যে বাঁকে বাঁকে বদলেছে টাইগারদের ভাগ্য
১৮ জুন ২০১৯ ০১:২১
বিশ্বকাপে শেষ চারে ওঠার লড়াই ক্যারিবীয়ানদের বিপক্ষে যে অবিশ্বাস্য জয় চাইগাররা ছিনিয়ে নিল সে ম্যাচে বাঁক বদলেছে একাধিকবার। সেই বাঁকই টাইগারদের ভাগ্য বদলে দিয়েছে। সেটা যেমন আছে বোলিংয়ে, তেমনি ব্যাটিংয়ে। বোলিংয়ে লাল সবুজের হয়ে ম্যাচের ভাগ্য বদলে দিয়েছেন মূলত মোস্তাফিজুর রহমান। তার পেস তোপ ও কাটার ভেলকিতে একে একে ফিরেছেন তিন ক্যারিবীয় টর্নেডো আন্দ্রে রাসেল, শিমরন হেটমায়ার ও শেই হোপ।
আর ব্যাটিংয়ে ওপেনার সৌম্য-তামিমের সঙ্গে অবদান রেখেছেন সুপারম্যান সাকিব আল হাসান ও লিটন দাস। তামিম-সৌম্যর গড়ে দেওয়া ৫২ রানের ওপরে দাঁড়িয়েই দুর্গম পথ পাড়ি দিয়েছে বাংলাদেশ। এই জুটির নয়নাভিরাম ব্যাটিংয়েই ৩২২ রানের কঠিন লক্ষ্যও মাত্র ৩ উইকেটের খরচায় ছুঁয়ে ফেলেছে লাল সবুজের দুর্বার যোদ্ধারা। বল বাকি ছিল আরো ৫১টি।
প্রথমেই আসা যাক মোস্তাফিজের বোলিংয়ের আলোচনায়। দলীয় ১৫৯ রানে তিন টপ অর্ডার এভিন লুইস (৭০), ক্রিস গেইল (০) ও নিকোলাস পুরান (২৫) ক্রিজ ছাড়া হওয়ার পর চতুর্থ উইকেটে শেই হোপের সঙ্গে দাপুটে ব্যাটে টাইগারদের ওপর চোখ রাঙাচ্ছিলেন হার্ডহিটার শিমরন হেটমায়ার। দুর্দান্ত এক একটি বাউন্ডারি ও লফটেড শটে তছনছ করে দিচ্ছিলেন লাল সবুজের বোলিং লাইন আপ।
ঠিক তখনই ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন মোস্তাফিজুর রহমান। ৪০তম ওভারে এসে তৃতীয় বলে হেটমারায়কে স্লোয়ার বিষ ঢেলে মিডউইকেটে তুলে দিলেন তামিম ইকবালের তালুতে। ক্রিজছাড়া হলেন এই ক্যারিবীয় টর্নেডো ব্যাটসম্যান। তার আগে ২৬ বল খেলে চারটি চার ও তিন ছক্কায় দলকে দিয়ে গেছেন ৫০ রান।
পঞ্চম উইকেটে শেই হোপকে সঙ্গ দিতে এলেন আরেক মারকুটে ব্যাটসম্যান আন্দ্রে রাসেল। কিন্তু ফিজ তোপে সুবিধা করে উঠতে পারেননি। ৪০তম ওভারের একেবারে শেষ বলে শূন্যহাতে ফিরিয়ে দিলেন মুশফিকুর রহিমের সুরক্ষিত গ্লাভসে। তাতে নিরব টাইগার গ্যালারি হয়ে ওঠে সরব।
এখানেই ক্ষান্ত হননি ফিজ। ৪৭তম ওভারে আরেকবার জ্বলে উঠে ড্রেসিংরুমের পথ দেখালেন সেঞ্চুরি থেকে নিঃশ্বাস দূরত্বে থাকা শেই হোপকে। কৌশলী ডেলিভারিতে পাঠিয়ে দিলেন লিটন দাসের নিরাপদ তালুতে। তাতে মিড ওভারে ৩৪০-৩৪৫ রানের যে শঙ্কা ভর করেছিল তা দূর হয়। জেসন হোল্ডাররা স্কোর বোর্ডে সাকুল্যে যোগ করল ৩২১ রান।
৩২২ রানের দুর্গম লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিলেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। কিন্তু ব্যাটিংয়ে ছন্দ ধরে রাখতে পারেননি। রাসেলের বলে ব্যক্তিগত ২৯ রানে গেইলের হাতে ধরা পড়লেন সৌম্য। দলের রান তখন মাত্র ৫২। দ্বিতীয় উইকেটে তামিমকে সঙ্গ দিতে এলেন সাকিব আল হাসান। দুজনের দৃঢ় ব্যাটিংয়ে লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছিল বাংলাদেশ।
৪৮ রানে তামিম পড়লেন রান আউটের খড়গে। দলের সংগ্রহ তখন ১২১ রান। মানে জয় থেকে ২০১ রান দূরে। চারে নামা মুশফিক হয়তো সাকিবকে নিয়ে সেই পথ পাড়ি দিতে চেয়েছিলেন। না, পারেননি। ওশানে থমাসের বলে শেই হোপের ক্যাচ হয়ে ক্রিজ ছাড়া হলেন মাত্র ১ রানে।
এরপর অবশ্য আর কোনো বিপর্যয় নয়। চতুর্থ উইকেটে লিটন দাসকে সঙ্গে নিয়ে ৩২২ রানের বড় লক্ষ্য ছুঁয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিলেন সাকিব। এরমধ্যে বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার ছুয়েছেন একাধিক মাইলফলক। দেশের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে তুলে নিয়েছেন বিশ্বকাপে দুইটি সেঞ্চুরি। যা এর আগে ছিল মাহদুদউল্লাহর দখলে। ছুঁয়েছেন ওয়ানডেতে ৬ হাজার রানের মাইলফলক। আর বিশ্বের চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে বিশ্বকাপে টানা চার ম্যাচে অর্ধশতকের রেকর্ডটিও গড়েছেন।
ম্যাচ শেষে ৯৯ বল খেলে সাকিব অপরাজিত ছিলেন ১২৪ রানে। আর লিটন ৬৯ বলে অপরাজিত ছিলেন ৯৪ রানে।
বাংলাদেশের দর্শকরা বিশ্বকাপের সব ম্যাচ অনলাইনে কোনো ধরনের সাবস্ক্রিপশন ফি বা চার্জ ছাড়াই দেখতে পারবেন র্যাবিটহোলের ওয়েবসাইট www.rabbitholebd.com-এ। এছাড়া র্যাবিটহোলের অ্যাপেও দেখা যাবে প্রতিটি ম্যাচ। অ্যাপটি অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীরা ডাউনলোড করতে পারবেন https://goo.gl/UNCWS2 (শুধুমাত্র বাংলাদেশ) এই লিংকে ক্লিক করে। তাছাড়া আইওএস ব্যবহারকারীরা ডাউনলোড করতে পারবেন https://goo.gl/vJjyyL (শুধুমাত্র বাংলাদেশ) এই লিংকে ক্লিক করে।
সারাবাংলা/এমআরএফ/এমআরপি
উইন্ডিজ ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৯ টাইগার বাংলাদেশ বিশ্বকাপ স্পেশাল র্যাবিটহোল