বিশ্বকাপে আট বছর আগের-পরের বাংলাদেশ
১৯ জুন ২০১৯ ১৯:৩০
২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপের সহ আয়োজক ছিল বাংলাদেশ। স্বাগতিক হয়ে সেই বিশ্বকাপে মিরপুরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে লজ্জার হার মানতে হয়েছিল স্বাগতিকদের। আট বছরে পাল্টে গেছে টাইগারদের চিত্র, খেলার ধরন আর মাঠের কৌশল। এখন আর বড় কোনো দলকে ভয় পায় না টাইগাররা, বরং নিজেরাই বড় এক দলে পরিণত হয়েছে। প্রতিপক্ষরাই এখন ব্যস্ত থাকে টাইগারদের সামলাতে।
২০১১ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিজেদের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হারলেও চলতি বিশ্বকাপে টাইগারদের কাছেই হেরেছে তারা। বাংলাদেশ সেমি ফাইনালের পথে এগিয়ে থাকলেও দক্ষিণ আফ্রিকা আর উইন্ডিজ টাইগারদের পেছনে অবস্থান করছে।
২০১১ সালের ৪ মার্চ মিরপুরে দিবারাত্রির ম্যাচে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশ ১৮.৫ ওভারে অলআউট হয় মাত্র ৫৮ রানে। ১২.২ ওভারে এক উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে ক্যারিবীয়ানরা। সেই ম্যাচে সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ হেরেছিল ৯ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে।
মাশরাফির নেতৃত্বে খেলতে নামা বাংলাদেশ আট বছর পর চলতি বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে দিয়েছে। ক্যারিবীয়ানদের ছুঁড়ে দেওয়া ৩২২ রানের টার্গেট টাইগাররা ছুঁয়েছে ৫১ বল আর ৭ উইকেট হাতে রেখে। সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ডও গড়েছে টাইগাররা। এক লাফে টেবিলের পাঁচ নম্বরে উঠে গেছে লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে বল হাতে দুই উইকেটের পর ব্যাট হাতে বিশ্বকাপে টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি হাঁকান ২০১১ বিশ্বকাপের অধিনায়ক সাকিব। বল হাতে ৮ ওভারে ৫৪ রান দিয়ে দুটি উইকেট পাওয়া সাকিব ব্যাট হাতে ১৬টি চারের সাহায্যে ৯৯ বলে করেন অপরাজিত ১২৪ রান। ম্যাচ সেরার পুরস্কারটাও উঠে সাকিবের হাতে।
আট বছর আগে ২০১১ সালের ১৯ মার্চ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। মিরপুরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রোটিয়ারা ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে তোলে ২৮৪ রান। সাকিবের নেতৃত্বে খেলতে নামা বাংলাদেশ ২৮ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে তোলে ৭৮ রান। দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচটিতে জেতে ২০৬ রানের বিশাল ব্যবধানে। সেই ম্যাচে শুধু সাকিবই ছুঁয়েছিলেন দুই অঙ্কের রান (৩০)। বল হাতে ১০ ওভারে ৪৬ রান দিয়ে নিয়েছিলেন দুটি উইকেট।
চলতি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ হারিয়েছে প্রোটিয়াদের। নিজেদের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে জয় দিয়ে মিশন শুরু করে মাশরাফির দলটি। আগে ব্যাট করা টাইগাররা ৬ উইকেট হারিয়ে তোলে ৩৩০ রান। জবাবে, প্রোটিয়াদের ইনিংস থামে ৩০৯ রানের মাথায়। বাংলাদেশ ম্যাচটি জেতে ২১ রানের ব্যবধানে। ব্যাট হাতে সাকিব ৮৪ বলে ৭৫, মুশফিক ৮০ বলে ৭৮ রান করেন। বল হাতে সাকিব ১০ ওভারে ৫০ রান দিয়ে একটি উইকেট তুলে নেন। ম্যাচ সেরাও নির্বাচিত হন ২০১১ বিশ্বকাপের টাইগার দলপতি।
২০১১ আর ২০১৯ বিশ্বকাপের মাঝে চলে গেছে আরও একটি বিশ্বকাপ। ২০১৫ বিশ্বকাপেও মাশরাফির নেতৃত্বে দুর্দান্ত ছিল টাইগাররা। সেবার প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছিল লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। ২০১১ বিশ্বকাপের পর গত আট বছরে দারুণভাবে পাল্টে গেছে টাইগারদের খেলার মেজাজ। চোখে চোখ রেখে লড়াই করতে শিখেছে বাংলাদেশ। শিকারের তালিকায় থাকা জায়ান্ট দলগুলোকেও হারিয়েছে টাইগাররা।
এর মাঝে পাকিস্তান, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, জিম্বাবুয়ে, নিউজিল্যান্ডকে সিরিজে হারিয়েছে বাংলাদেশ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট আর উইন্ডিজদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজেও জিতেছে বাংলাদেশ। ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমি ফাইনালে, লঙ্কানদের মাঠে গিয়ে নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে খেলেছে টাইগাররা। উইন্ডিজদের মাঠে গিয়ে তাদের সিরিজে হারিয়েছে, এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলেছে বাংলাদেশ। দ্বাদশ বিশ্বকাপের ঠিক আগে আয়ারল্যান্ডের মাটিতে গিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজ জিতেছে টাইগাররা। ২০১১-২০১৯ গত আট বছরের চ্যালেঞ্জে জয়ী টাইগাররা।
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) নটিংহ্যামের ট্রেন্টব্রিজে টাইগারদের প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৩টায়। ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে গাজী টিভি।
বাংলাদেশের দর্শকরা বিশ্বকাপের সব ম্যাচ অনলাইনে কোনো ধরনের সাবস্ক্রিপশন ফি বা চার্জ ছাড়াই দেখতে পারবেন র্যাবিটহোলের ওয়েবসাইট www.rabbitholebd.com-এ। এছাড়া র্যাবিটহোলের অ্যাপেও দেখা যাবে প্রতিটি ম্যাচ। অ্যাপটি অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীরা ডাউনলোড করতে পারবেন https://goo.gl/UNCWS2 (শুধুমাত্র বাংলাদেশ) এই লিংকে ক্লিক করে। তাছাড়া আইওএস ব্যবহারকারীরা ডাউনলোড করতে পারবেন https://goo.gl/vJjyyL (শুধুমাত্র বাংলাদেশ) এই লিংকে ক্লিক করে।
সারাবাংলা/এমআরপি
** টন্টন থেকে নটিংহ্যামে ছুটলো টাইগারদের স্বপ্ন গাড়ি
ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৯ টাইগার বাংলাদেশ বিশ্বকাপ স্পেশাল র্যাবিটহোল