পর্যটক হয়েই থাকলেন আবু জায়েদ
৬ জুলাই ২০১৯ ০৫:৩৪
বাংলাদেশ দ্বাদশ বিশ্বকাপ শেষ করলো ১৪ ক্রিকেটারকে খেলিয়ে। ১৫ সদস্যের বিশ্বকাপ দলের একমাত্র আবু জায়েদ রাহিকেই খেলানো হয়নি। অথচ বিশ্বকাপের দল ঘোষণার পর এই পেসারকে নিয়ে কী নাটকটাই না হয়ে গেল। এই পেসারকে দলে নিতে কত যুক্তিই না দিয়েছিল টিম ম্যানেজমেন্ট! শেষ অবধি পর্যটক হয়েই থাকলেন আবু জায়েদ। শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে দুটি পরিবর্তন আসলেও সেই একাদশে সুযোগ হয়নি রাহির।
বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমে বসে দর্শক হয়ে খেলা দেখা আর নেটে ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে বল ছোঁড়া ছাড়া আর কি কাজে লেগেছেন রাহি সেটি টিম ম্যানেজমেন্টই ভালো বলতে পারবে। মূল একাদশে সুযোগ পাওয়া তো দূরের কথা, বদলি খেলোয়াড় হিসেবে ফিল্ডিং করতেও মাঠে দেখা যায়নি তাকে।
কোনো ম্যাচের আগে একাদশ নিয়ে জল্পনা-কল্পনা থাকলেও আবু জায়েদ নামটি একবারের জন্যও উচ্চারিত হয়নি। বলা যায় এই বিশ্বকাপে তিনি উপেক্ষার শিকার। আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে রাহিকে দিয়ে ম্যাচ খেলানো হয়েছিল। তবে বিশ্বকাপে তার ভাগ্যে শিকে ছিঁড়েনি। আয়ারল্যান্ড সফরের শেষ দিকে সমালোচনা উঠলে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ম্যাচে খেলানো হয়েছিল তাকে। রাহি সেই ম্যাচে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন। বাধ্য হয়েই পরের ম্যাচে নামানো হয়েছিল এই পেসারকে। ভালো না করায় ফাইনাল ম্যাচে রাহিকে নামানো হয়নি। বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে খেললেও মূল মঞ্চে সাইডবেঞ্চ গরম করেই সময় কেটেছে রাহির।
অথচ বিশ্বকাপের দল ঘোষণার পর পরই রাহিকে দলে কেন নেওয়া হলো, কেন তাসকিনকে বেছে নেওয়া হলো না, কেন ইংলিশ কন্ডিশনে একজন অনভিজ্ঞ পেসারকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে-এসব নিয়ে রোল উঠেছিল। টিম ম্যানেজমেন্ট যুক্তি দেখিয়ে বলেছিল, রাহির সুইংয়ের জন্যই তাকে বেছে নেওয়া হয়েছে। তাহলে কেন একটা ম্যাচেও এই সুইং বোলারকে সুযোগ দেওয়া হলো না সেটি ভাবার বিষয়।
যে জন্য ইংল্যান্ডে যাওয়া সেখানে সুযোগই পেলেন না একটা ম্যাচ খেলার। এমন দুর্ভাগা খেলোয়াড় হয়তো এই বিশ্বকাপে আর একজনও নেই। পুরো বিশ্বকাপটা শেষমেশ তাই দর্শক হিসেবেই থাকতে হলো রাহিকে।
প্রথম দুই বিশ্বকাপেই স্কোয়াডে থাকা সব খেলোয়াড় মাঠে নামার সুযোগ পেয়েছিলেন। ১৯৯৯ বিশ্বকাপের দলে থাকলেও নিয়ামুর আর শফিউদ্দিনের খেলার সুযোগ হয়েছিল শুধু পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে। ২০০৭ বিশ্বকাপে ব্যাটসম্যান রাজিন সালেহ, ২০১১ বিশ্বকাপে পেসার নাজমুল হোসেন, ২০১৫ বিশ্বকাপে পেসার আল আমিন, শফিউল ইসলামও খেলতে পারেননি কোনো ম্যাচ। আল-আমিনকে অবশ্য নিয়ম ভঙ্গের কারণেই ফিরতে হয়েছিল। তার বদলি হিসেবে উড়ে গিয়েও কোনো ম্যাচ খেলা হয়নি শফিউলের।
সব ক্রিকেটারের মতো বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন রাহির মনেও ছিল। বিশ্বকাপের স্কোয়াডে থেকেও রাহির সুযোগ না পাওয়াটা আপনার-আমার কাছে বিস্ময়কর হতে পারে। স্বয়ং রাহির কাছেও যে সুযোগ পাওয়াটা ছিল বড়ই বিস্ময়কর! ওয়ানডে ক্যাপ না পরেও বিশ্বকাপের দলে সুযোগ পাওয়ার পর রাহি জানিয়েছিলেন, ‘ইংল্যান্ডে গিয়েছিলাম ২০০৯ সালে। এরপর প্রায় ১০ বছর হয়ে গেছে। তাই ইংল্যান্ডে খেলার ইচ্ছা অনেক বেশি ছিল। আশা করেছিলাম যে, ২০ জনের মধ্যে থাকবো। মিরপুরে প্রিমিয়ার লিগের দুটি ম্যাচে খুব ভালো পারফর্ম করেছিলাম। কিন্তু তখনও মনে হয়েছিল যে ২০ জনের ভেতরে থাকবো। যখন শুনলাম ১৫ জনের মধ্যে আছি, তখন আরেকটু বেশি বিস্মিত হয়েছি।’
বাংলাদেশের দর্শকরা বিশ্বকাপের সব ম্যাচ অনলাইনে কোনো ধরনের সাবস্ক্রিপশন ফি বা চার্জ ছাড়াই দেখতে পারবেন র্যাবিটহোলের ওয়েবসাইট www.rabbitholebd.com-এ। এছাড়া র্যাবিটহোলের অ্যাপেও দেখা যাবে প্রতিটি ম্যাচ। অ্যাপটি অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীরা ডাউনলোড করতে পারবেন https://goo.gl/UNCWS2 (শুধুমাত্র বাংলাদেশ) এই লিংকে ক্লিক করে। তাছাড়া আইওএস ব্যবহারকারীরা ডাউনলোড করতে পারবেন https://goo.gl/vJjyyL (শুধুমাত্র বাংলাদেশ) এই লিংকে ক্লিক করে।
সারাবাংলা/এমআরপি
আবু জায়েদ রাহি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৯ টাইগার বিশ্বকাপ স্পেশাল