Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিশ্বকাপে বিধ্বংসী ফিনিশার হতে পারেন যারা


৩১ মে ২০১৯ ১৪:৫৮

পাওয়ার প্লে আর মারকুটে ব্যাটিংয়ের এই যুগে ক্রিকেটে শেষ দশ ওভার যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা কোনো ক্রিকেট ভক্তরই অজানা নয়। একটা দলের ব্যাটিং ইনিংসের শুরুটা ধীর গতিতে হলেও শেষভাগে বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের মাধ্যমে পুষিয়ে নিতে পারে। একসময় যেখানে দলের সেরা ব্যাটসম্যানদের টপ অর্ডারে খেলানো হতো, সেখানে এখন ইনিংস দারুণ ভাবে শেষ করে আসার জন্য দলের সেরা মারকুটে ব্যাটসম্যানকে লোয়ার মিডল অর্ডার বা ৬-৭ নম্বরে ব্যাট করানো হয়। ইনিংস শেষ করার দায়িত্বপ্রাপ্ত নিয়ে নামা ব্যাটসম্যানদের নামকরণ করে ক্রিকেট বইয়ে নতুন একটি শব্দ যোগ হয়েছে ‘ফিনিশার’।

বিজ্ঞাপন

এই ফিনিশাররা দ্রুত রান তুলে দুই দলের স্কোরবোর্ডে ব্যবধান নিয়ে আসে। তাই ফিনিশারদের ভূমিকা আধুনিক ক্রিকেটে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজ তেমন কিছু ফিনিশারের কথা বলব যারা এই বিশ্বকাপে শেষ দশ ওভারে সবথেকে বিধ্বংসী রূপে অবতীর্ণ হতে পারেন।

জস বাটলার: ২০১৫ এর বিশ্বকাপের পর থেকে ২০১৯ বিশ্বকাপের আগ পর্যন্ত খেলা ম্যাচগুলোয় শেষ দশ ওভারের মধ্যে সবথেকে বেশি স্ট্রাইক রেটে রান করেছেন জস বাটলার। স্বাগতিক ইংল্যান্ডের এই হার্ডহিটার ১৮১.২১ স্ট্রাইক রেটে ৪১-৫০ ওভারের মাঝে রান করেছেন। আইপিএলসহ বিভিন্ন দেশের টি-টোয়েন্টি লিগগুলোতে তাকে ওপেনিং করতে দেখা গেলেও ইংল্যান্ড জাতীয় দলে তাকে ৬ নম্বরে ব্যাট করতে দেখা যায়। অর্থাৎ জাতীয় দলে তাকে বিশেষভাবে ফিনিশারের ভূমিকাতেই রাখা হয়েছে। বিগত বছর গুলোতে সেই আস্থার পূর্ণ প্রতিফলন তিনি দেখিয়েছেন মাঠে।

গ্লেন ম্যাক্সওয়েল: কঠিন পরিস্থিতি থেকে অস্ট্রেলিয়া এবং ক্লাবের জার্সি গায়ে অনেকগুলো ম্যাচ একা হাতে বের করে এনেছেন ম্যাক্সওয়েল। গত চার বছরে ৪১-৫০ ওভারের মাঝে তার স্ট্রাইক রেট ১৬০.৫৫। তাই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া ফিনিশারের দায়িত্ব তার ওপর ছেড়ে দিয়েই নিশ্চিন্ত আছে।

কেদার যাদব: ইনজুরির সমস্যা থাকলেও ভারত দল তার ওপর পূর্ণ আস্থা দেখিয়ে নিয়ে গেছে ইংল্যান্ডে। জাতীয় দলের হয়ে লোয়ার অর্ডারে মারকুটে ও ধারাবাহিক ব্যাটিংয়ে ৪৩.৫ গড়ে রান করেছেন প্রায় ১২ শ’। শেষ দশ ওভারে ১৩৬.৩৮ স্ট্রাইক রেটে বোলারদের বুকে ভীতি ছড়ান। সাথে বোলিংয়েও বেশ কার্যকরী তিনি। ফিট থাকলে নিশ্চয়ই তাকে খেলানোর কথা ভাববেন কোহলি।

মঈন আলি: এরই মধ্যে একটি ম্যাচ খেলে ফেলেছেন ইংল্যান্ডের এই তারকা। ক্যারিয়েরের শুরুর দিকে হালকা মেজাজের ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিচয় দিলেও সময়ের সাথে সাথে নিজেকে ভয়ানক রূপে প্রতীয়মান করেছেন এই ইংলিশ অলরাউন্ডার। ১৩৩.৭৫ স্ট্রাইক রেটে প্রতিপক্ষের বোলারদের শেষ দশ ওভারে পিটিয়েছেন। জাতীয় দলে ৭ নম্বরে ব্যাট করা মঈনের দায়িত্বটাও বাটলারের সাথে সমান তালে ইনিংস শেষ করা। সদ্য সমাপ্ত আইপিএলের আসরেও রয়েল চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে সেই দায়িত্বটি খুব ভালো ভাবেই পালন করেছেন। তাই তার জন্য ভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে আসা ছাড়া উপায় নেই প্রতিপক্ষের বোলারদের।

বিজ্ঞাপন

রস টেইলর: নিউজিল্যাডের ইতিহাসে সবথেকে সফল ব্যাটসম্যান টেইলর। বর্তমান স্কোয়াডের সবথেকে অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ও তিনি। সচরাচর মিডল অর্ডারে ব্যাট করে থাকলেও অনেক সময় লম্বা ইনিংস খেলে শেষ করার দায়িত্বটাও তার ঘাড়ে বর্তায় এবং সে কাজে সফল তিনি। গত চার বছরে ৪১ থেকে ৫০ ওভারের মাঝে তার স্ট্রাইক রেট ১৩০.১৯। তাই গত আসরের রানার্স আপদের বড় ভরসার জায়গা এই কিউই ব্যাটসম্যান।

ইমাদ ওয়াসিম: ২০১৫ সালে অভিষেক হওয়ার পর অল্পদিনের মাথায়ই পাকিস্তানের নির্ভরযোগ্য অলরাউন্ডারে পরিণত হন ইমাদ ওয়াসিম। ২০১৫ বিশ্বকাপের পর থেকে ২০১৯ বিশ্বকাপের আগ পর্যন্ত খেলা ম্যাচগুলোর পরিসংখ্যান বলছে শেষ দশ ওভারে ১২৬.৩০ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করে থাকেন তিনি। এই বিশ্বকাপে পাকিস্তানের ফিনিশারের ভূমিকায় তাকেই দেখা যাবে বলে আশা করা যায়।

মিচেল স্যান্টনার: কিউই এই অলরাউন্ডার খুব বেশি ব্যাটিংয়ের সুযোগ না পেলেও যে কয়বারই পেয়েছেন জ্বলে উঠেছেন। শেষ দশ ওভারে কম ভয়ানক নন তিনি। ১২২.২২ স্ট্রাইক রেটে যেকোন বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে চড়াও হতে পারার সক্ষমতা আছে তার। তাই বোলারদের বিশেষ নজর রাখতেই হবে তার দিকে।

মহেন্দ্র সিং ধোনি: ধোনির অপর এক নামই ফিনিশার, তাকে নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। ভারতের বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক এবং অগণিত ম্যাচে খাদের কিনার থেকে ভারতকে তুলে এনে জয়ের বন্দরে নিয়ে গেছেন। অধিনায়কত্ব ছাড়ার পর অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত টিকতে পারবেন কিনা। প্রশ্নকারীদের মুখ বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি। সর্বশেষ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এক দিনের সিরিজে ম্যান অব দ্য সিরিজ হয়ে প্রমাণ করেছেন তার ক্ষিপ্রতা কমেনি বিন্দুমাত্র। বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচেও টপ অর্ডারের বিপর্যয়ের পরও ৭৩ বলে সেঞ্চুরি করে ভারতের সংগ্রহ ৩৫০ পার করেছেন। তাই ধোনির বিকল্প যে ভারত এখনও তৈরি করতে পারেনি তার প্রমাণ বারবার দিয়ে গেছেন। গত চার বছরে ৪১-৫০ ওভারের মাঝে তার স্ট্রাইক রেট ১২০.৫৭।

বাংলাদেশ দলে বিশেষজ্ঞ ফিনিশার তৈরি না হলেও কয়েক বছর ধরে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মিরাজ এই কাজটি করে আসছেন। তবে সময়ে সাব্বির রহমান কিংবা মোসাদ্দেকও জ্বলে উঠতে পারেন সে বিষয়ে সন্দেহ নেই।

বাংলাদেশের দর্শকরা বিশ্বকাপের সকল ম্যাচ অনলাইনে কোনো প্রকার সাবস্ক্রিপশন ফি বা চার্জ ছাড়াই দেখতে পারবেন র‍্যাবিটহোলের ওয়েবসাইট www.rabbitholebd.com এ। এছাড়া র‍্যাবিটহোলের অ্যাপসেও দেখা যাবে প্রতিটি ম্যাচ। অ্যাপসটি এন্ড্রয়েড ব্যবহারকারীরা ডাউনলোড করতে পারবেন https://goo.gl/UNCWS2 (শুধুমাত্র বাংলাদেশ) এই লিঙ্কে ক্লিক করে। তাছাড়া আইওএস ব্যবহারকারীরা ডাউনলোড করতে পারবেন https://goo.gl/vJjyyL (শুধুমাত্র বাংলাদেশ ) এই লিঙ্কে ক্লিক করে।

সারাবাংলা/টিএম৬/এমআরপি

ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৯ ফিনিশার বিশ্বকাপ স্পেশাল

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর