Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কাণ্ডজ্ঞানহীন বাফুফে, হাসপাতালে দুই নারী ফুটবলার


৯ জুলাই ২০১৯ ২২:৫৫

আবারো বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী ফুটবলের দুই কৃতি সদস্যের প্রতি কাণ্ডজ্ঞানহীন আচরণই করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত দুই ফুটবলার সাজেদা খাতুন ও মার্জিয়া আক্তারকে ময়মনসিংহে পাঠিয়ে চরম সমালোচনার মুখে পড়েছে দেশের ফুটবলের এ অভিভাবক সংস্থা।

উন্নত চিকিৎসার বদলে এখন ওই দুই নারী ফুটবলারকে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের ১১ নম্বর ওয়ার্ডে। মঙ্গলবার (৯ জুলাই) তাদেরকে জেলার ধোবাউড়া উপজেলা থেকে এনে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের শারীরিক দুর্বলতা কাটিয়ে তুলতে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

তবে দুই নারী ফুটবলার জানিয়েছেন, সপ্তাহখানেক আগেই তারা জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। ওই সময় বাফুফে কেবলমাত্র তাদের রক্ত পরীক্ষা করিয়েছে। এরপর তাদের বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। তাতে কড়া সমালোচনার মুখে পড়েছে বাফুফে।

স্থানীয় কলসিন্দুর উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মালা রানী সরকার জানান, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) অধীনে আবাসিক ক্যাম্পে অনুশীলনে ছিলেন বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী ফুটবল দলের সদস্যরা। এই ক্যাম্পে থাকা অবস্থাতেই সপ্তাহখানেক আগে মার্জিয়া ও সাজেদা জ্বরে আক্রান্ত হয়। পরে সেখানে তাদের রক্ত পরীক্ষা করানো হয়। এরপর তারা বাড়ি ফিরতে চাইলে বাফুফে তাদের পরিবারকে খবর দেয়। পরে গত রোববার (০৭ জুলাই) মার্জিয়া আক্তারের ভাই রাশেদুল ইসলাম তাদেরকে ঢাকা থেকে নিজেদের গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসেন।

অভিযোগ উঠেছে, এতোদিন আগে ওই দুই কৃতি ফুটবলার জ্বরে আক্রান্ত হলেও বাফুফের হুঁশ ফিরেছে সোমবার (০৮ জুলাই)। ওইদিন তাদের এখান থেকে জানানো হয়েছে তাদের দু’জনের ডেঙ্গু হয়েছে। পরে তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে অনুরোধ জানান বাফুফের দায়িত্বশীলরা।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় কলসিন্দুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন, সাধারণত কোন রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে তার টেস্টসমূহ সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের চিকিৎসকের সামনে উপস্থাপন করতে হয়। কিন্তু বাফুফে মার্জিয়া ও সাজেদার যে টেস্ট করিয়েছে তার কোন কপি তারা নিজেদের উদ্যোগে ময়মনসিংহে পাঠায়নি। ফলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়েই ফুটবল ফেডারেশন থেকে নিজেদের স্কুল ফুটবলের কোচ জুয়েল মিয়াকে দিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করে। পরে জুয়েল বিদ্যালয়টির শিক্ষক মালা রাণী সরকারের ফেসবুকের ম্যাসেঞ্জারে কাগজপত্র পাঠালে তিনি সেগুলো প্রিন্ট করে মার্জিয়া ও সাজেদাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে এনে ভর্তি করান।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, মার্জিয়া ও সাজেদার আলট্রাসনোগ্রাম, এক্সরে ও ব্লাডের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। আগামীকাল (১০ জুলাই) এগুলোর রিপোর্ট দেওয়া হবে। ভীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে দু’জন ফুটবলারকে স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে।

স্থানীয় কলসিন্দুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা অভিযোগ করে বলেন, বাফুফে বারবার নিজেদের দায়িত্ব পালন থেকে সরে আসছে। তারা দুই ফুটবলারের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত না করে উল্টো তাদের ময়মনসিংহে আসতে দিয়েছে। এখন বড় রকমের কোন বিপদ ঘটলে তাদেরকেই সব দায় দায়িত্ব বহন করতে হবে।

চিকিৎসাধীন মার্জিয়া ও সাজেদার সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক লক্ষ্মী নারায়ণ মজুমদার জানান, সাধারণত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত কোন রোগীকে প্রথম থেকেই উন্নতমানের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হয়। তবে মার্জিয়া ও সাজেদার বেলায় সেটি হয়নি। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে ওরা এখনো আতঙ্কমুক্ত নয়। তাদেরকে সুস্থ করে তুলতে সব রকমের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

সারাবাংলা/এমআরপি

ডেঙ্গু নারী ফুটবলার বাফুফে

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর