বিপিএলে মাঝমাঠ হাতের মুঠোয় দেশি ফুটবলারদের
৭ জুলাই ২০১৯ ২১:৪৬
কী দুর্দান্ত আসরটাই না কাটাচ্ছেন বাংলাদেশের ফুটবলাররা। ঘরোয়া ফুটবলের সর্বোচ্চ আসর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগটা (বিপিএল) সম্ভাব্য সব আসরের থেকে একটু আলাদাই বলতে হবে। গতানুগতিক দলবদলের তুলনায় এবার ভালোমানের বিদেশি ফুটবলার দলে যুক্ত করে লিগটা মানের দিক থেকেও এগিয়ে গেছে কিনা সে নিয়ে আলোচনা হতে পারে। তবে, সব কিছু ছাপিয়ে এই বিপিএলে দেশি ফুটবলারদের পায়ে ম্যাজিক দেখেছে ফুটবল সমর্থকরা।
জালে বল জড়ানো থেকে শুরু করে মাঝমাঠের দখলে দেশি ফুটবলাররাই যেন এবার বেশি স্বাচ্ছন্দে আছেন। ইতোমধ্যে ১৮টি ম্যাচ খেলে ফেলেছে বিপিএলের ১৩ দল। এগারতম আসরটা দেশি ফুটবলারদের জন্য যে বিশেষ কিছু তা এবার পরিসংখ্যান দেখলে বোঝা যায়।
বিশ্বকাপ খেলা কোস্টারিকান ড্যানিয়েল কলিনদ্রেসহ ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার দুর্দান্ত কয়েকজন বিদেশি ফুটবলার এই বিপিএলের মানটাও বাড়িয়য়ে দিয়েছে খানিকটা। যার ফলে স্থানীয় ফুটবলারদের জন্য যোগ্যতা প্রমাণের প্রতিযোগিতামূলক লিগ হয়ে দাঁড়িয়েছে স্বাভাবিকভাবেই। ঘরোয়া ফুটবলে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে জাতীয় দলেও সুযোগ করে নিয়েছেন অভিজ্ঞসহ তরুণরাও। দলে তরুণদেরই আধিক্য সেটারই পরিচয় বহন করে।
আগস্টের মধ্যে এবার লিগ শেষ হতে চলেছে। তারপরই শুরু হবে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক পর্ব। তার মাঝে বেশ ভালো ফর্মে বিভিন্ন দলের মাঝমাঠের খেলোয়াড়রা।
এবার লিগে বল যোগানে দুর্দান্ত ফর্ম পেয়েছেন দেশি ফুটবলাররা। প্রতি ম্যাচে ভালো ফুটবল উপহার দিয়েছে রবিউল-জনি-জীবন-বিপলুরা। মাঝমাঠে দেশিদের দাপট ঈর্ষণীয় বলতে হবে। এবারের লিগে দেশিদের মধ্যে গোলের যোগানদাতা হিসেবে সবচেয়ে এগিয়ে আছে আবাহনীর নবীব নেওয়ার জীবন। গোল দেয়ার পাশাপাশি ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের জার্সিতে এ মৌসুমে ৬টি অ্যাসিস্ট করেছেন জীবন। শেখ রাসেলের বিপলু আহমেদও দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে যাচ্ছেন। এই তো গত ম্যাচেও দূরপাল্লার শটে দুর্দান্ত গোল করেছেন। গোল যোগানেও তার জুরি নেই। এ মৌসুমে চারটি অ্যাসিস্ট তার নামের পাশে।
তাছাড়া সাইফের হয়ে ইয়াসিন আরাফাত এবার অ্যাসিস্ট করেছেন চারটি। এই মৌসুমে এবার চমক দেখিয়েছে নোফেলের খন্দকার আশরাফুল ইসলাম। নবাগত দলটির হয়ে গোলের পাশাপাশি চারটি অ্যাসিস্টও করেছেন তিনি। বিপিএলে দুর্দান্ত ফুটবল খেলে জায়গা করে নিয়েছিলেন অনূর্ধ্ব-২৩ দলেও।
তাছাড়া ইনজুরির কারণে অনেকগুলো ম্যাচ খেলতে না পারা আরামবাগের আরিফুর রহমানও ভালো মৌসুম কাটিয়েছেন। এ মৌসুমে গোল দেয়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চারটি অ্যাসিস্টও করেছেন আরিফ। জায়গা করে নিয়েছেন জাতীয় দলেও। তার স্বতীর্থ রবিউল হাসানের মৌসুমটাও বলতে গেলে দুর্দান্তই কেটেছে এবার। আন্তর্জাতিক ফুটবলে নব্য এই তারকা হয়েছেন দুটি জয়ের নায়ক। এ মৌসুমে আরামবাগের জার্সিতে তিনটি অ্যাসিস্ট করেছেন রবিউল।
তাছাড়া কিংসের ইমন মাহমুদ ও মোহাম্মদ ইব্রাহিম তিনটি করে অ্যাসিস্ট করেছেন এ মৌসুমে। দেশের ফুটবলে সবচেয়ে বড় তারকা জামাল ভূঁইয়া এ বছরে সেভাবে নিজেকে মেলে ধরতে না পারলেও ২টি অ্যাসিস্টে নাম লিখিয়েছেন সাইফের হয়ে। সাইফের জাফর ইকবাল, নোফেলের কামরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম আবাহনীর মোনেম খান রাজু, আবাহনী মামুন মিয়া, রুবেল মিয়া, ব্রাদার্সের মোকাররম, রহমতগঞ্জের সোহেল রানা, শেখ রাসেলে সোহেল রানা, মোহামেডানার ইউসুফ, নোফেলের জামির উদ্দীন, বিজেএমসির ইউসুফ দুটি করে অ্যাসিস্ট করেছেন।
তাছাড়া গোল যোগানে ফুটবলারদের হিসেব নেই। তবে জাতীয় দলের ছাড়াও এ বছর স্থানীয় ফুটবলার গোল দেয়াসহ গোল যোগানেও দুর্দান্ত ভূমিকা রাখছেন। জাতীয় দল গঠনে কোচ জেমি ডে’র পরীক্ষা নেবেন স্থানীয় ফুটবলাররা। সবমিলে এ আসরে বল যোগান ও মাঝমাঠ দখলটা স্থানীয়রাই হাতের মুঠোয় রেখেছে।
সারাবাংলা/জেএইচ/এমআরপি