অনূর্ধ্ব-১৯ দলে থাকতেই জাতীয় দলের কড়া নেড়েছিলেন অধিনায়ক সাইফ হাসান। সেটা আজ থেকে দুই বছর আগের কথা। বাংলাদেশ ক্রিকেটের নির্বাচকেরাও সেসময় তাকে নিয়ে জাতীয় দলে ভাবতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু হঠাৎই ছন্দপতন হলো এই তরুণ ব্যাটসম্যানের। গত দুই বছর ঘরোয়া ক্রিকেট এবং গেল বছর ‘এ’ দলের হয়ে পারফরম্যান্স লেভেল আপ টু দ্য মার্ক না হওয়ায় লাল সবুজের দরজা তার জন্য বন্ধ হয়ে যায়। প্রলম্বিত হয় পথ। সতীর্থ-বন্ধু নাজমুল হোসেন শান্ত’র জায়গা হলেও তার জায়গা হয় না।
তবে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের সদ্য সমাপ্ত মৌসুমে উড়ন্ত পারফরম্যান্স দেখিয়ে আবার কড়া নাড়তে শুরু করেছেন এই ওপেনার। আশার কথা হলো এবার তা খুলে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশ প্রবল। আর সেটা যে কোনো সময়।
লিগের ২০১৮-২০১৯ মৌসুমে দেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান করেছেন ২০ বছর বয়সী ডানহাতি ব্যাটসম্যান সাইফ হাসান। ১৬ ম্যাচে ৩ সেঞ্চুরি ও ৪ ফিফটিতে তার রান সংখ্যা ৮১৪। কাজেই বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলে খেলা এখন তার জন্য সময়ের ব্যাপার বলে জানালেন টাইগার নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন, ‘সাইফকে নিয়ে আমরা বেশ কিছু দিন যাবৎই চিন্তা করছি। গত দুই-তিন বছর তাকে আমরা একাডেমিতে রেখেছি। আমি যদি ভুল না করি শান্ত’র (নাজমুল হোসেন শান্ত) আগেই জাতীয় দলের জন্য সাইফের নাম এসেছিল। কিন্তু মাঝখানে দুইটা মৌসুম সে ভালো করেনি।’
বাশার আরও জানান, গত বছর যখন শ্রীলঙ্কা ‘এ’ দল এসেছিল তখন সাইফ খেলেছিল। আপনি জানেন ‘এ’ দলে যারা খেলে তারা দেশের দ্বিতীয় সারির লাইন আপের ক্রিকেটার। সাইফ আমাদের সামনে আছে। আপনি খেয়াল করলে দেখবেন, গত দুই বছর ধরে তাকে আমরা প্রস্তুত করছি। সে এ বছর ভালো করেছে। আমরা মূলত এটাই তার কাছে চাচ্ছিলাম। ওজন কমিয়েছে এবং সবচেয়ে ভালো দিক হলো সাইফ অনেক রান করেছে।
সাকিব-তামিমদের সতীর্থ হতে সাইফও মুখিয়ে আছেন। তবে তিনি ভালো করেই জানেন কাজটি মোটেই সহজ নয়। প্রিমিয়ার লিগের ব্যাট হাতে দেশ সেরা হলেও আসন্ন টুর্নামেন্টগুলোতেও তাকে টপ অব দ্য টেবিল হতে হবে।
সাইফ সারাবাংলা.নেটকে জানালেন, ‘সবারই ইচ্ছে থাকে জাতীয় দলে খেলার। কিন্তু এখনো আমি ফোকাস করছি যখনই যে টুর্নামেন্ট আসবে সেখানে ভালো খেলার। গত টুর্নামেন্টটা আমার জন্য অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিল, কারণ শেষ টুর্নামেন্টগুলো ভালো হয়নি। ইমার্জিং কাপে গিয়েছিলাম ওখানে ম্যাচ পাইনি। তার মানে অলওভার পিছিয়ে যাচ্ছিলাম। টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টটা ভালো গিয়েছে, প্রিমিয়ার লিগটাও ভালো গিয়েছে। সামনে যে খেলাগুলো আছে, ওখানে যদি ভালো খেলি অবশ্যই জাতীয় দলে সুযোগ আসবে।’
কিন্তু শুধু দলে সুযোগ এলেই তো আর হবে না, একাদশেও জায়গা চাই। আর বিপত্তিটি মূলত এখানেই। কেননা সাইফ ব্যাটিং করেন ওপেনিংয়ে, যেখানে তামিম-লিটন-সৌম্য বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টের অটোম্যাটিক চয়েস। আছেন ইমরুল-শান্ত ও সাদমানসহ আরো বেশ কয়েকজন। কাজেই মোটামুটি অসাধ্যই তাকে সাধন করতে হবে। বিষয়ট সাইফও ভালো করেই জানেন। তবে চ্যালেঞ্জটি তিনি নিচ্ছেন।
‘কয়েক বছর আগেও সবাই বলছিল বাংলাদেশে ওপেনার নেই। এখন কিন্তু প্রতিযোগিতাটা অনেক বেড়ে গেছে। একটা অর্ডারেই দেখা গেছে ১০-১৫ জন আছে। অনেক চ্যালেঞ্জিং হয়ে গেছে, অনেক প্রতিযোগিতা বেড়ে গেছে। ধারাবাহিক পারফরম্যান্স ছাড়া বিকল্প নেই। যত পারফরম্যান্স করা যায় নিজের নামের পাশে যত রান রাখা যায়, ততই ভালো। এখন শুধুই পারফরম্যান্সে ফোকাস করতে হবে। পারফরম্যান্সের কোনো বিকল্প নেই।’ যোগ করেন সাইফ।
সারাবাংলা/এমআরএফ/এমআরপি