Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘পয়া’ ইংল্যান্ডে বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন সুমনের


২৫ মে ২০১৯ ১৪:৫৯

কার্ডিফ থেকে: লন্ডনের পথে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বাংলাদেশ বিমানের বিজি ০০০১ ফ্লাইটটি তখন ইরানের আকাশে। বিকট গর্জনে সাদা-কালো মেঘ ভেদ করে গন্তব্যে এগিয়ে চলেছে আমাদের উড়ান। সিটের সামনে থ্রিডি ম্যাপ দেখাচ্ছিল হিথ্রো বিমানবন্দরে অবতরণ করতে আরো সাড়ে ৭ ঘণ্টারও বেশি সময় লাগবে। অন বোর্ড প্রায় সবারই বোরিং সময় কাটছে। ব্যতিক্রম ছিলাম না আমরা বিশ্বকাপের সংবাদ সংগ্রহে বাংলাদেশ থেকে উড়াল দেওয়া তিন সংবাদকর্মীও।

বিজ্ঞাপন

সাড়ে ১০ ঘণ্টার মাত্র ৩ ঘণ্টা কাটিয়েছি, বাদ বাকি সময় কাটবে কী করে? নিজেদের মধ্যে কথায়, আড্ডায় কতক্ষণই বা কাটানো যায়? তাছাড়া বিমান টেক অফের পর থেকেই তো আড্ডা দিচ্ছি। আর কত? ক্রমশই যেন বিমানে সময়গুলো বিবর্ণ ও অসহনীয় হয়ে উঠছিল, অপেক্ষা বাড়ছিল গন্তব্যের। ঠিক সেই মুহূর্তে বিজনেস ক্লাস ছেড়ে আমাদের ইকোনমি ক্লাসে হাজির বাংলাদেশ ক্রিকেটের সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমান নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন।

হাবিবুল বাশার মূলত ইংল্যান্ডে যাচ্ছেন বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের পর্যবেক্ষক হিসেবে। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু ১৪ জুন এলে তিনি দেশে ফিরে যাবেন। হাবিবুল বাশার স্বভাবই উচ্ছ্বল, প্রাণবন্ত। অপেক্ষাকৃত নিচু স্বরে হাসিমাখা মুখে মজার মজার কথায় আড্ডা মাতিয়ে তুলতে তার জুরি মেলা ভার। সেই তিনিই আমাদের ‘সময় যেন কাটে না’ মুহূর্তে ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ন হলেন। তার প্রাণবন্ত আড্ডায় বর্ণিল হয়ে উঠল আমাদের বিবর্ণ সময়।

আড্ডার এক ফাঁকে কিছুটা সিরিয়াস হয়ে বলি, চলেন বিশ্বকাপ নিয়ে আপনার সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলা যাক। একটু থেমে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, এখনই? বললাম, হ্যাঁ। কেন আপত্তি আছে? পাল্টা প্রশ্ন শুনে নিজেকে সামলে নিয়ে বললেন, না না। বলেন কী প্রশ্ন? আমার প্রশ্ন ছিল, সেই ইংল্যান্ডে এবার বিশ্বকাপের আসর বসতে যাচ্ছে, যেখানে ১৯৯৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারিয়ে বিশ্বক্রিকেটে বাংলাদেশ নিজেদের দাপুটে আগমনীর জানান দিয়েছিল।

বিজ্ঞাপন

এবার কী হতে যাচ্ছে? বাংলাদেশকে দুহাত ভরে দেওয়া ইংল্যান্ড এবারও অভাবনীয় কিছু উপহার দেবে? দ্বিমত পোষণ করলেন না সুমন, ‘দেখুন কোনো একটা কারণে বাংলাদেশ যখনই ইংল্যান্ডে আসে, ভালো খেলে। আমাদের ইংল্যান্ডের স্মৃতি সবসময়ই মধুর। ১৯৮৯ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ দলর হয়ে খেলতে এসেছিলাম। ওই সফরে কিন্তু ভালো করেছিলাম। অথচ ভালো করার কথা না। একদম আলাদা কন্ডিশন, আলাদা উইকেট। কিন্তু আমরা খুব ভালো খেলেছিলাম। এরপর থেকে বাংলাদেশ যখনই সেখানে খেলেছে, খারাপ কিন্তু খেলেনি কখনো।’

‘১৯৯৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ খুবই ভালো খেলেছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খুব ভালো খেলেছে। ২০০৫ এ কিন্তু আমাদের খুব ভালো একটা স্মৃতি আছে…, তখনকার অজেয় অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছিলাম। তো কারণটা ঠিক জানি না। বাংলাদেশ সত্যিই ইংল্যান্ডে ভালো খেলে। আমি আশা করব যে এই ধারাটা আমরা বজায় রাখবো। আর এবার মনে হয় অতীতে যত দল নিয়ে এসেছিলাম, তার চেয়ে বেশি অভিজ্ঞ ও পারফর্মার দল নিয়ে যাচ্ছি। ভালো কিছুর আশা তো করতেই পারি। আগে ইংল্যান্ডে যতগুলো টুর্নামেন্ট খেলেছি তার থেকে এবার ভালো করবো।’ বলে যান হাবিবুল।

নির্বাচক হিসেবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে সুমন যতটা কাছ থেকে দেখার সুযোগ পান এদেশের হাতে গোনা আর মাত্র কয়েক জন মানুষ অনন্য সেই সুযোগটি পেয়ে থাকেন। তার আলোকেই হয়তো বিশ্বকাপে মাশরাফিদের নিয়ে এমন স্বপ্ন বুনতে শুরু করে দিয়েছেন ‘মিস্টার ফিফটি’।

প্রিয় নির্বাচকের এই স্বপ্নকে মাশরাফিরা ভেঙে চুরমার করে দেবেন নাকি বাস্তবে রূপ দিয়ে আরেকবার গগন বিদারী গর্জনে ক্রিকেট বিশ্বকে কাঁপিয়ে তুলবেন, সেটাই দেখার বিষয়।

সারাবাংলা/এমআরএফ/এমআরপি

ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৯ টাইগার বাংলাদেশ বিশ্বকাপ স্পেশাল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর