তিন মাসে বিশ্বজয়ী আর্চার
১৫ জুলাই ২০১৯ ১৪:০৪
মাত্র তিন মাস আগে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ঘটেছে ইংলিশ পেসার জোফরা আর্চারের। হুবহু বলতে গেলে বলতে হবে ঠিক ৭৩ দিনে বনে গেছেন বিশ্বকাপ জয়ী ক্রিকেটার। এবং দলের কেবল একজন সাধারণ সদস্য হিসেবেই বিশ্বকাপ নামের পাশে ওঠেনি আর্চারের। দলের বোলিংকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েই নামের পাশে উঠেছে বিশ্বজয়ীর তকমা।
বিশ্বকাপের ঠিক ২৭ দিন আগে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৩ মে অভিষেক ঘটে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। আর বিশ্বকাপের আগে ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষের পাঁচ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে খেলেন দুইটি ম্যাচ। তিন ম্যাচে ২২ ওভার বল করে নামের পাশে মাত্র ৩টি উইকেট। আহামরি তেমন কিছুই নয়। তবে হুট করে কেন আর্চারকে ডাকা হলো বিশ্বকাপ দলে?
উত্তরটা খুবই সহজ। আর্চারের মধ্যে ছিল বিশ্বসেরা হওয়ার প্রতিভা। তার বলের গতি, লাইন এবং লেংথ দেখে নতুন করে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করতে বাধ্য হয় ইংলিশ ক্রিকেট বোর্ড। ডেভিড উইলিকে বাদ দিয়ে তরুণ তুর্কি আর্চারকে ডেকে পাঠানো হয় বিশ্বকাপের স্কোয়াডে।
বিশ্বকাপের আগে কেবল তিনটি ওয়ানডে খেললেও আর্চারের ঘাটতি ছিল না একজন বিশ্বসেরা বোলারের যতো গুণ বিদ্যমান থাকে তার সবগুলোর। বিশ্বকাপের মহারণে ১১টি ম্যাচ খেলেছেন আর্চার। এই ১১ ম্যাচে বল করেছেন মোট ১০০.৫ ওভার অর্থাৎ ঠিক ৬০৫টি বল। আর তার করা প্রায় ১০১ ওভারের মধ্যে মেইডেন ওভার দিয়েছেন ৮টি। ৪.৭৫ ইকোনমি রেটে রান দিয়েছেন ৪৮৮। নামের পাশে আছে টুর্নামেন্টে মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে যৌথভাবে তৃতীয় সর্বোচ্চ ২০টি উইকেট।
এবারের বিশ্বকাপে আর্চার মোট ৬০৫টি বল করেছেন, যার মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি ৩৭২টি ডট বল করেছেন। এবারের বিশ্বকাপে তার থেকে বেশি ডট বল করতে পারেননি আর কোনো বোলারই। আর এছাড়াও এবারের বিশ্বকাপে সব থেকে দ্রুতগতির বোলারদের মধ্যেও অন্যতম এই ক্যারিবিয়ান বংশোদ্ভূত পেসার।
আর তাই তো বিশ্বকাপের আগে সাবেক ইংলিশ দলপতি এবং অলরাউন্ডার অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফ বলেন, ‘আর্চারকে বিশ্বকাপ দলে নেওয়ার জন্য আমি যেকোনো ক্রিকেটারকে বাদ দিয়ে দেব। সে দারুণ একজন বোলার। আর বিশ্বকাপ জিততে সে আমাদের অনেক সাহায্য করতে পারবে।’
রোববার (১৪ জুলাই) মহাকাব্যিক এক ওয়ানডে ম্যাচ দেখেছে ক্রিকেট বিশ্ব। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে সুপার ওভার। আর সুপার ওভারে আগে ব্যাট করে ১৬ রানের লক্ষ্য কিউইদের সামনে ছুঁড়ে দেয় ইংলিশরা। মাত্র ১৬ রান নেওয়া থেকে কিউইদের দূরে রাখতে বল তুলে দেওয়া হয়েছিল ক্রিকেটে তিন মাস বয়স্ক জোফরা আর্চারের হাতে। শেষ পর্যন্ত আর্চারের ওভার থেকে ১৫ রান তুলতে পারে ব্ল্যাক ক্যাপসরা। নিয়ম অনুযায়ী ইনিংসে সব থেকে বেশি বাউন্ডারি মারার কারণে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয় ইংলিশদের এছাড়াও ইনিংস জুড়ে দারুণ বল করেছিলেন জোফরা আর্চার। যাকে বিশ্বকাপের আগে প্রাথমিক স্কোয়াডেই রাখেননি ইংলিশ বোর্ড। সেই জোফরা আর্চারই কিনা বিশ্বকাপ জয়ে ইংলিশদের নায়ক বনে গেলেন।
আরও পড়ুন: আইসিসির অস্পষ্ট আইনেই বিশ্বকাপ হাতছাড়া কিউইদের
সারাবাংলা/এসএস
ইংলিশ বোলার ক্যারিবিয়ান ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৯ জোফরা আর্চার বিশ্বকাপ জয়ী