মাশরাফিরা ফাইনালে খেললেও অবাক হবেন না আতাহার
২৮ মে ২০১৯ ২০:৪৪
টানা পাঁচ বছর ওয়ানডে ক্রিকেটে একের পর এক চোখ ধাঁধানো পারফরম্যান্সে এশিয়ার ক্রিকেটের পরাশক্তির তকমা পেয়ে গেছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। লম্বা এই সময়টিতে কী অভাবনীয় জয়গুলোই না ছিনিয়ে এনেছেন মাশরাফিরা! ক্রিকেটে সবসময়ের শক্তিশালী ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ডকে নাকানি চুবানি খাইয়ে টাইগাররা নিজেদের নিয়ে গেছে অনন্য এক উচ্চতায়।
অবিস্মরণীয় জয়ের সব শেষ সংযোজনটি ছিল সদ্য সমাপ্ত ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে ক্যারিবিয়দের বিপক্ষে ২৪ ওভারে ২১০ রান তাড়া করে পাওয়া সেই জয়টি। যা বাংলাদেশ ক্রিকেটের সাবেক অলরাউন্ডার আতাহার আলী খানকে দিচ্ছে ঐতিহাসিক কিছুর হাতছানি। টাইগারদের বিশ্বকাপ ভাবনা জানাতে গিয়ে এদেশের অনেক ক্রিকেট বোদ্ধা সেমি ফাইনাল পর্যন্ত আটকে গেলেও সেই সীমা অতিক্রম করার দুঃসাহস দেখিয়েছেন আতাহার। তার চোখে এই বাংলাদেশ সেমি ফাইনাল নয়, ফাইনালে খেললেও নাকি অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না।
তিনি জানালেন, ‘ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে সাকিব ছিল না। তাকে ছাড়াও যে বাংলাদেশ এত সহজে ২৪ ওভারে ২১০ রান সংগ্রহ করতে পারবে এটা আমি না, অনেকেই হয়তো ভাবেনি। কী অসাধারণ! এই দলটি বিশ্বকাপের সেমি ফাইনাল না, ফাইনালে খেললেও অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না।’
আর অনন্য সেই লক্ষ্যে মাশরাফিকে তিনি দেখছেন কান্ডারি হিসেবে। ২০১৪ সালে অধিনায়কত্ব ফিরে পাওয়ার পর শুধু একজন অধিনায়কের ভূমিকাতেই নয়, নড়াইল এক্সপ্রেস আতাহারের দৃষ্টি সীমানায় ধরা দিয়েছে অভিভাবকের ভূমিকায়। যিনি দলের প্রতিটি সদস্যকেই গড়ে তুলেছেন বাবার যত্নে। কঠিন সময়ে সাহস যুগিয়েছেন, প্রেরণা দিয়েছেন ভয়কে জয় করে সামনে এগিয়ে যেতে। আর ভালো সময়ে খুশিতে উদ্বেলিত হতে করেছেন বারণ।
আতাহার যোগ করেন, ‘আমার কাছে মনে হয় মাশরাফি একজন ফাদার সিটার। বাবার মতো করে প্লেয়ারদের গড়ে তুলেছে। আপনাদের ভুলে যাওয়ার কথা না, ২০১৪ সালে যখন তাকে আবার অধিনায়ক করা হলো তারপর থেকেই কিন্তু আমাদের দলের চেহারা পাল্টে গেল। আমরা প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের (২০১৫) কোয়ার্টার ফাইনালে খেললাম। বিশ্বকাপ থেকে ফিরে দেশের মাটিতে দেখেন ভারত, পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দলগুলোকে হারালাম। পরের বছর ইংল্যান্ডকে দেশের মাটিতে ওয়ানডে সিরিজে হারালাম। গত বছর ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনাল খেললাম, নিদহাস ট্রফির ফাইনালে খেললাম। এশিয়া কাপের ফাইনালেও খেলেছি।’
বলার অপেক্ষাই রাখছে না মাশরাফির মতো বাবা ও অধিনায়কের নেতৃত্বেই দুর্বার এক বাংলাদেশকে দেখছে ক্রিকেট বিশ্ব। আতাহারও দেখেছেন খুব কাছ থেকে। তাতে তার মনে হয়েছে ক্যারিশম্যাটিক মাশরফিকে দিয়ে সব সম্ভব। বিগত ৫ বছর যার হাত ধরে এতগুলো সাফল্য এসেছে আর একটি সাফল্য হয়তো নিঃশ্বাস দূরত্বেই। বিশ্বকাপ শিরোপা না হোক রানারআপ হওয়াটা আপাত দৃষ্টিতে অসম্ভব নয়। তবে সেখানে যেতে বরাবরের মতো অপর চার সিনিয়রের পাশাপাশি তরুণদেরও দায়িত্ব নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে রাখলেন।
শেষের দিকে আতাহার জানালেন, ‘সবাই বলে আমাদের দলটি পঞ্চপান্ডব নির্ভর। এই মুহূর্তে আমার কিন্তু সেটা মনে হচ্ছে না। আপনি দেখেছেন ত্রিদেশীয় সিরিজের আমাদের মোস্তাফিজ, মিরাজ, সৌম্য, মোসাদ্দেকও দারুণ পারফর্ম করেছে। বিশ্বকাপের ফাইনালে যেতে মাশরাফি তার সম্ভাব্য সবই করবে। পেছন থেকে যদি দলের সিনিয়র চারজন ও জুনিয়ররাও সহযোগিতা করে তাহলে বিশ্বকাপে রানারআপ হওয়া কঠিন হবে না।’
সারাবাংলা/এমআরএফ/এমআরপি
** রফিকের কাছে ‘বিশ্বকাপ বিশ্বকাপই’