Saturday 07 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শেষটা রাঙানো হলো না বাংলাদেশের


৫ জুলাই ২০১৯ ২৩:০৬ | আপডেট: ১৯ আগস্ট ২০১৯ ১৫:৩০
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিশ্বকাপের ৪৩তম ম্যাচে মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ-পাকিস্তান। পাকিস্তানের ছুঁড়ে দেওয়া ৩১৬ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ হারলো ৯৪ রানের ব্যবধানে। ৪৪.১ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে বাংলাদেশ তোলে ২২১ রান। ম্যাচ সেরা হন ছয় উইকেট পাওয়া পাকিস্তানি পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি। বাংলাদেশ ৯ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে ফিরছে। ৯ ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে পাকিস্তান বিশ্বকাপ শেষ করলো। সেমিতে উঠেছে অস্ট্রেলিয়া, ভারত, ইংল্যান্ড এবং নিউজিল্যান্ড।

শুক্রবার (৫ জুলাই) ইংল্যান্ডের ঐতিহ্যবাহী স্টেডিয়াম এবং ক্রিকেটের মক্কা খ্যাত লর্ডসে বাংলাদেশ সময় দুপুর সাড়ে তিনটায় শুরু হয় ম্যাচটি। গাজী টেলিভিশন ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করে। টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন পাকিস্তান দলপতি সরফরাজ আহমেদ। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে পাকিস্তানের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩১৫ রান। সেঞ্চুরি করে লর্ডসের অনার্স বোর্ডে নাম লেখান ওপেনার ইমাম উল হক। ৪ রানের জন্য সেঞ্চুরিবঞ্চিত হন বাবর আজম। ব্যাক টু ব্যাক ম্যাচে মোস্তাফিজ পাঁচটি উইকেট নেন, লর্ডসের অনার্স বোর্ডে নাম তোলেন ফিজ। সাইফউদ্দিন তিনটি উইকেট তুলে নেন।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ একাদশে দুটি পরিবর্তন আসে। সাব্বির রহমানের জায়গায় একাদশে এসেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর রুবেল হোসেনের জায়গায় একাদশে ফিরেছেন মেহেদি হাসান মিরাজ। বাংলাদেশের সেমি ফাইনালের স্বপ্নটা শেষ হয়েছে ভারতের বিপক্ষে হেরে।

ইনিংসের অষ্টম ওভারের দ্বিতীয় বলে সাইফউদ্দিন ফিরিয়ে দেন ফখর জামানকে। দলীয় ২৩ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় পাকিস্তান। পয়েন্টে দাঁড়ানো মিরাজের তালুবন্দি হওয়ার আগে ফখর ৩১ বলে এক বাউন্ডারিতে করেন ১৩ রান। এরপর ১৫৭ রানের জুটি গড়েন ইমাম উল হক এবং বাবর আজম। দলীয় ১৮০ রানের মাথায় বিদায় নেন পাকিস্তানের হয়ে এক আসরে সর্বোচ্চ রান করা বাবর আজম। সাইফের বলে এলবির ফাঁদে পড়েন তিনি। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি। সাজঘরে ফেরার আগে বাবর ৯৮ বলে ১১টি চারের সাহায্যে করেন ৯৬ রান। জাভেদ মিঁয়াদাদ ১৯৯২ বিশ্বকাপে করেছিলেন ৪৩৭ রান, বাবর এই আসরে করলেন ৪৭৪ রান।

স্কোরবোর্ডে আরও ৬৬ রান যোগ করেন ওপেনার ইমাম উল হক এবং মোহাম্মদ হাফিজ। দলীয় ২৪৬ রানের মাথায় বিদায় নেন ইমাম। মোস্তাফিজের বলে ব্যাকফুটে খেলতে গিয়ে স্টাম্পে পা লাগিয়ে নিজের উইকেট ভেঙে দেন ইমাম। তার আগে লর্ডসের অনার্স বোর্ডে নাম লেখান এই সেঞ্চুরিয়ান। হিট উইকেটে বিদায়ের আগে ১০০ বলে সাতটি চারের সাহায্যে করেন ১০০ রান। পরের ওভারে মিরাজ ফিরিয়ে দেন মোহাম্মদ হাফিজকে। ২৫ বলে তিনটি বাউন্ডারিতে ২৭ রান করে হাফিজ ধরা পড়েন সাকিবের হাতে।

ইনিংসের ৪৩তম ওভারে মোস্তাফিজের পঞ্চম বলে হারিস সোহেলের ক্যাচ এক্সট্রা কাভার অঞ্চলে লুফে নেন সৌম্য সরকার। ব্যক্তিগত ৬ রান করে সাজঘরে ফিরেন পাকিস্তানের হারিস সোহেল। এটি মোস্তাফিজের একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে ১০০তম উইকেট। চতুর্থ দ্রুততম বোলার হিসেবে ১০০ উইকেটের মালিক হন ফিজ। ৪৫তম ওভারের খেলা শেষে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠের বাইরে যান পাকিস্তান অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ (২)। ইনিংসের ৪৬ তম ওভারের পঞ্চম বলে সাইফউদ্দিনের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন ওয়াহাব রিয়াজ (২)। ম্যাচে এটি সাইফউদ্দিনের তৃতীয় উইকেট। এরপর নিজের বলেই ক্যাচ নিয়ে মোস্তাফিজ বিদায় করেন ১ রান করা শাদাব খানকে। ২৬ বলে ৪৩ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে ইনিংসের শেষ ওভারে বিদায় নেন ইমাদ ওয়াসিম। মোস্তাফিজ তার চতুর্থ উইকেট তুলে নেন। চতুর্থ বলে ইমাদকে বিদায়ের পরের বলেই ফিজ ফিরিয়ে দেন ৮ রান করা মোহাম্মদ আমিরকে। হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগলেও শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আসা সরফরাজকে ফেরাতে পারেননি ফিজ।

মিরাজ ১০ ওভারে ৩০ রানে নেন একটি উইকেট। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ৯ ওভারে ৭৭ রান দিয়ে নেন তিনটি উইকেট। মাশরাফি ৭ ওভারে ৪৬, সাকিব ১০ ওভারে ৫৭ আর মোসাদ্দেক ৪ ওভারে ২৭ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। মোস্তাফিজ ১০ ওভারে ৭৫ রান দিয়ে পান পাঁচটি উইকেট। তামিম, শাহাদাত হোসেন রাজীবের পর লর্ডসের অনার্স বোর্ডে নাম ওঠে ফিজের।

৩১৬ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে মোহাম্মদ আমিরের তৃতীয় এবং ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারের পঞ্চম বলে কাভারে ফখর জামানের তালুবন্দি হয়ে সাজঘরে ফেরেন সৌম্য সরকার। আউট হওয়ার আগে সৌম্যের সংগ্রহ ছিল ২২ রান। স্কোরবোর্ডে ২২ রান যোগ হতেই বিদায় নেন আরেক ওপেনার তামিম ইকবাল। শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে ইনিংসের ১১তম ওভারে বোল্ড হওয়ার আগে তামিম করেন ২১ বলে ৮ রান। সাকিবের সঙ্গে ৩০ রানের জুটি গড়ে বিদায় নেন মুশফিকুর রহিম। ওয়াহাব রিয়াজের বলে বোল্ড হওয়ার আগে মুশফিক ১৯ বলে দুই বাউন্ডারিতে করেন ১৬ রান। দলীয় ৭৮ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

২৯তম ওভারের প্রথম বলে শাহিন শাহ ফিরিয়ে দেন লিটন দাসকে। সাকিবের সঙ্গে ৫৮ রানের জুটি গড়ে বিদায় নেন লিটন। হারিস সোহেলের তালুবন্দি হওয়ার আগে লিটন ৪০ বলে তিনটি বাউন্ডারিতে করেন ৩২ রান। দলীয় ১৩৭ রানের মাথায় বাংলাদেশ চতুর্থ উইকেট হারায়। দলীয় ১৫৪ রানের মাথায় বিদায় নেন সাকিব। শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে সাকিব করেন ৬৪ রান। তার ৭৭ বলের ইনিংসে ছিল ছয়টি বাউন্ডারি। আট ইনিংসে দুটি সেঞ্চুরি, পাঁচটি ফিফটিতে ৬০৬ রান করে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় শীর্ষে উঠলেন সাকিব। এছাড়া, বিশ্বকাপের আসরে শচীন টেন্ডুলকারের করা সাতটি ফিফটি প্লাস ইনিংসের রেকর্ডে নাম লেখালেন সাকিব।

ইনিংসের ৪০তম ওভারে বিদায় নেন মোসাদ্দেক হোসেন। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে ৪৩ রানের জুটি গড়েন তিনি। শাদাব খানের বলে বাবর আজমের তালুবন্দি হয়ে ফেরার আগে মোসাদ্দেক ২১ বলে করেন ১৬ রান। দলীয় ১৯৭ রানের মাথায় বাংলাদেশ ষষ্ঠ উইকেট হারায়। শাহিন শাহ আফ্রিদির করা ৪১তম ওভারের প্রথম বলে ফেরেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। নিজের প্রথম বলেই মোহাম্মদ আমিরের তালুতে জমা পড়েন আগের ম্যাচের ফিফটি হাঁকানো সাইফ। একই ওভারে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে বোল্ড করেন শাহিন শাহ। বাঁহাতি এই পেসারের পঞ্চম শিকারে বিদায় নেওয়ার আগে রিয়াদ ৪১ বলে তিনটি বাউন্ডারিতে করেন ২৯ রান। দলীয় ১৯৮ রানের মাথায় বাংলাদেশ অষ্টম উইকেট হারায়। লডর্সের অনার্স বোর্ডে নাম লেখান শাহিন শাহ আফ্রিদি। ১৪ বলে দুই ছক্কায় ১৫ রান করে বিদায় নেন মাশরাফি। ৭ রানে অপরাজিত থাকেন মেহেদি মিরাজ।

পাকিস্তানি পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি ৯.১ ওভারে ৩৫ রানে নেন ছয়টি উইকেট। শাদাব খান দুটি, ওয়াহাব রিয়াজ একটি আর মোহাম্মদ আমির নেন একটি উইকেট।

বাংলাদেশ একাদশ: মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা (অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান (সহ-অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, লিটন কুমার দাস, সৌম্য সরকার, মেহেদি হাসান মিরাজ এবং মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।

পাকিস্তান একাদশ: সরফরাজ আহমেদ (অধিনায়ক ও উইকেটরক্ষক), বাবর আজম, ফখর জামান, হারিস সোহেল, ইমাদ ওয়াসিম, ইমাম-উল-হক, মোহাম্মদ হাফিজ, শাদাব খান, শাহীন শাহ আফ্রিদি, মোহাম্মদ আমির এবং ওয়াহাব রিয়াজ।

বাংলাদেশের দর্শকরা বিশ্বকাপের সব ম্যাচ অনলাইনে কোনো ধরনের সাবস্ক্রিপশন ফি বা চার্জ ছাড়াই দেখতে পারবেন র‍্যাবিটহোলের ওয়েবসাইট www.rabbitholebd.com-এ। এছাড়া র‍্যাবিটহোলের অ্যাপেও দেখা যাবে প্রতিটি ম্যাচ। অ্যাপটি অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীরা ডাউনলোড করতে পারবেন https://goo.gl/UNCWS2 (শুধুমাত্র বাংলাদেশ) এই লিংকে ক্লিক করে। তাছাড়া আইওএস ব্যবহারকারীরা ডাউনলোড করতে পারবেন https://goo.gl/vJjyyL (শুধুমাত্র বাংলাদেশ) এই লিংকে ক্লিক করে।

সারাবাংলা/এমআরপি/এসবি

ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৯ গাজী টিভি টাইগার পাকিস্তান বাংলাদেশ র‌্যাবিটহোল