রুট বদলে যাবেন চিজোবা, পূর্ণ শক্তির আবাহনী
২৪ আগস্ট ২০১৯ ১৯:২৫
এএফসি কাপের ইন্টার জোনাল সেমি ফাইনালের দ্বিতীয় লেগ খেলতে যাচ্ছে ঢাকা আবাহনী। ঘরের মাঠে উত্তর কোরিয়ার চ্যাম্পিয়ন দল এপ্রিল ২৫ এসসিকে ৪-৩ ব্যবধানে বিধ্বস্ত করার ম্যাচে জোড়া গোলের ম্যাজিক দেখানো ম্যাচসেরা সানডে চিজোবাকে দ্বিতীয় লেগে পাওয়া নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়। তবে, চিজোবা সহ পূর্ণ শক্তির দলই পেতে যাচ্ছে আবাহনী।
প্রথম লেগের ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে চিজোবা তার আক্ষেপ ও আকুতির কথা জানিয়েছিলেন। এশিয়া অঞ্চলের ফুটবলের সর্বোচ্চ অভিভাবক এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (এএফসি) কাছে হাতজোড় করে আকুতি জানিয়ে চিজোবা বলেন, ‘আমি এএফসির সাহায্য আহ্বান করছি। দয়া করে আমাকে ভিসা দিন। আমি কোনও ব্যবসায়ী নই। আমি একজন ফুটবলার। আমি ফুটবল খেলি। আমাকে কেন আমার খেলা নিয়ে চিন্তিত হতে হবে? আমি উত্তর কোরিয়ায় ম্যাচটা খেলতে চাই। এটা শুধু আবাহনীর ম্যাচ নয়, বাংলাদেশের জন্য বড় একটা ম্যাচ। সবার কাছেই সহযোগিতা চাই।’
ভিসা জটিলতা বিষয়টি নতুন অভিজ্ঞতা নয় চিজোবার ফুটবল ক্যারিয়ারে। প্রায় অর্ধ যুগেরও বেশি সময় ধরে দেশের ফুটবলে মাঠ দাপিয়ে বেড়ানো চিজোবাকে এর আগেও ভিসা জটিলতায় পড়তে হয়েছে। চলতি এএফসি কাপেই চেন্নাইন এএফসির বিপক্ষে ভিসা জটিলতার কারণে ভারতের অনুশীলনে যেতে পারেননি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা। ম্যাচের দিন ভ্রমণ ঝক্কি নিয়ে যেতে হয়েছে। পরে মিনার্ভা পাঞ্জাবের ম্যাচে তো যেতেই পারেনি ভিসা না পাওয়ায়। এর আগেও গত বছরে একটি ম্যাচে ভিসা জটিলতায় যেতে পারেননি এই নাইজেরিয়ান।
এবারও একই সমস্যায় পড়েন এই নাইজেরিয়ান, যখন তার দল ঢাকা আবাহনী ঐতিহাসিক ম্যাচ জিতে আরেকটি ইতিহাস গড়ার সামনে আছে। চীন তাকে ট্রানজিট ভিসা না দেওয়ায় দলের সঙ্গী হতে পারবেন না বলে জানানো হয়। উত্তর কোরিয়াও তাকে ভিসা দিতে চায়নি। আপাতত সব সমস্যার সমাধান হলেও দলের সঙ্গে না গিয়ে রুট বদলে ভিন্ন পথে উত্তর কোরিয়া পৌঁছাবেন প্রথম ম্যাচে জোড়া গোল করা নাইজেরিয়ান এই স্ট্রাইকার। চীন ট্রানজিট ভিসা না দেয়ায় আবাহনী চেষ্টা করছিল দুবাই, থাইল্যান্ড বা অন্য কোনভাবে চিজোবাকে উত্তর কোরিয়া পাঠানোর। আজ রাতে পিয়ংইয়ংয়ের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বে আবাহনী। চীনে মাঝে একদিন থেকে পরদিন ২৬ আগস্ট ম্যাচ ভেন্যুতে পৌঁছাবে তারা। চিজোবাকে যেতে হবে একা। ব্যাংকক হয়ে দলের সঙ্গে পিয়ংইয়ংয়ে যোগ দেবেন তিনি।
কদিন আগে আবাহনী থেকে ভারতের ক্লাবে চলে গেছেন ডিফেন্ডার মাসিহ সাইঘানি। কার্ডের নিষেধাজ্ঞায় মিশরের ডিফেন্ডার আলা নাস ইসাকেও প্রথম লেগের ম্যাচে নামাতে পারেনি আবাহনী। নিয়মিত তিন খেলোয়াড়কে এই ম্যাচে পায়নি আবাহনী। লিগামেন্টের অস্ত্রোপচার করানোয় দীর্ঘদিন ধরে মাঠের বাইরে দুই ডিফেন্ডার তপু বর্মণ ও আতিকুর রহমান ফাহাদ। এক সপ্তাহ আগে অনুশীলনের সময় পায়ে চোট পান মিডফিল্ডার মামুনুল ইসলাম। এদিকে, আবাহনীতে যোগ দিলেও অভিষেক পিছিয়ে যায় মিশরের আলা এলদিন নাসেরের। গত টুর্নামেন্টে মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টসের হয়ে খেলার সময় তিনি লাল কার্ড পেয়েছিলেন। এমন ভঙ্গুর দল নিয়েই একাদশ সাজিয়েও জয় পেয়েছেন আবাহনীর পর্তুগিজ কোচ মারিও লেমস।
এদিকে, নিষেধাজ্ঞা কেটে যাওয়ায় মিশরীয় ডিফেন্ডার নাসেরকে পাওয়া যাচ্ছে রক্ষণভাগে। চোট কাটিয়ে দলে ফেরার কথা রয়েছে অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার মামুনুল ইসলামেরও।
আগামী বুধবার পিয়ংইয়ংয়ে মাঠে নামবে আবাহনী। ন্যূনতম ড্র করলেই এএফসি কাপের আন্তঃআঞ্চলিক ফাইনালে খেলার টিকিট পাবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা। উত্তর কোরিয়ার পিয়ংইয়ংয়ে আরেকটি ইতিহাস সৃষ্টির লক্ষ্যে মাঠে নামবে বাংলাদেশের পেশাদার লিগে সর্বোচ্চ ছয়বারের চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনী।