। প্রত্যেকবছর একটি ক্যালেন্ডার দেয়ার অঙ্গিকার করা হয়েছে। সব বিভাগের হকি লিগসহ শহীদ স্মৃতি হকি লিগের আয়োজনের কথা বলা হয়েছে এতে। বিশ্বমানের দলগুলো নিয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক গোল্ড কাপ আয়োজনের বিষয়টি এসেছে এই ইশতেহারে। ফ্যাঞ্জাইজিভিত্তিক হকি লিগ বা ‘বিপিএল’ করার কথাও এসেছে ইশতেহারে।
কোচের সংকট কমাতে প্রশিক্ষণের কথা বলা হয়েছে। তাদের নিয়ে প্রান্তিক পর্যায়ে কাজ করার কথা বলা হয়েছে। সঙ্গে হকিতে একাডেমি গড়ার কথাও বলা হয়েছে ইশতেহারে। ডিজিটাল প্রশাসনের পাশাপাশি বাৎসরিক ক্রীড়া সূচি দেয়ার অঙ্গিকার দেয়া হয়েছে এখানে।
নির্বাচনে জয়ী না হলে হকির উন্নয়নে থাকবেন কি না প্রশ্নে সবসময় পাশে থাকার অঙ্গিকার করেছেন মমিনুল হক সাঈদ। ইশতেহার অনুষ্ঠানে সাবেক হকি খেলোয়াড়রাও উপস্থিত ছিলেন। বিভিন্ন জেলার হকির কাউন্সিলররা ছিলেন অনুষ্ঠানে।
এদিকে এখনও কোনও পরিষদ গঠন করে ইশতেহার দিতে পারেনি সাজেক-সাদেক প্যানেল। তবে, এবার অধিকাংশ কাউন্সিলররা চাইছে ভোটের নির্বাচন হোক। সবকিছু ঠিক থাকলে ২৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হচ্ছে ভোটের নির্বাচন।
সারাবাংলা/জেএইচ
বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন (বাহফে) হকির নির্বাচন