Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পেশাদার প্লেয়ারদের ক্লান্তি কিসের?


২৯ জুলাই ২০১৯ ২০:০০

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চলতি সিরিজে টিম বাংলাদেশকে অতিশয় দুর্বল ও অনুজ্জ্বল মনে হচ্ছে। মাঠে পারফরমেন্স নেই, বডি ল্যাংগুয়েজেও ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা! এ যেন অন্য কোনো দল। সদ্য সমাপ্ত বিশ্বকাপে যে দলটির টপ পারফরমেন্সে গোটা জাতি বুঁদ হয়েছিল সেই তার ছিটে ফোটাও এই সিরিজে নেই। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিংয়ে দৈন্য পারফরমেন্সে টানা দুই হারে ইতোমধ্যেই সিরিজ খুইয়ে বসেছে। ৩১ জুলাইয়ের ম্যাচটি হেরে গেলে দেশে ফিরতে হবে হোয়াইটওয়াশের গ্লানি নিয়ে।

দলের এমন ভরাডুবিতে অনেকেই মনে করছেন টানা অনুশীলন ও বিশ্বকাপে চাপ নিয়ে খেলায় পুরো দলই ক্লান্ত ও অবসন্ন। বৈশ্বিক আসরে শারীরিক-মানসিক ধকল কাটিয়ে ওঠার বদলে ‘ফেটিগ’এ আক্রান্ত। যার সুস্পষ্ট প্রভাব এই সিরিজে পড়ছে। অনেকেই আবার মত দিচ্ছেন, এই সিরিজটি বিসিবি এই মুহূর্তে আয়োজন না করলেও পারত।

তবে বাংলাদেশ ক্রিকেটের নন্দিত সাবেক বাঁহাতি স্পিনার মোহাম্মদ রফিক শোনালেন অন্য কথা। তার মতে পেশাদার ক্রিকেটারদের ডিকশনারিতে ক্লান্তি নামক কোনো শব্দ থাকতে নেই। রফিক জানান, ‘এখানে সবাই পেশাদার খেলোয়াড়। ক্লান্তি বলতে কিছু নেই। তার চাইতে বড় কথা হলো, সিনিয়র ক্রিকেটার যারা আছে একমাত্র মুশফিক ছাড়া আর কেউই পারফর্ম করতে পারছে না। তাছাড়া মাশরাফি, সাকিব ও লিটন দাসের বদলি হিসেবে যারা গিয়েছে তারা কিন্তু ক্রিকেটে নতুন না। কিন্তু পারফর্ম করতে পারছে না। এভাবে ক্রিকেট হয় না। ক্রিকেটে ভালো ফলাফল করতে চাই দলীয় পারফরমেন্স। যেটা আমাদের হচ্ছে না। ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং হচ্ছে না।’

এতে করে ক্ষতিও যা হবার হয়েছে। স্বাগতিক লঙ্কানদের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচটি ৯১ রানের বড় ব্যবধানে হারের পর দ্বিতীয়টিতেও ৭ উইকেটের ব্যবধানে স্রেফ উড়ে গেছে তামিম ইকবাল ও তার দল।

তবে পুরো সিরিজে সব চাইতে অবাক করছে টাইগার টপ অর্ডারের ব্যাটিং। আরো নির্দিষ্ট করে বললে ওপেনাররা। তামিম ও সৌম্যকে দেখে মনে হচ্ছে তারা ব্যাটিংই ভুলে গেছেন। বিশ্বকাপে ধারাবাহিক ব্যর্থতার পরেও শ্রীলঙ্কা সফরেও যথারীতি ব্যর্থ এই ওপেনিং ডুয়ো।

সবচাইতে দৃষ্টিকটু তামিম ইকবালের ধারাবাহিক ব্যর্থতা। দেশ সেরা ব্যাটসম্যান হয়েও ইংল্যান্ড-ওয়েলস থেকে শ্রীলঙ্কা অবধি নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। থেকে গেছেন ব্যর্থতার ঘেরা টোপে। সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ৫ বল খেলে ০ রানে ফেরা এই বাঁহাতি ওপেনার সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচে নিজের ইনিংসের সমাপ্তি টেনেছেন মাত্র ১৯ রানে।

লাল সবুজের জার্সি গায়ে শেষ দশ ম্যাচে তার সংগ্রহ; ১৬, ২৪, ১৯, ৪৮, ৬২, ৩৬, ২২, ৮, ০ ও ১৯! সমান সংখ্যক ম্যাচে সৌম্য সরকারের সংগ্রহ; ৪২, ২৫, ২, ২৯, ১০, ৩, ৩৩, ২২, ১৫ ও ১১।

বলার অপেক্ষাই রাখে না, তাদের ধারাবাহিক ব্যর্থতার চাপ গিয়ে পড়ে টপ ও মিডল অর্ডারের ওপরে। যেদিন তারা সেই চাপ সামলে উঠতে পারেন সেদিনই জয় ধরা দেয়। আর যেদিন পারেন না সেদিন ব্যর্থতার গ্লানি নিয়ে টাইগারদের মাঠ ছাড়তে হয়।

মোহাম্মদ রফিকের মতে, দল জিততে হলে তাদের পারফরমেন্সের কোনো বিকল্পই নেই। আপনি খেয়াল করলে দেখবেন ইনিংসের ভিত্তিটা কিন্তু ওপেনাররাই গড়ে দেন। পরের অর্ডার সেখান থেকে ইনিংসকে বড় করেন। কিন্তু আমরা সেটা দেখছি না।

ব্যর্থতার দায় নিতে হচ্ছে বোলারদেরও। সিরিজের প্রথম ম্যাচে টস হেরে বোলিংয়ে নামা দলটি কী শ্রীহীন বলই না উপহার দিল! অভিজ্ঞ শফিউল ইসলাম, রুবেল হোসেন, কাটার স্পেশালিস্ট মোস্তাফিজুর রহমানের ভোঁতা বোলিংয়ের সুযোগ নিয়ে লঙ্কানরা স্কোর বোর্ডে তোলে ৩১৪ রান। যা টপকাতে গিয়ে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে তামিমদের ব্যাটিং লাইন আপ ।

সমস্যাটা আসলে কোথায়? মোহাম্মদ রফিক বললেন, ‘এটা একমাত্র টিম ম্যানেজমেন্টই বলতে পারবে। সমাধানও তাদের দিতে হবে। আমরা তো টিভিতে খেলা দেখেছি। মাঠে ভুলটা কি হচ্ছে সেটা কিন্তু টিম ম্যানেজমেন্ট দেখছে। সেই ভুলটা তাদেরই ধরিয়ে দিতে হবে। বাংলাদেশ দলতো খারাপ না। এখন কেন খারাপ করছে সেটা নিয়ে কাজ করতে হবে। কেননা এখানেই শেষ না। ধরেই নিচ্ছি তৃতীয় ওয়ানডেতেও বাংলাদেশ হেরে যাবে। আপনাকে ভবিষ্যৎ নিয়েও চিন্তা করতে হবে। এখান থেকেই শিক্ষা নিতে হবে। কেন আমরা ভুল করছি। বিষয়টি প্লেয়ারদেরও অনুধাবন করতে হবে।’

হোয়াইটওয়াশ এড়াতে কি করতে হবে? সারাবাংলার করা এমন প্রশ্নে রফিকের সোজাসাপ্টা উত্তর, ‘সেটা তো আপনিও জানেন। জিততে হবে। তিন বিভাগেই ভালো করতে হবে।’

আগামী ৩১ জুলাই কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩ টায়। দিবারাত্রির ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে গাজী টিভি। বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কার মধ্যকার সিরিজের সবক’টি ম্যাচ সরাসরি দেখা যাচ্ছে র‍্যাবিটহোলের ওয়েবসাইটে।

গাজী টিভি টাইগার বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা মোহাম্মদ রফিক র‌্যাবিটহোল


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর