উইন্ডিজকে টানা তৃতীয় শিরোপা নিতে দেয়নি ভারত
২৮ মে ২০১৯ ২০:৪১
বিশ্বকাপ ১৯৮৩, ভারত বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ (ফাইনাল, লর্ডস)। ১৯৭৫ ও ১৯৭৯ বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মাইকেল হোল্ডিং, জোয়েল গার্নার, মার্শাল, রবার্টসদের নিয়ে গড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলিং লাইন আপ ছিল ১৯৮৩ বিশ্বকাপেরও সেরা বোলিং লাইন আপ। ভারতীয় দলে সুনীল গাভাস্কার, শ্রীকান্ত, অমরনাথরা খেললেও দুইবারের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ভারত হারিয়ে দেবে এমনটা সেই বিশ্বকাপের আগে এমনটা কেউই আশা করেনি।
কারণ শুধুমাত্র বোলিং নয়, বরং ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের ব্যাটিং লাইন আপও তখন বিশ্বসেরা। আর হবেই না বা কেনো? গর্ডন গ্রীনিজ, ডেসমন্ড হেইন্স, ভিভ রিচার্ডস, ক্লাইভ লয়েডদের নিয়ে গড়া ব্যাটিং লাইন আপ তো ওয়েস্ট ইন্ডিজকে রীতিমতো বিশ্বসেরার তকমাই দিয়ে দিয়েছিল।
ছন্দপতন ঘটে গ্রুপ পর্বে ভারতের কাছে হেরে। কিন্তু ভারতের সেই জয়কে তখন ক্রিকেট বিশ্ব ‘ফ্লুক’ হিসেবেই আখ্যায়িত করে। গ্রুপ পর্বের লড়াইয়ে দ্বিতীয় দেখাতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ ভারতকে হারিয়ে সেই ধারণাকেই পোক্ত করে। ফাইনালে ওঠে এই দুই দলই।
ক্রিকেট বিশ্ব সেই ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকেই জয়ী হিসেবে ভেবে নিয়েছিল। কিন্তু ভাগ্যদেবীর মনে হয় অন্য কিছুই পরিকল্পনাতে ছিল।
সেমি ফাইনালে মহিন্দর অমরনাথের অলরাউন্ড পারফরমেন্সে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে ভারত। অন্যদিকে পাকিস্তানকে ৮ উইকেটে বিধ্বস্ত করে ফেভারিটের মতোই ফাইনালে ওঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
তারিখটা ছিল ২৫ জুন। ফাইনালে টস জিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয়। দলীয় ২ রানের মাথায় গাভাস্কারের উইকেট হারায় ভারত। ৫৪.৪ ওভারে ১৮৩ রানে অলআউট হয় ভারত। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৮ রান করেন ভারতের ওপেনার কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্ত। ওয়েস্ট ইন্ডিজের অ্যান্ডি রবার্টস নেন ৩২ রানে ৩ উইকেট। মার্শাল, হোল্ডিং, গোমেজ নেন ২ উইকেট করে। জোয়েল গার্নার নেন এক উইকেট।
ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয় তখন অনেকেই ধরে নিয়েছিল সময়ের ব্যাপার। ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ৫ রানেই গর্ডন গ্রিনিজকে হারায় ক্যারিবিয়ানরা। ভিভ রিচার্ডস এলেন এবং স্বভাবসুলভ ভঙ্গীতেই খেলা শুরু করেন। ডেসমন্ড হেইন্স যখন আউট হন তখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দলীয় সংগ্রহ ৫০ রান।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপর্যয় শুরু সেখান থেকেই। ৬৬ রানেই প্রথম সারির পাঁচ জন ব্যাটসম্যান সাজঘরে ফেরত গেলে ম্যাচে পথ হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেখান থেকে আর ম্যাচে ফেরা হয়নি তাদের। অমরনাথের বলে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে মাইকেল হোল্ডিং এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফেরত গেলে ১৪০ রানে অলআউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৪৩ রানের জয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জিতে ভারত।
মহিন্দর অমরনাথ ও মদনলাল নেন ৩টি করে উইকেট। সান্ধু ২ উইকেট এবং কপিল দেব, রজার বিনি নেন ১ টি করে উইকেট। মহিন্দর অমরনাথ ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন অলরাউন্ড পারফরমেন্সের জন্য।
সারাবাংলা/এসবি/এমআরপি