নিয়তির সাথে আপোষ করতে শিখেছেন ইমরুল
১৪ মে ২০১৯ ১৬:১২
গেল এশিয়া কাপের কথা মনে আছে? প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পাওয়া বড় জয়ের পর আফগানিস্তান ও ভারতের কাছে টানা দুই হারে গোটা টাইগার শিবিরের যখন ছন্নছাড়া দশা, ঠিক তখন দেশ থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে উড়িয়ে নেওয়া হয় ইমরুল কায়েস ও সৌম্য সরকারকে। ছন্নছাড়া হবেই বা না কেন? বাঁহাতে ইনজুরি নিয়ে ততদিনে দেশে ফিরেছেনে দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল। সাকিবতো আঙুলের চোটে পড়ে শুরু থেকেই নেই।
ইমরুলের উড়ে যাওয়ায় কাজও হলো বিস্তর। গিয়েই দলের ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন। ৮৯ বলে অপরাজিত ৭২ রানের ইনিংস খেলে টিম ম্যানেজমেন্টর আস্থার প্রতিদান দিয়েছিলেন শতভাগ। তার এই রানে ভর করেই আফগানদের হারের গ্লানি ফিরিয়ে দেয় বাংলাদেশ। উল্লেখ করার মতো বিষয় হলো, ওই ম্যাচে তিনি তার প্রিয় অর্ডারে খেলতে পারেননি। খেলেছিলেন ৬ নম্বরে। ওই ম্যাচ দিয়েই ৬ মাস পরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেছিলেন এই টাইগার টপ অর্ডার।
যা হোক ইমরুলের ব্যাটে পাওয়া ওই জয়টিই টুর্নামেন্টে স্টিভ রোডস শিষ্যদের বাঁক বদলে দিয়েছিল। হারিয়ে যাওয়া আত্মবিশ্বাস ফিরেছিল লাল সবুজের শিবিরে। যাতে উজ্জীবিত হয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তানকে হারিয়ে টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠে যায় মাশরাফি ও তার দল।
আসন্ন বিশ্বকাপেও যদি এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে? ১৫ সদস্যের স্কোয়াডে ঠাঁই না মেলা অভিজ্ঞ ইমরুলকে যদি এশিয়া কাপের মতো বৈশ্বিক আসরের মাঝ পথেও উড়িয়ে নেওয়া হয়? অপমানিত বোধ করবেন? যদি এমন হয় টিম কম্বিনেশনের কারণে এখানেও তাকে নিচে ব্যাটিং করতে হয়?
না, টিম ম্যানেজমেন্টর এমন বিমাতাসুলভ আচরণে তিনি অপমানিত বোধ করবেন না। তার কোনা সমস্যাও নেই। কেননা নিয়তির আপোষ করতে তিনি শিখে গেছেন। মঙ্গলবার (১৪ মে) হোম অব ক্রিকেট মিরপুরে সে কথাই জানালেন।
ইমরুল জানান, ‘না, আমার কোনো সমস্যা নেই। এশিয়া কাপে খেলেছিলাম হঠাৎ করে গিয়ে, এটা আমিও জানি সবাই জানে। এটা আসলে কঠিন ছিল। তার আগে আমি প্রায় ৬ মাস আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলিনি। যদি সুযোগ আসে যেকোনো কন্ডিশনে যে কোনো পরিস্থিতিতে খেলার জন্য টিম আমাকে মনে করে আমি প্রস্তুত। সমস্যা নেই।’
শুধু এশিয়া কাপে কেন? ২০১৫ বিশ্বকাপেও মূল স্কোয়াডে ইমরুলের জায়গা হয়নি। ওই আসরে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে এনামুল হক বিজয় চোটে পড়লে তার বদলি হিসেবে তাকে দেশ থেকে উড়িয়ে নেওয়া হয়। বড় বড় আসরে বেদনাদায়ক পরিণতি বরণ করে নেওয়া ইমরুলকে তৈরি থাকতে হয় দ্বিপাক্ষিক সিরিজেও। আবার এক ম্যাচে পান থেকে চুন খসলেই পরের ম্যাচে তিনি নেই! এমনকি পরের সিরিজেও! বিষয়টি এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে জাতীয় দলে তার জায়গাটি কখনোই স্থায়ী নয়। তবে তাতে মোটেই হতাশাগ্রস্থ নন তিনি। বরং এই আসা যাওয়ার মাঝেই তিনি অনেক কিছু শিখছেন।
ইমরুল যোগ করেন, ‘যদি বলি তাই (ইতিবাচক), আসলে তাই। একটা জায়গায় যখন কেউ আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকে, অনেক কিছু দেখা যায়, ওই জায়গা থেকে অনেক কিছু উপলব্ধি করা যায়। আমার ক্ষেত্রে হয়তো ওটাই আমি বুঝেছি। অনেক কিছুই শিখি যখন দলের বাইরে থাকি, অনেক কিছু উপলব্ধি করতে পারি। আবার যখন দলে যাই ওই জিনিসটা অ্যাপ্লাই করতে পারি। তো আমার কাছে মনে হয় যে এটা আমার কাছে আর খারাপ লাগে না, ভালোই লাগে।’
সারাবাংলা/এমআরএফ/এমআরপি